বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাম্প্রতিক বক্তব্য ইউটিউব, ফেসবুকসহ সব ধরনের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম থেকে অবিলম্বে ব্লক, অপসারণ বা সরিয়ে ফেলার কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সোমবার (২৮ আগস্ট) সকালে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি অথরিটিকে (বিটিআরসি) নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এ আদেশকে কেন্দ্র করে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা হট্টগোল করলে এক পর্যায়ে দুই বিচারক এজলাস ছেড়ে চলে যান। এ ঘটনা প্রধান বিচারপতিকে জানিয়েছেন দুই বিচারপতি। মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) প্রধান বিচারপতির কার্যালয় সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
হট্টগোলের মধ্যে এজলাস ছেড়ে যাওয়ার সাড়ে ৩ ঘণ্টা পর দুপুর ২টা ৩৫ মিনিটের দিকে বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলম এজলাসে আসন গ্রহণ করে বিচার কাজ শুরু করেন।
গতকাল হাইকোর্টের বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির আইনজীবীরা বলেন, একপক্ষের বক্তব্য না শুনেই ৩০ সেকেন্ড সময়ের মধ্যে আপনি তারেক রহমানের বিরুদ্ধে আদেশ দিয়েছেন। এটা বিচার বিভাগের ইতিহাসে কলঙ্কজনক অধ্যায় হয়ে থাকবে। আপনি কোর্টটাকে নষ্ট করে দিলেন।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, আমরা আপনার বিরুদ্ধে প্রধান বিচারপতির কাছে অনাস্থা জানিয়েছি। আপনি বায়াসড, একজন পক্ষপাতদুষ্ট বিচারক। আপনার থেকে আমরা ন্যায় বিচার পাব না। এ কারণে আপনার কোর্টে তারেক রহমানের কোনো মামলা চলতে পারে না।
এ সময় বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান বলেন, ‘আপনাদের ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলকে শুনেছি’।
ব্যারিস্টার কাজল বিচারপতির বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, আপনি আমাকে শুনানি করতে দেননি। আপনি ৩০ সেকেন্ড সময় নিয়ে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে আদেশ দিলেন। এটা করতে পারেন না। কোর্টের পরিবেশকে আপনি নস্ট করে দিচ্ছেন।
ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, আমাদের বক্তব্য আপনার শুনতে হবে। আমাদের বক্তব্য না নিয়ে কোনো অর্ডার পাস করতে পারেন না। আপনি কি তারেক রহমানের বিরুদ্ধে নীলনকশার রায় দেওয়ার জন্য বিচারকের আসনে বসেছেন?
আদেশের সময় আওয়ামী লীগের অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম, অ্যাডভোকেট নাসরিন সিদ্দিকা লিনা, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। আদেশের সময় বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের মধ্যে ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল উপস্থিত ছিলেন।
পরে রিট আবেদনের পক্ষের আইনজীবী মো. কামরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, তারা অযাচিতভাবে কোর্টের কার্যকলাপকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছেন। তারা কোনোভাবে পার্টি নন (মামলায় পক্ষভুক্ত না)। তারা আজ ন্যক্কারজনক কাজ করেছেন। সেদিন তারা পক্ষভুক্ত হওয়ার জন্য একটি দরখাস্ত দিয়েছিলো। সেটা খারিজ করা হয়েছে।
বিএনপির আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে কামরুল ইসলাম বলেন, তারা এই মামলায় কীভাবে কথা বলে? তারা কেন অহেতুক ডিস্টার্ব করে? খামাকা তারা আদালতের কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছেন। আজকে আদালতে ন্যাক্কারজনক কাজ করেছে। কজলিস্ট ছুড়ে মেরেছে। তারা এত উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করেছে যে আদালত নেমে গেছে। কোনো অবস্থাতেই এটা শোভন না। এটা সম্পূর্ণ আদালত অবমাননার শামিল। তারা সবক্ষেত্রে অচলবস্থার সৃষ্টি করতে চায়। তারা তো এই মামলায় পার্টিই না। তাদের অথরিটি নাই। তারা প্রধান বিচারপতির কাছে অনাস্থা দেওয়ার কে? কোন যুক্তিতে কী হিসেবে? তারা অহেতুক যুক্তি দাঁড় করিয়েছে।