নভেম্বর ১৫, ২০২৪

দেশের পুঁজিবাজারের মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠান এবং মার্চেন্ট ব্যাংক ও ইস্যু ম্যানেজার সোনার বাংলা ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) কোটা সুবিধা বাতিল করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নিয়োগের ক্ষেত্রে সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘনের কারণে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।

সম্প্রতি এ বিষয়ে নির্দেশ প্রধান করে সোনার বাংলা ক্যাপিটাল, ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই-সিএসই) এবং সেন্ট্রাল ডিপজেটরি বাংলাদেশের (সিডিবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর একটি চিঠি পাঠিয়েছে বিএসইসি।

বিএসইসির চিঠিতে বলা হয়েছে, ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নিয়োগের ক্ষেত্রে বিএসইসির অনুমতি না নেওয়ার কারণে কমিশন সোনার বাংলা ক্যাপিটালের কোটা সুবিধা স্থগিত করেছে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (পাবলিক ইস্যু) বিধিমালা, ২০১৫ এর অধীনে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের যোগ্য বিনিয়োগকারী (ইআইএস) এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (ক্ষুদ্র কোম্পানির যোগ্য অফার) নিয়ম, ২০২২-এর অধীনে যোগ্য বিনিয়োগকারী (কিউআইএস) হিসাবে কোটা সুবিধা স্থগিত করা হয়েছে। কোম্পানিটির যোগ্য বিনিয়োগকারী সুবিধা আগামী ১ এপ্রিল ২০২৩ থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। এজন্য ডিএসই ও সিএসইকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, ২০২১ সালের অক্টোবরে শর্ত পরিপালন না করা এবং ব্যবসায়িক কার্যক্রমে সক্রিয় ভূমিকা না থাকায় ১৫টি মার্চেন্ট ব্যাংক ও ৮টি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট (সম্পদ ব্যবস্থাপক) কোম্পানির আইপিও কোটা সুবিধা স্থগিত করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। পুঁজিবাজারের এসব মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সক্রিয়ভাবে ব্যবসায়িক কার্যক্রমে ফিরে না আসলে পরবর্তীতে তাদের লাইসেন্স বাতিলও করা হবে বলে সতর্ক করা হয়।

২০২১ সালে বিএসইসি থেকে লাইসেন্স নেওয়া মার্চেন্ট ব্যাংকের সংখ্যা ছিল ৬৬টি। এর মধ্যে ১৫টি মার্চেন্ট ব্যাংককে চিহ্নিত করা হয়েছে, যারা শেয়ারবাজারে একটি কোম্পানিকে তালিকাভুক্ত করার জন্য কোনও আইপিও প্রস্তাব জমা দেয়নি। নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিটি মার্চেন্ট ব্যাংককে বাধ্যতামূলক প্রতি দুই বছর পর ন্যূনতম একটি আইপিও ইস্যু প্রস্তাব বিএসইসিতে জমা দিতে হবে। কিন্তু ওই ১৫টি মার্চেন্ট ব্যাংক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে একটি ইস্যু জমা দেয়নি। একইভাবে ওই সময়ে বিএসইসি থেকে লাইসেন্স নেওয়া বর্তমানে অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির সংখ্যা ছিল ৫১টি। এর মধ্যে ৮টি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিকে চিহ্নিত করেছে, যারা বর্তমানে কোনও তহবিল পরিচালনা করছে না বা লাইসেন্স পাওয়ার শর্ত অনুযায়ী কাজ করছে না। ফলে বিএসইসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৫টি মার্চেন্ট ব্যাংক ও ৮টি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত আইপিওতে কোটা সুবিধা বাতিল থাকবে।

মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর হলো- বিটা ওয়ান ইনভেস্টমেন্ট, কসমোপলিটান ফাইন্যান্স, ইসি সিকিউরিটিজ, এক্সিম ইসলামী ইনভেস্টমেন্ট, এফএএস ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ক্যাপিটাল অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, গ্রামীণ ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট, জিএসপি ইনভেস্টমেন্ট, হ্যাল ক্যাপিটাল, আইএল ক্যাপিটাল, যমুনা ব্যাংক ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট, মেঘনা ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট, পিএলএফএস ইনভেস্টমেন্টস, সোনালী ইনভেস্টমেন্ট এবং স্ট্র্যাটেজিক ফাইন্যান্স।

অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিগুলো হলো- আলিফ অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি, ইনভেস্ট এশিয়া ক্যাপিটাল অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট, বিডিভি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি, মেঘনা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট, ব্লুমিন্যান্স অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি, ব্লু-ওয়েলথ অ্যাসেটস, বেল্ট অ্যান্ড রোড অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট এবং বিএমএসএল অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি।

এদিকে চলতি বছর সোনালী ইনভেস্টমেন্টের পুনরায় কোটা সুবিধার ওপর আরোপিত স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নিয়েছে বিএসইসি। গত বছর প্রতিষ্ঠানটি বিএসইসিতে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব ও বন্ডের আবেদন করে। এরই ধারাবাহিকতায় সার্বিক দিক বিবেচনা করে প্রতিষ্ঠানটির কোটা সুবিধার ওপর স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নেয় কমিশন।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...