সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৪

এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার কলকাতায় প্রথমে ওঠেন তার বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে। সেখান থেকে বের হয়েই নিখোঁজ হন তিনি।

এরপর ২২ মে কলকাতার নিউ টাউনের একটি ফ্ল্যাটে আজীম খুন হন বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়।

আজিমের নিখোঁজ নিয়ে ১৮ মে জিডি করেন বরানগরের ১৭/৩ মণ্ডলপাড়া লেনের বাসিন্দা গোপাল। তবে পরদিন থেকে লাপাত্তা গোপাল, তার কোনো খোঁজ পাচ্ছে না গণমাধ্যমকর্মীরা।

জানা যায়, স্বর্ণের ব্যবসা সূত্রে এমপি আজিমের সঙ্গে ২৫ বছরের বন্ধুত্ব গোপালের। তার সঙ্গে ১৯ মে সকাল ৯টা ২০ মিনিটের দিকে কথা হয়। বাড়ির ঠিকানা জানাতে টালবাহানার এক পর্যায়ে গোপালই ক্যালকাটা পাবলিক স্কুলের সামনে আসতে বলেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্কুলের সামনে পৌঁছলে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেন তিনি। দুটি ফোন নম্বর বারবার বাজলেও রিসিভ হয়নি।

পরে জিডির ঠিকানা ধরে দুপুর আড়াইটার দিকে গোপালের বাড়িতে গেলে তিনি দেখা করেননি। ফ্ল্যাটের ব্যালকনি থেকে উঁকি মেরে গোপালের স্বর্ণের ব্যবসার স্টাফ পরিচয় দিয়ে একজন জানান, গোপাল চিকিৎসক দেখিয়ে চলে আসবেন ঘণ্টাখানেকের মধ্যে। তবে বাড়ির নিচে আরও ৭ ঘণ্টা অবস্থান করেও তার দেখা মেলেনি। সেই থেকে গণমাধ্যমে কোনো বক্তব্য দেননি গোপাল।

জানা গেছে, গোপালের বাড়িতেই এসআরভি নামে তার স্বর্ণের ব্যবসার অফিস। এমপি আজীম নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে সেটি বন্ধ। গোপালের প্রতিবেশীরাও তার সম্পর্কে খুব একটা জানেন না।

সূত্রের দাবি, গোপালকে আসামি নয়, রাজসাক্ষী হিসেবে দেখছেন তদন্তকারীরা। তার মাধ্যমেই এ হত্যা রহস্যের প্রাথমিক জট খুলতে সক্ষম হয় সিআইডি।

পুলিশ গোপালের বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজে দেখতে পায়, আজিম সেখানে ১২ মে প্রবেশ এবং পরদিন বেরিয়ে যান। গোপালের কাছ থেকেই প্রাথমিকভাবে তাদের ব্যবহৃত গাড়ি, চালক এবং অভিযুক্তদের সম্পর্কে ধারণা পায়।

কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সূত্র জানায়, বন্ধু হিসেবে আজিমের ভারত এবং বাংলাদেশে ঘনিষ্ঠ বন্ধু এমনকি শত্রু সম্পর্কেও ভালো জানাশোনা গোপালের। তদন্ত শুরুর পর থেকে প্রয়োজনে সাড়া দেন গোপাল। ফলে তাকে আটক বা হেফাজতে নেয়ার প্রয়োজন মনে করেনি পুলিশ। যদিও মৌখিকভাবে তাকে এলাকা ছাড়তে নিষেধ করে পুলিশ।

ওই সূত্রের দাবি, মুখ খুললে তদন্ত-সংক্রান্ত তথ্য বলে দিতে পারেন গোপাল– এমন আশঙ্কা থেকে তদন্ত কর্মকর্তারা তাকে চুপ থাকার পরামর্শ দেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা বলেন, তদন্তের শুরু থেকে গোপাল আমাদের সন্দেহের ঊর্ধ্বে ছিলেন না।

তবে তিনি যে ধরনের তথ্য দিয়েছেন, তাতে কোনো ভুল পাইনি। অভিযুক্ত অনেককেই চিনতেন গোপাল। ফলে তদন্ত খুব কম সময়ে দ্রুত এগিয়েছে।
সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তারা বলেছেন, শুরু থেকেই সব ধরনের তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করছেন গোপাল। আমরা তাকে আড়ালে থাকার পরামর্শ দিইনি। তবে স্বাস্থ্যজনিত কারণে নিজেই কিছুটা আড়ালে আছেন। তার নিরাপত্তা ঝুঁকির বিষয়টিও আমাদের ভাবতে হচ্ছে।

এদিকে মঙ্গলবারও গোপালের নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *