ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪

উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে বদলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। তাই শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়নের ওপর আস্থা রয়েছে বাংলাদেশের বেশি সংখক জনগোষ্ঠীর ।

অধিকাংশ জনগণ মনে করেন আগামীতে শেখ হাসিনা সরকার আবারো ক্ষমতায় এলে দুর্নীতি প্রতিরোধ সহ দেশের শিল্প উন্নয়নের অগ্রগতির প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। গত ১৫ বছরে সরকারের উন্নয়ণ মূলক উল্লেখযোগ্য অর্জনগুলোর মধ্যে রয়েছে –

২০০৬ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ছিল ৩৭৮২ মেগাওয়াট। বর্তমান সরকারের সময়ে তা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ২৫২২৭ মেগাওয়াট।
২০০৬ সালে মোবাইল ফোনের সিম ছিল ১৯ মিলিয়ন। বর্তমান সরকারের সময়ে ২০২৩ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮৩.৫৩ মিলিয়ন।
২০০৬ সালে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ছিল ৬ কোটি ৭৮ লক্ষ জন। বর্তমান সরকারের সময়ে এসে দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ৩৩ লক্ষ জন।
২০০৬ সালে ওয়ার্কিং ফোর্সে মহিলাদের অংশগ্রহণ ছিল মাত্র ২১.২%। বর্তমান সরকারের সময়ে বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৪৩.৪৪%।
সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের লক্ষ্যে ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করেছে সরকার। নারী, শিশু ও সেবাপ্রার্থীদের জন্য দেওয়া হচ্ছে ২৭ রকম ওষুধ ও সেবা।
নদী ভাঙ্গন ও নবসৃষ্ট এলাকাসহ মোট ৩৬৯টি উপজেলা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ, ২৭৭৬টি হাট-বাজার উন্নয়ন, ১২৪৬টি সামাজিক প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করা হয়েছে।
২০০৬ সালে মাতৃমৃত্যুর হার ছিল (লাখে) ৩৭০ জন। বর্তমান সরকারের সময়ে ২০২৩ সালে কমে মাতৃমৃত্যুর হার ১৬১ জন।
২০০৬ সালে মেয়েদের প্রাথমিক শিক্ষার হার ছিল ৫৪%। বর্তমান সরকারের সময়ে বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৯৮.২৫ %।
২০০৬ সালে বেকারত্বের হার ছিল ৬.৭৭%। বর্তমান সরকারের সময়ে ২০২৩ সালে বেকারত্ব কমে গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৩.৬%।
২০০৬ সালে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ছিল মাসিক ১৪৬২ টাকা। বর্তমান সরকারের সময়ে তা দাঁড়িয়েছে ৮৩০০ টাকা।
মুক্তিযোদ্ধার সন্মানী ভাতা ৯০০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ২০ হাজার টাকায় উন্নীত করেছে সরকার। উপকৃত হচ্ছে প্রায় ২ লাখ বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিবার।
ভবিষ্যতের স্মার্ট প্রজন্ম গড়ার লক্ষ্যে শতভাগ শিশুকে উপবৃত্তির আওতায় এনেছে সরকার। ফলে বিনামূল্যে শিক্ষাসুবিধা পাচ্ছে ১ কোটি ৩০ লাখের বেশি শিশু।
২০০৬ সালে সেচের আওতাভুক্ত কৃষি জমি ছিল ২৮ লক্ষ হেক্টর। বর্তমান সরকারের সময়ে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৯ লক্ষ হেক্টর।
২০০৬ সালে কৃষি উৎপাদন ছিল ২ কোটি ৬১ লক্ষ টন। বর্তমান সরকারের সময়ে বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৯ কোটি ৮০ লক্ষ মেট্রিক টন।
২০০৬ সালে স্বাক্ষরতার হার ছিল মাত্র ৪৫%। বর্তমান সরকারের সময়ে ২০২৩ সালে ৩০.৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৭৫.৬%।
২০০৬ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ছিল মাত্র ৬৫,৬৭২টি। বর্তমান সরকারের সময়ে বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ১,১৮,৮৯১ টি।
২০০৬ সালে প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক সংখ্যা ছিল ৩,৪৪,৭৮৯ জন। বর্তমান সরকারের সময়ে তা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৬,৫৭,২০৩ জন।
২০০৬ সালে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ছিল মাত্র ৯টি। বর্তমান সরকারের সময়ে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সংখ্যা ৯৬টি।
২০০৬ সালে মোট মৎস্য উৎপাদন ছিল ২১.৩০ লক্ষ মেট্রিক টন। বর্তমান সরকারের সময়ে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৩.১৪ লক্ষ মেট্রিক টন।
২০০৬ সালে চা উৎপাদন ছিল ৩৯ মিলিয়ন কেজি। বর্তমান সরকারের সময়ে চা উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৮১ মিলিয়ন কেজি।
২০০৬ সালে লবণ উৎপাদন ছিল ৮.৫৪ লক্ষ মে. টন। বর্তমান সরকারের সময়ে ২০২৩ সালে লবণ উৎপাদন দাঁড়িয়েছে ২৩.৪৮ লক্ষ মে. টন।
২০০৬ সালে পোল্ট্রির সংখ্যা ছিল ১৮ কোটি ৬ লক্ষ ২২ হাজার। বর্তমান সরকারের সময়ে তা দাঁড়িয়েছে ৫২ কোটি ৭৯ লক্ষ।
২০০৬ সালে নিরাপদ পানির প্রাপ্যতা ছিল মাত্র ৫৫%। বর্তমান সরকারের সময়ে ২০২৩ সালে ৪৩.৭% বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৯৮.৮%।
২০০৬ সালে শিশু মৃত্যুর হার ছিল (প্রতি হাজারে) ৮৪ জন। বর্তমান সরকারের সময়ে ২০২৩ সালে ৪ গুণ কমে দাঁড়িয়েছে ২১ জন।
২০০৬ সালে মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ছিল ০.২৩%। বর্তমান সরকারের সময়ে মোট জনগোষ্ঠীর ৭৩.৫৫% ইন্টারনেট ব্যবহার করছে।
২০০৬ সালে আইসিটি খাতে রপ্তানি ছিল ২১ মিলিয়ন ডলার। বর্তমান সরকারের সময়ে ২০২৩ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১.৯ বিলিয়ন ডলার।

