সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৪

ইসরায়েল-হামাস চলমান যুদ্ধে চার দিনের যুদ্ধবিরতি শুক্রবার শুরু হয়েছে। বন্দীদের বিনিময়ে জিম্মিদেরও মুক্তি দেওয়া শুরু হবে। চলমান যুদ্ধে সাত সপ্তাহের মধ্যে এটি প্রথম বিরতি। ইসরায়েলি ধ্বংসাত্মক হামলায় গাজায় হাজার হাজার নিরীহ বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারিয়েছে। এদের মধ্যে বেশির নারীও শিশু।

দীর্ঘ আলোচনা, সমঝোতা এবং বিলম্বের পর আজ শুক্রবার (স্থানীয় সময়) সকাল ৭টায় (০৫০০ এজিএমটি) এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে।

শান্তি আলোচনা মধ্যস্থতাকারীরা কাতার জানায়, গাজায় বন্দী ১৩ জিম্মিদের প্রথম দল এবং ইসরায়েলি কারাগার থেকে অনির্ধারিত সংখ্যক ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তির মাধ্যমে যুদ্ধবিরতি শুরু হবে।
চুক্তিটি ইসরায়েলি অবিরাম বোমাবর্ষণ থেকে গাজার দুই মিলিয়নেরও বেশি বাসিন্দাদের জন্য একটু স্বস্তির অবকাশ দেবে। গাজা উপত্যাকা হামাস সরকার বলেছে, ইসরায়েলি হামলায় প্রায় ১৫,০০০ লোক নিহত হয়েছে এবং আরও অগণিত লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

অনেক ফিলিস্তিনি পরিবারের জন্য যুদ্ধবিরতি অনেক দেরিতে আসে।

ফিদা জায়েদ যার ২০ বছর বয়সী ছেলে উদাই সাম্প্রতিক বিমান হামলায় প্রাণ হারিয়েছে। তিনি এএফপি’কে বলেছেন ‘এখানে যারা জীবিত আছে কার্যত তারাও মৃতপ্রায়।’

তিনি এএফপি’কে বলেন, ‘শেষ কথাটি তিনি আমাকে বলেছিলেন, তিনি শুক্রবার যুদ্ধবিরতির জন্য অপেক্ষা করছেন।’ ‘উদাই আমাকে তার জন্য ভাত এবং মুরগির মাংস প্রস্তুত করতে বলেছিলেন।’
তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি আমি এবং আমার সন্তানরা এখানে মারা যাবে যাতে আমাদের একে অপরকে শোক পালন করতে পারবো না।’

কাতারের কর্মকর্তারা বলেছেন, মুক্তি পাওয়া ১৩ জন জিম্মির ‘প্রথম ব্যাচ’ একই পরিবারের নারী ও শিশু হবে। চার দিনে অন্তত ৫০ জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ইসরায়েলি ট্রমা বিশেষজ্ঞ এবং চিকিৎকদের দল তাদের জন্য অপেক্ষা করবে। সাথে বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত সৈন্যরা থাকবে। যাদের নির্দেশিকা অনুসারে তাদের নিরাপদে রাখার প্রতিশ্রুতি দেবে এবং শিশুদের জন্য প্রিয় একটি খাবারের আইটেম বহন করবে। তা পিৎজা বা চিকেন স্নিজেল যাই হোক না কেন।

ইসরায়েলের কারাগারে বন্দী ফিলিস্তিনি বন্দীদেরও শুক্রবার মুক্তি দেওয়া হবে। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল আনসারি কতজন মুক্তি পাবেন তা উল্লেখ না করে বলেছেন, বন্দীদের নামের তালিকা অনুমোদন করা হয়েছে।

আনসারি বলেন, ‘চুক্তি অনুযায়ী এই সময় আকাশ পথ ও স্থলে কোন আক্রমণ ছাড়াই সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে’ এবং ড্রোন থেকে পরিষ্কার আকাশ ‘নিরাপদ পরিবেশে জিম্মিদের মুক্তির অনুমতি দেওয়ার জন্য’ আকাশ ড্রোন মুক্ত থাকবে।’

হামাসের সশস্ত্র শাখা নিশ্চিত করেছে, খাদ্য, পানি এবং জ্বালানীর অভাবের সাথে বেঁচে থাকার জন্য সংগ্রামরত গাজাবাসীদের সহায়তা প্রদানের উদ্দেশে ‘এই চুক্তির অধীনে সকাল ৭টায় লড়াই বন্ধ করা হবে।’
এতে বলা হয়েছে, জিম্মিদের প্রত্যেকের জন্য তিনজন ফিলিস্তিনি বন্দিকে ছেড়ে দেওয়া হবে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় বলেছে, যাদের মুক্তি পাওয়ার কথা তাদের ‘নামের প্রথম তালিকা’ পাওয়ার পর তারা জিম্মিদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করছে। এতে কারা ছিল তা উল্লেখ করা হয়নি। খবর বাসস।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *