বাংলাদেশের মানুষ ইসলামিক ফাইন্যান্সের প্রতি বেশি আগ্রহী ও আস্থাশীল। তাই ইসলামিক ফাইন্যান্স ছাড়া ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি সম্ভব নয়। অদূর ভবিষ্যতে সিংহভাগ আর্থিক প্রতিষ্ঠান শরিয়াহর আলোকে পরিচালিত হবে। শনিবার (৮ জুন) রাজধানী ঢাকার একটি হোটেলে সেন্ট্রাল শরীয়াহ্ বোর্ড ফর ইসলামিক ব্যাংকস অব বাংলাদেশ (সিএসবিআইবি) ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম)-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘অ্যাকাউন্টিং, অডিটিং অ্যান্ড গভর্ন্যান্স অব ইসলামিক ব্যাংকস্’শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।
উদ্বোধনী সেশনে বিআইবিএম’র মহাপরিচালক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন সেন্ট্রাল শরীয়াহ্ বোর্ডের সেক্রেটারি জেনারেল মো. আবদুল্লাহ শরীফ। প্রধান অতিথি হিসেবে সেন্ট্রাল শরীয়াহ্ বোর্ডের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক পিএলসির পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ সেমিনারের উদ্বোধন করেন।
এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- সেন্ট্রাল শরীয়াহ্ বোর্ডের ফিক্বহ কমিটির চেয়ারম্যান ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের শরীআহ সুপারভাইজরি কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ সাইয়্যেদ কামালুদ্দীন আব্দুল্লাহ জাফরী, বাহরাইনস্থ বিশ্বব্যাপী ইসলামী ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য স্ট্যান্ডার্ড প্রণয়নকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড অডিটিং অর্গানাইজেশন ফর ইসলামিক ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন্স (অ্যাওইফি)-এর ক্যাপাসিটি বিল্ডিং প্রোগ্রামের সিনিয়র ম্যানেজার মুগীস শওকাত, অ্যাওইফি-এর স্ট্যান্ডার্ডস ইমপ্লেমেনটেশন অ্যান্ড রেগুলেটরি অথরিটির সিনিয়র ম্যানেজার সায়্যিদ সিদ্দীক এবং বিআইবিএমের প্রশিক্ষণ বিভাগের পরিচালক মোঃ আলমগীর।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সুদ হারাম করেছেন। তাই আমি আমার ব্যাংককে কনভেনশনাল ব্যাংক থেকে শরীআহভিত্তিক ব্যাংকে রূপান্তরিত করেছি। আর বর্তমানে এর কোনো বিকল্পও নেই। আমি আশা করি, অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সিংহভাগ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইসলামী শরীআহ অনুযায়ী পরিচালিত হবে। দেশকে সমৃদ্ধকরণে এর কোনো বিকল্প নেই।
বিশেষ অতিথি মুগীস শওকাত বলেন, সরকারের ভিশন ৪১-এ ৫০০ বিলিয়নের অর্থনীতিকে ট্রিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার ভিশন রয়েছে। শরীআহভিত্তিক ব্যাংকিং ও ফাইন্যান্স ব্যতীত এটি বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে ইসলামিক ব্যাংকিং প্রফেশনালদের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে এবং গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে হবে।
সায়্যিদ সিদ্দীক তাঁর বক্তৃতায় অ্যাওফির ৬০০-এর বেশি বাংলাদেশী ফেলোকে অভিনন্দন জানান। পাশাপাশি বাংলাদেশীদের জন্য অ্যাওফি প্রবর্তিত ও সিএসবিআইবি পরিচালিত কোর্সসমূহে ৮০ শতাংশ ছাড় সুবিধা ঘোষণা দেন, যা আগে ৭০ শতাংশ ছিল।
সভাপতির বক্তাব্যে ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, শরীআহভিত্তিক ব্যাংকিংব্যবস্থা ব্যতীত ব্যাংকিংয়ের সুফল সর্বস্তরের মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছানো সম্ভব নয়। সেমিনারে ৩টি মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপিত হয় এবং এর ওপর বিস্তারিত আলোচনা করেন বিশেষজ্ঞ বক্তারা। উ
উল্লেখ্য, ৮-১২ জুন পর্যন্ত ৫ দিনব্যপী ‘শরীআহ অডিট অব ইসলামিক ব্যাংকিং শীর্ষক ট্রেনিং কোর্স অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আগামী ১২ জুন সমাপনী পর্ব বিআইবিএম মিলনায়নে অনুষ্ঠিত হবে। সেমিনারে ২৩ টি ব্যাংক থেকে ৪০ জন অংশগ্রহণকারী, দেশি-বিদেশি গুরুত্বপূর্ণ অতিথিসহ প্রায় ১৫০ জন অংশগ্রহণ করেন।