করোনা মহামারি এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ফলে খাদ্যশস্য, গ্যাস, তেল, জ্বালানিসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের ঊর্ধ্বমুখী মূল্যস্তর যখন বিশ্ব অর্থনীতির ভিত নড়বড়ে করে দিয়েছে, তখন অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে প্রবৃদ্ধির হার বজায় রেখে উন্নয়নে গতি ত্বরান্বিত করায় সরকারের বলিষ্ঠ ও দূরদর্শী নেতৃত্বের অনস্বীকার্য ভূমিকা নিশ্চিতভাবেই প্রশংসার দাবিদার। অর্থনীতির এই চমকপ্রদ এবং অভূতপূর্ব অগ্রগতির পেছনে সরকার গৃহীত অবকাঠামোগত উন্নয়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে।

পদ্মা সেতু

বিশ্বের আর্থিক দাতা সংস্থাগুলো থেকে ঋণ চেয়ে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পরও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় মনোবল ও দেশের উন্নয়নে তাঁর অবিচল আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলনস্বরূপ দেশের জনগণের টাকায় নির্মিত স্বপ্নের পদ্মা সেতু বাংলাদেশের জন্য শুধু অবিশ্বাস্য অর্জনই নয় বরং তৃতীয় বিশ্বের জন্যও এক অনন্য নজির। নির্মাণকালে অনেক আলোচনা-সমালোচনা, নানান প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও ২০২২ সালের ২৫ জুন খরস্রোতা পদ্মার বুকে যানবাহন চলাচলের জন্য উদ্বোধন করা হয় স্বপ্নের পদ্মা সেতু। পদ্মা নদীর ওপর নির্মিত এই বহুমুখী সড়ক ও রেলসেতু বাংলাদেশের দীর্ঘতম সেতু। সেতুটি মুন্সীগঞ্জের মাওয়া, লৌহজংকে শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে, যা দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত করেছে। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার এই সেতুর নির্মাণে খরচ হয়েছে মোট ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, মাত্র এক বছরের সামান্য একটু বেশি সময়ে এই সেতু থেকে টোল সংগ্রহের পরিমাণ এক হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। টাকার এই অঙ্ক এই সেতুর গুরুত্বের প্রতিফলন প্রকাশ করার পাশাপাশি এটাও স্মরণ করিয়ে দেয় যে, দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলকে সংযুক্ত করার মধ্য দিয়ে কত অপার সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে এই সেতু। সম্প্রতি এই সেতুর ওপর দিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে রেল পরিচালনা করা হয়েছে। রেলসহ পুরোদমে এই সেতুর কার্যক্রম চালু হলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আসার পাশাপাশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও দেশের আর্থসামাজিক অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন হিসেবে নিঃসন্দেহে এই সেতু বিবেচিত হবে।

