দেশে গত বছরের শুরু থেকেই চলছে ডলার সংকট। ধীরে ধীরে এই সংকট প্রকট আকার ধারণ করছে। এমন পরিস্থিতিতির মধ্যে চলতি বছরের শুরুতে প্রবাসী আয়ে উত্থান হয়েছিলো। জানুয়ারি মাসে প্রায় ২০০ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলো প্রবাসীরা। এরপরে ফেব্রুয়ারি মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ১৫৬ কোটি ১২ লাখ ডলার। তবে সদ্য বিদায়ী মার্চ মাসে ২০১ কোটি ৭৬ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
তথ্য অনুযায়ী, মার্চ মাসে প্রবাসীরা সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে। আলোচ্য এই সময়ে বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৭৩ কোটি ১৫ লাখ মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স। এছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ২৩ কোটি ৪৬ লাখ মার্কিন ডলার, বিশেষায়িত এক ব্যাংকের মাধ্যমে ৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৬৫ লাখ মার্কিন ডলার।
এদিকে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে রেমিট্যান্স বাড়াতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সাথে হুন্ডি বা অন্য কোনো অবৈধ পথে রেমিট্যান্স না পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট বা বিএফআইইউ। তবে আগামীতে দুইটি বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা রয়েছে। এ কারনে আগামীতে রেমিট্যান্স বেশি পরিমাণ আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
অন্যদিকে ডলার সংকট কাটাতে রিজার্ভ থেকে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) প্রায় ১ হাজার কোটি ডলারের বেশি বিক্রি করেছে। দেশের ইতিহাসে পুরো অর্থবছরেও রিজার্ভ থেকে এতো পরিমাণ ডলার বিক্রি হয়নি। মূলত জরুরি আমদানির দায় মেটাতে রিজার্ভ থেকে এসব ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই ও আগস্ট) টানা দুই বিলিয়ন ডলার করে রেমিট্যান্স এসেছিল। এর পরের মাস সেপ্টেম্বর থেকে টানা পাঁচ মাস দেড় বিলিয়ন ডলারের ঘরেই থেমে যায়। অর্থবছরের প্রথম মাসে (জুলাই) এসেছিল ২০৯ কোটি ৬৩ লাখ ডলার, আগস্টে এসেছিল ২০৩ কোটি ৬৯ লাখ ডলার। তবে ঈদ সামনে রেখে আবারও রেমিট্যান্স বাড়তে শুরু করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসে (জুলাই- ফেব্রুয়ারি) মোট রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৪০১ কোটি ৩৩ লাখ মার্কিন ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ১ হাজার ৩৪৩ কোটি ৮৪ লাখ ডলার। সেই হিসাবে চলতি অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসে ৫৭ কোটি ৪৮ লাখ মার্কিন ডলার বেশি এসেছে।
এর আগে ২০২১-২০২২ অর্থবছরে দেশে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ মার্কিন ডলার। তারও আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্স আহরণের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার।