দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে রিটার্নিং অফিসারদের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দায়ের করা আপিল শুনানির দ্বিতীয় দিনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
সোমবার (১১ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের অডিটোরিয়ামে আপিল শুনানি শুরু হয়।
আপিল শুনানিতে সভাপতিত্ব করছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। উপস্থিত আছেন অন্য চার কমিশনারসহ ইসি সচিব।
সরেজমিনে দেখা যায়, আপিল শুনানিতে অংশ নিতে সকাল থেকেই নির্বাচন ভবনের সামনে এসে ভিড় করছেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রার্থীরা। দুটি প্রবেশ গেটেই বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। জনসাধারণের প্রবেশ করা হয়েছে সীমিত। ভেতরে প্রবেশ করতে হলেও মুখোমুখি হতে হচ্ছে তল্লাশীর। সবাইকে একসঙ্গে শুনানি কক্ষে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। শুনানির জন্য প্রার্থীদের নির্বাচন ভবনের পাশের অস্থায়ী সামিয়ানার নিচে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। কিছুসময় পরপর মাইকে আপিল নম্বর উল্লেখ করে ডাকা হচ্ছে শুনানির জন্য। আর শুনানি কক্ষে প্রবেশ করতে পারছেন প্রার্থী, আইনজীবী ও সাক্ষী।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্বাচন ভবনের অডিটোরিয়ামে (বেজমেন্ট-২) আপিলের শুনানি প্রতিদিন সকাল ১০টায় শুরু হয়ে চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। সোমবার (১১ ডিসেম্বর) ৯৫-২০০ নম্বর আপিল, ১২ ডিসেম্বর ২০১-৩০০ নম্বর আপিল, ১৩ ডিসেম্বর ৩০১-৪০০ নম্বর আপিল, ১৪ ডিসেম্বর ৪০১-৫০০ নম্বর আপিল এবং ১৫ ডিসেম্বর ৫০১ থেকে অবশিষ্ট আপিলের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
মূলত, রোববার প্রথম দিনে ১০০ জন প্রার্থীর আপিল শুনানি হওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যে ৬ জন অনুপস্থিত ছিলেন। ফলে ৯৪ জন প্রার্থীর শুনানি হয়। এর মধ্যে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন ৫৬ জন প্রার্থী। ৩২ জন প্রার্থীর আপিল নামঞ্জুর করে ইসি। আর ছয় জন প্রার্থীর বিষয়ে আদেশ পরে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। তবে রায়ে সন্তুষ্ট না হলে প্রার্থীর উচ্চ আদালতে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
আপিলের রায়ের ব্যাপারে কমিশন থেকে জানানো হয়েছে, আবেদনগুলো সিডিউল অনুযায়ী শুনানি শেষে আপিলের ফল মনিটরে প্রদর্শন, রায়ের পিডিএফ কপি ও আপীলের সিদ্ধান্ত রিটার্নিং অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট পক্ষের ই-মেইল একাউন্টে পাঠানো হবে। নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটেও রায় প্রকাশ করা হবে। এছাড়া, আপিলের রায়ের অনুলিপি নির্বাচন ভবনের অভ্যর্থনা ডেস্ক থেকেও দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তার মাধ্যমে বিতরণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, ইসির ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল ৩০ নভেম্বর। ১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয় মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই কার্যক্রম। শেষ হয় ৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায়। বাছাইয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য ১ হাজার ৯৮৫ জন প্রার্থীকে বৈধ ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে ৭৩১ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র। এরমধ্যে ৫৬১ জন প্রার্থী তাদের প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিল করেছেন।