

ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে শুক্রবার ভোর পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় গাজা উপত্যকায় নিহত হয়েছেন ৮৪ জন। নিহতদের মধ্যে ৫০ জনই শিশু এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক; এছাড়া আহত হয়েছেন আরও ১৮৬ জন। শুক্রবার সন্ধ্যায় গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে এ তথ্য।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় গাজাজুড়ে নিহত হয়েছেন ৮৪ জন এবং আহত হয়েছেন ১৮৬ জন। নিহতদের মধ্যে ৫০ জন শিশু এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক।”
“তবে নিহত এবং আহতদের সংখ্যা আরও বেশি। কারণ যারা ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন, লোকবল ও উপকরণের অভাবে তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, গতকাল শুক্রবারের পর গত এক বছরে ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে গাজায় মোট নিহতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৪৩ হাজার ২৫৯ জনে এবং আহত হয়েছেন মোট ১ লাখ ১ হাজার ৮২৭ জন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চালায় গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাস এবং তাদের মিত্রগোষ্ঠী প্যালেস্টাইনিয়ান ইসলামিক জিহাদের ১ হাজার যোদ্ধা। তাদের হামলায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন; সেই সঙ্গে ২৪০ জনকে জিম্মি হিসেবে গাজায় ধরে নিয়ে যায় যোদ্ধারা।
আকস্মিক এই হামলার পর ওইদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী, যা এখনও চলছে। এ অভিযানে গত ১৩ মাসে যারা নিহত হয়েছেন, তাদের ৫৬ শতাংশই নারী ও শিশু।
জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক বিশ্ব এবং তিন মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু সেসব চেষ্টা সফল হচ্ছে না। কারণ অভিযান বন্ধ করার জন্য ইসরায়েলকে নিয়মিত আহ্বানও জানানো হলেও তেল আবিব তাতে কর্ণপাত করছে না।
ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান শুরুর আগে গাজা উপত্যকার জনসংখ্যা ছিল প্রায় ২২ লাখ। অভিযানের গত এক বছরে গাজার বাসিন্দাদের প্রায় সবাই বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এছাড়া ইসরায়েলি বাহিনীর বাধার কারণে সেখানে খাদ্য, সুপেয় পানি ও ওষুধের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের গুরুতর সংকট দেখা দিয়েছে। জাতিসংঘের মতে, গুরুতর মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে রয়েছেন গাজার ফিলিস্তিনিরা।
সুত্র : আনাদোলু এজেন্সি, আলজাজিরা