এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান পারভেজ তমালের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত এমন ৬ জন কর্মকর্তার ব্যাংক হিসাব তলব করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। তারা হলেন- ব্যাংকটির হেড অব করপোরেট অ্যাফেয়ারস কামরুল হাসান, হেড অব আইসিটি দিদারুল হক মিয়া, হেড অব এমআইএস রাজিদুল ইসলাম, প্রধান ফরেক্স ডিলার জমির উদ্দিন, প্রধান অর্থ কর্মকর্তা জাফর ইকবাল হাওলাদার ও হেড অব সিকিউরিটি ফোর্সেস ফরহাদ সরকার। গত রোববার এ-সংক্রান্ত একটি চিঠি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছেও পাঠানো হয়েছে।
জানা যায়, এর আগে তমালসহ অন্য কর্মকর্তাদের জব্দ হওয়া ব্যাংক হিসাবের সঙ্গে অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পাওয়ার পর এই কর্মকর্তাদের বিষয়ে তথ্য চায় বিএফআইইউ।
সংস্থাটির চিঠিতে, পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে উল্লেখিত কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত এবং তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে কোনো হিসাব পরিচালিত হয়ে থাকলে হিসাবগুলোর সার্বিক তথ্য ও দলিলাদি (হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি ফরম, হিসাব খোলার তারিখ হতে হালনাগাদ লেনদেন বিবরণী, ইত্যাদি) দাখিল করতে বলা হয়েছে।
এর আগে গত ১৪ নভেম্বর এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান এস এম পারভেজ তমাল, সিএফও জাফর ইকবাল হাওলাদার এবং সাবেক পরিচালক আদনান ইমামের ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দেয় বিএফআইইউ।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালে অনুমোদন পাওয়া ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে।
জালিয়াতির নানা তথ্য গণমাধ্যমেও প্রকাশ হয়। ব্যাংকিং অভিজ্ঞতা ছাড়াই শীর্ষ পদে নিয়োগ পান বেশ কয়েকজন। এরপর কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হয় ভিন্ন কোম্পানি খুলে। ব্যাংকের ভেতরে গড়ে তোলা হয় বিশেষ সিন্ডিকেট, যারা ব্যাংকের প্রায় সব সিদ্ধান্ত নিতেন। এরাই ঋণ বিতরণ করত পরিচালকদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোকে। এ ছাড়া পরিচালকদের বিরুদ্ধে বাজেয়াপ্ত শেয়ার ক্রয় ও ব্যাংকের উপশাখার সব ব্যবসা এনজিও এসকেএস ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে ক্ষুদ্রঋণ প্রকল্পনির্ভর করে ফেলার অভিযোগও রয়েছে। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের নিকটাত্মীয়কে নিয়োগ দেয়া হয় শীর্ষ পদে। ফলে বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনিয়ম করার পরও ব্যাংকটির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বাংলাদেশ ব্যাংক।