সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৪

বিভিন্ন অভিযোগ আর নানা নে‌তিবাচক খব‌রে দেশের ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোর প্রতি মানুষের আস্থা কমছে। ফলে কাঙ্ক্ষিত হারে আমানত পা‌চ্ছে না এ খা‌তের ব‌্যাংকগু‌লো। আগের জমা‌নো অর্থ তুলে নিচ্ছে অনেক গ্রাহক। এতে ক‌রে ব্যাংকগুলোর তারল্য ব্যাপকহারে কমে গেছে। তবে, আমানত ও তারল‌্য কমলেও ব্যাংকগুলোর ঋণ বিতরণ ক‌মেনি, উল্টো বেড়ে গে‌ছে।

ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোকে নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের করা ত্রৈমাসিক (মার্চ, ২০২৪) প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকা‌শিত প্রতি‌বেদ‌নের তথ‌্য বলছে, যেখানে গত বছরের ডিসেম্বর শেষে দেশের পূর্ণাঙ্গ ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোতে আমানত ছিল চার লাখ তিন হাজার ৮৫০ কোটি টাকা, যা মার্চ প্রান্তিকে তা কমে দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৯৯ হাজার ৫৪৯ কোটি টাকা। বছরের প্রথম প্রান্তিকে আমানত কমেছে চার হাজার ৩০০ কোটি টাকা।

এদিকে, গত ডিসেম্বর শেষে দেশের পূর্ণাঙ্গ ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোর ঋণ বা বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল চার লাখ ৪৪ হাজার ৯৭৪ কোটি টাকা, যা মার্চ প্রান্তিকে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে চার লাখ ৫৬ হাজার ৯৯৪ কোটি টাকা। বছরের প্রথম প্রান্তিকে ঋণ বা বিনিয়োগ বেড়েছে ১২ হাজার কোটি টাকার বেশি।

আলোচিত সময়ে ব্যাংকগুলোর তারল্য কমেছে ৭৭ শতাংশের উপ‌রে। ডিসেম্বরে শে‌ষে যেখানে তারল্য ছিল পাঁচ হাজার ১২৫ কোটি টাকা, মার্চ শেষে তা নেমে এসেছে এক হাজার ৫১৮ কোটি টাকায়।

দেশে বর্তমানে পূর্ণাঙ্গ শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক রয়েছে ১০টি। ব্যাংকগুলো হচ্ছে, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড (এসআইবিএল), গ্লোবাল ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, আইসিবি ইসলামিক ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন মতে, সব মিলিয়ে গত মার্চ প্রান্তিক শেষে ব্যাংক খাতে ইসলামী ধারার ব্যাংকিংয়ে মোট আমানতের পরিমাণ চার লাখ ৩৯ হাজার ৪৫৬ কোটি টাকা। আগের প্রান্তিকে ডিসেম্বর শেষে আমানত ছিল চার লাখ ৪৩ হাজার ৪০৩ কোটি টাকা। প্রান্তিকের ব্যবধানে ইসলামী ধারার ব্যাংকিংয়ে আমানত কমেছে তিন হাজার ৯৩৮ কোটি টাকা।

ইসলামী ব্যাংকগুলোর আমানত কমলেও প্রচলিত ধারার ব্যাংকগুলোর ইসলামী ব্যাংকিং উইন্ডোজগুলোতে আমানত বেড়েছে এক হাজার ১১৩ কোটি টাকা। মার্চ শেষে প্রচলিত ধারার ব্যাংকগুলোর ইসলামী ব্যাংকিং উইন্ডোজগুলোতে আমানতের পরিমাণ ছিল ২১ হাজার ৫৪৫ কোটি টাকা। ডিসেম্বর শেষে তা ছিল ২০ হাজার ৪৩৩ কোটি টাকা।

আলোচ্য সময়ে পূর্ণাঙ্গ ইসলামী ব্যাংকগুলোর প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স) বাড়লেও রপ্তানি আয় কমেছে। গত মার্চ প্রান্তিকে ইসলামী ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে প্রবাসীরা পাঠিয়েছে ২৭ হাজার টাকা; যা ডিসেম্বরে ছিল ২৩ হাজার কোটি টাকা। এ সময় রপ্তানি আয় এসেছে ২৯ হাজার কোটি টাকা, ডিসেম্বরে যার পরিমাণ ছিল ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি। আলোচ্য সময়ে এসব ব্যাংকের মাধ্যমে রপ্তানি আয় এক হাজার কোটি টাকা কম এসেছে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *