নভেম্বর ৯, ২০২৪

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সম্প্রতি ইউরোপ সফর করেছেন৷ ফ্রান্স দিয়ে সফর শুরু করে সার্বিয়া ও হাঙ্গেরি গিয়েছিলেন তিনি৷

ফ্রাঙ্কফুর্টের গ্যোয়েটে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ও চীনা পররাষ্ট্রনীতির বিশেষজ্ঞ ব্যারট্রাম লাঙ বলেন, ইউরোপের ঐ তিন দেশের সঙ্গে বেইজিংয়ের ‘বিশেষ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক’ রয়েছে৷ চীনা নেতৃত্ব ইউরোপকে ক্রমে দুই ভাগে বিভক্ত করেছে বলে মনে করেন তিনি, যার একপক্ষে আছে চীনের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখা দেশগুলো৷ অন্যপক্ষে, ততটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নেই, সেইসব দেশ আছে৷

চীনা প্রেসিডেন্টের এবারের সফরে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকা দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার করার দিকে নজর দেওয়া হয়েছে বলে মনে করেন লাঙ৷

ফ্রান্সে দুইদিনের সফর দিয়ে ইউরোপ সফর শুরু করেন চীনা প্রেসিডেন্ট৷ ফ্রান্সের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে জিনপিং আগ্রহী হলেও ইউরোপীয় ঐক্য দেখাতে দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ফন ডেয়ার লেয়েনকেও প্যারিসে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন৷ জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসকেও আমন্ত্রণ জানিয়েছিলে মাক্রোঁ৷ তবে শলৎস যাননি৷ অবশ্য চীনা প্রেসিডেন্টের ফ্রান্স সফরের আগে ২মে একসঙ্গে বৈঠক করেছিলেন শলৎস ও মাক্রোঁ৷

ফ্রান্সে বৈঠকের সময় লেয়েন জিনপিংকে বলেন, অর্থনীতি রক্ষায় ইউরোপ কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে বিরত থাকবে না৷

জিনপিংয়ের সফরের আগে চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে ইউরোপের ‘কৌশলগত স্বায়ত্তশাসনের’ সমর্থনে কথা বলায় মাক্রোঁর প্রশংসা করা হয়৷ ২০২৩ সালের এপ্রিলে চীন সফর শেষে মাক্রোঁ তাইওয়ান নিয়ে সংকটে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে উত্তেজনায় ইউরোপের অংশগ্রহণের বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন৷ তিনি বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র হওয়া মানে ওয়াশিংটনের ‘বাহন’ হওয়া নয়৷

চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের আওতায় সার্বিয়া অনেক ঋণ পাচ্ছে৷ ঋণের টাকায় হাঙ্গেরি ও সার্বিয়ার মধ্যে একটি দ্রুতগতির রেললাইন নির্মিত হওয়ার কথা।

ইইউ সদস্য হাঙ্গেরি রাশিয়ার প্রতি তার সমর্থনের কথা গোপন রাখেনি৷ এছাড়া চীনের বিরোধিতা করে ইইউর করা বিভিন্ন প্রস্তাবেও কয়েকবার ভেটো দিয়েছে হাঙ্গেরি৷

ইউরোপের বাজারে চীনা ইলেক্ট্রিক গাড়ি ছেয়ে যাওয়া নিয়ে ইউরোপের উদ্বেগের মধ্যেই হাঙ্গেরিতে চীনা গাড়ি তৈরির কারখানা গড়ে তোলার পরিকল্পনা হচ্ছে৷ এই অবস্থায় ১ জুলাই থেকে ইইউর সভাপতি দেশ হিসেবে দায়িত্ব নিচ্ছে হাঙ্গেরি৷ জিনপিং আশা করছেন, ইইউ-চীন সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ করবে হাঙ্গেরি৷

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ফ্যারেন্সি বলছেন, চীনের সামগ্রিক কৌশল হলো ‘ইইউর ঐক্যকে ক্ষুণ্ন করা’ এবং ইইউর বিভিন্ন সদস্যরাষ্ট্রের সঙ্গে আলাদাভাবে সম্পর্ক বাড়ানো।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...