আগের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদারের সময়ে ব্যাংকগুলোকে সার্কুলারের বাইরে বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিলো। সেগুলো এখন আর কার্যকর থাকবে না বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো নিজেদের মতো করে সুদের হার নিয়ে প্রতিযোগীতা করার সুযোগ পাবে। অর্থাৎ মৌখিক ভাবে বেধে দেওয়া ঋণের সুদ হার এখন আর ১৪ শতাংশে আটকে রাখা হবে না।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত ব্যাংকার্স সভায় সুদহার নির্ধারণের এ নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক ব্যাংকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সূত্র জানিয়েছে, ব্যাংকগুলোকে গত গভর্নরের আমলে সার্কুলারের বাইরে বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিলো সেগুলো এখন আর কার্যকর থাকবে না। সেক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো নিজেদের মতো করে সুদের হার নিয়ে প্রতিযোগীতা করার সুযোগ পাবে। অর্থাৎ মৌখিক ভাবে বেধে দেওয়া ঋণের সুদ হার এখন আর ১৪ শতাংশে আটকে রাখা হবে না। মার্কেট অনুযায়ী ঠিক হবে ঋণের সুদ হার। তবে এই প্রতিযোগীতার ক্ষেত্রে কেউ যাতে অসুস্থ প্রতিযোগীতায় বা অনৈতিকতার আশ্রয় না নেয় সে বিষয়ে শতর্ক করা হয়েছে।
সূত্র আরও জানিয়েছে, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে গত মাসে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। এই মাসেও যদি বৃদ্ধির ধারাবাহিকতা অভ্যহত থাকে তাহলে চলতি মাসের শেষ দিকে মুদ্রানীতির বৈঠক করে নীতি সুদ হার ফের বাড়ানো হবে। সেক্ষেত্রে ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়নো হতে পারে। অর্থাৎ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসা পর্যন্ত নীতি সুদহার বাড়াতে থাকবে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক।
বৈঠক শেষে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, আমাদের মুদ্রা বাজার এখন অনেকটাই স্থিতিশীল। তবে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এখনো সম্ভব হয়নি। যতদিন মূল্যস্ফীতি বাড়তে নীতিসুদ হারও বাড়তে থাকবে।
পাশাপাশি আন্তঃব্যাংক মুদ্রা বাজারে বিভিন্ন ধরণের মৌখিক নির্দেশনা দিয়েছিলেন আগের গভর্নর, সেসব নির্দেশনাও তুলে নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি বৈদেশিক মুদ্রা বাজার নিয়ন্ত্রণে ক্রলিং পেগের ব্যান্ড ১ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে আড়াই শতাংশ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো এখন ১২০ টাকার মধ্যেই ডলার ক্রয় বিক্রিয় করতে পারছেন। এই ডলার ক্রয় বিক্রয় যেন কোন ভাবেই ১২০ টাকার উপরে না যায় সে বিষয়েও নির্দেশনা দিয়েছেন গভর্নর।
সার্বিক বিষয়ে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, ব্যাংকার্স মিটিংয়ে অনেক বিষয়েই আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে সুদের হারের যেসব মৌখিক ক্যাব ছিলো সেগুলো আর থাকবে না। আর মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসা পর্যন্ত নীতি সুদ হার বাড়তে থাকবে বলেও উল্লেখ করেছেন গভর্নর। এছাড়া ব্যাংকগুলোকে ১২০ টাকার মধ্যে ডলার ক্রয় বিক্রিয় করার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।