ঢাকা মেট্রোরেল

২০১৩ সালে এই অতি জনবহুল ঢাকা মহানগরীর ক্রমবর্ধমান যানবাহন সমস্যা ও দুঃসহ যানজট কমিয়ে আনার লক্ষ্যে কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা প্রণয়ন করে বর্তমান সরকার, যার অধীনে প্রথমবারের মতো ঢাকায় মেট্রোরেল স্থাপনের পরিকল্পনা করা হয়। সে সময় মেট্রোরেলের মোট ছয়টি রুটের প্রস্তাব করা হয়, যেগুলো ছিল এমআরটি লাইন ১, ২, ৪, ৫ (নর্দার্ন ও সাউদার্ন), এবং ৬। ২০১৬ সালের ২৬ জুন এর নির্মাণকাজ উদ্বোধন করা হয়। গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর এমআরটি লাইন ৬-এর দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও অংশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনের মাধ্যমে ঢাকায় মেট্রোরেল আংশিক চালু হয়। প্রাথমিক পরিকল্পনায় উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০.১০ কিলোমিটার নির্মাণের কথা থাকলেও পরে তা সংশোধন করে মেট্রোরেলের রুট কমলাপুর পর্যন্ত আরও ১.১৬ কিলোমিটার বাড়ানো হয়। পুরো প্রকল্পের কার্যপ্রক্রিয়ায় আরও কিছু সময় লাগলেও ইতোমধ্যে ঢাকার যানজট নিরসনে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখছে চালু হওয়া মেট্রোরেলের এই আংশিক লাইন। বলা বাহুল্য, দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে এই সংযোজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে

অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সংশ্লিষ্ট বাহনগুলো শহরে ঢুকতে যাতে কোনো ধরনের বাধার মুখে না পড়ে সরাসরি ঢাকাকে বাইপাস করে চলে যেতে পারে সেই উদ্দেশ্য নিয়েই ১২২ বিলিয়ন টাকা খরচে ৪৬.৭৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এই এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণকাজ শুরু হয়। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের মূল উদ্দেশ্য ছিল ঢাকার বাইরে বিশেষ করে গাজীপুরের দিক থেকে বা উত্তরবঙ্গ থেকে যে বাহনগুলো অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য নিয়ে আসে, সেগুলো যেন ঢাকাকে বাইপাস করে চট্টগ্রামে চলে যেতে পারে। পরবর্তী সময়ে যানজট নিরসনের জন্য ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে গাড়ি ওঠা ও নামার বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের (পিপিপি) আওতায় পরিবহন খাতে এই প্রথম প্রকল্প গত ২ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেন। সম্পূর্ণ এক্সপ্রেসওয়ে অর্থাৎ তেজগাঁও থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত আগামী বছরের জুনে চালু করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রকল্প-সংশ্লিষ্টরা। এই এক্সপ্রেসওয়ে ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে ঢাকা ইপিজেড ও উত্তরবঙ্গের সঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দরের যোগাযোগ সহজ হওয়ার পাশাপাশি ঢাকার যানজট নিরসন, যানবাহনের সময় সাশ্রয় ও পরিবহন ব্যয় কমানোর ক্ষেত্রে এক্সপ্রেসওয়েটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ

২০১৩ সালের অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের প্রথম পর্যায় কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। বিদ্যুৎ সরবরাহ ঘাটতির সমস্যা আমাদের দেশে দীর্ঘ দিনের, কিন্তু এই সমস্যার সুরাহার আন্তরিক কোনো উদ্যোগ ইতোপূর্বে দেখা যায়নি। এই সমস্যা নিরসনের লক্ষ্যে ২০১০ সালের বাংলাদেশ সরকার এবং রাশিয়ান ফেডারেশন সরকারের মধ্যে ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ওই বছরের নভেম্বরে জাতীয় সংসদে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য সিদ্ধান্ত প্রস্তাব গৃহীত হয়। ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন এই বিদ্যুৎকেন্দ্র পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুরে স্থাপিত হচ্ছে। ১ লাখ ১৩ হাজার ৯২ কোটি টাকার এই প্লান্টে ২টি ইউনিট রয়েছে, যার প্রতিটির বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট। প্রথম ইউনিটটি ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে এবং দ্বিতীয়টি ২০২৪ সালের জুলাইয়ে বাণিজ্যিক কার্যক্রমের জন্য প্রস্তুত হবে। পুরোদমে উৎপাদন শুরু হলে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হওয়ার যে স্বপ্ন এ দেশের সাধারণ মানুষ দেখে তা বাস্তবায়নে অনেকদূর এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে বিদ্যুতের জন্য বৈদেশিক জ্বালানি আমদানির ওপর নির্ভরশীলতা অনেকাংশে কমবে।

বঙ্গবন্ধু টানেল

চট্টগ্রাম শহরের সঙ্গে দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত এবং সহজতর করার লক্ষ্যে ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে বঙ্গবন্ধু টানেল। বাংলাদেশ ও চীন সরকার ‘জি-টু-জি’ অর্থায়নে টানেলটি নির্মাণ করেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার বহন করছে ৪ হাজার ৪৬১ কোটি টাকা এবং বাকি ৫ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা সহায়তা দিচ্ছে চীন সরকার। ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর কর্ণফুলী নদীর তলদেশে স্বপ্নের টানেল নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন যৌথভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনা রাষ্ট্রপতি সি চিন পিং। এই টানেল নির্মাণের আগে করা এক সমীক্ষা প্রতিবেদন অনুযায়ী টানেল চালুর পর এর ভেতর দিয়ে বছরে ৬৩ লাখ গাড়ি চলাচল করতে পারবে বলে মন্তব্য করা হয়। এই টানেল কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে আনোয়ারার সঙ্গে চট্টগ্রাম শহরের পতেঙ্গাকে সংযুক্ত করবে, যা বিকাশমান শিল্পাঞ্চল আনোয়ারার কেইপিজেডসহ দক্ষিণে স্থাপিত ও নির্মাণাধীন অন্যান্য শিল্প-কারখানার সঙ্গে চট্টগ্রাম শহরের যোগাযোগে দূরত্ব কমিয়ে সময় ও খরচ সাশ্রয়ে সহযোগী হবে এবং ওই অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম শহরের যানজট কমানোর ক্ষেত্রেও ভূমিকা রাখবে এই টানেল।

বিগত ১৫ বছরের দীর্ঘ যাত্রায় বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম মানুষের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি, শিক্ষার হার বৃদ্ধি, চিকিৎসা ও নাগরিক সুবিধার প্রসারণ, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধিসহ সামাজিক-অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ শীর্ষ ২০ অর্থনীতির অন্তর্ভুক্ত হওয়ার ভবিষ্যদ্বাণী এই দাবির ন্যায্যতাকে সমর্থন করে। বাংলাদেশের সর্বত্রই গত প্রায় পনেরো বছরের উন্নয়নের এই ধারা অব্যাহত রাখার জন্য শেখ হাসিনা সরকারের বিকল্প শেখ হাসিনা সরকারই। অবকাঠামোগত উন্নয়নের এই শক্তিশালী ধারা অব্যাহত থাকলে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন একদিকে যেমন ত্বরান্বিত হবে, অন্যদিকে দেশীয় বিনিয়োগের পাশাপাশি বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই)ও অনেকাংশে আকৃষ্ট করা সম্ভব হবে। তাই জাতীয় স্বার্থেই এই সরকারের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা প্রয়োজন।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...