বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, খুব শীঘ্রই আফ্রিকার কিছু দেশে আমরা (বাংলাদেশ) ফার্মাসিউটিক্যালস ইন্ডাস্ট্রিজ ও এগ্রো ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ শিফট করতে যাচ্ছি। মারিশাসকে কেন্দ্র করে আফ্রিকার ১৪০ কোটি মানুষকে টার্গেট করে আমরা কাজ করবো ।
মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, আফ্রিকার দেশ কেনিয়াতে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস বিনিয়োগ শুরু করেছে, ঔষধ উৎপাদনও শুরু করেছে। দ্রুত আরও কয়েকটি দেশে ফার্মাসিটিক্যালস ও এগ্রো বেইজ ফুড ইন্ডাস্ট্রি শিফট করতে যাচ্ছি। আমরা মরিশাস দিয়ে ঢুকবো। আফ্রিকাকে বেইজ করবো। আফ্রিকা মহাদেশের ১৪০ কোটি মানুষকে টার্গেট করে কাজ করব। যেটা একদম আনটেপ্থ।
অনুষ্ঠানে বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, আমরা যা পড়ি তার সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্র্যাকটিক্যাল কাজের অনেক পার্থক্য রয়েছে। ইথিকস নিয়ে আমরা যেভাবে কাজ করতে চাই, বাস্তবতার নিরিখে অনেক কিছুই করা সম্ভব হয় না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন ওয়ার্ল্ডওয়াইড জিও পলিটিক্যাল স্ট্র্যাটেজি অনেক পরিবর্তন হয়ে গেছে। আগে দেশের মন্ত্রীরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যেতেন বড় বড় ডোনেশন আনতে। যে মন্ত্রী যতো বেশি বিদেশি সাহায্য আনতে পারতেন, তাঁর ক্রেডিট ততো বেশি হতো। বিশ্বের অনেক দেশ এখনো আমাদের বন্যা-খরা পীড়িত দারিদ্র দেশ হিসেবেই জানে। আমাদের দেশের কিছু পলিটিক্যাল মানুষ দেশের বিরুদ্ধেই বিদেশিদের কাছে বদনাম করে। এজন্য বিদেশিরাও আমাদের ছোট করে দেখে।
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, আমরা যখন বিদেশিদের অর্থনৈতিক পরিবর্তনের কথা বলি তাঁরা অনেকেই বিশ্বাস করতে চায় না। পরে গুগলে অনুসন্ধান করে দেখে বিশ্বাস করে। আগামী মাসে আমরা প্যারিস, তুলুজ, বার্লিন এবং ফ্রাঙ্কফুর্টে ইনভেস্টমেন্ট সামিটের আয়োজন করছি। এ সামিটে ওইসব দেশের দূতাবাসগুলো আমাদের সহযোগিতা করছে। একসময় আমরা প্যারিসে সাহায্য নিতে যেতাম। আর এখন আমরা সেখানে বিসনেস পার্টনার খুঁজতে যাচ্ছি।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এই যে এত কিছু হচ্ছে, সবকিছুর মূল হচ্ছে ব্যাংকিং সেক্টর। এই ব্যাংকিং সেক্টরকে ভালোভাবে বুঝতে হবে। সে অনুযায়ী নিজেদের তৈরি করতে হবে। এসডিজি অর্জনে দেশের অর্থনীতির জন্য অবদান রাখতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ কখনো মিশন ভিশন ফেইল করেনি। আমরা যখন দারিদ্য দেশ ছিলাম তখন থেকে এখন পর্যন্ত কোন ঋণ পরিশোধে আমরা ব্যর্থ হইনি। ২০৩০ সালে এসডিজি অর্জনের যেই লক্ষ্য সেটিতেই আমরা ব্যর্থ হবো না।
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, মধ্যপ্রাচ্যসহ মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুর থেকে যদি আমরা আমাদের মানবসম্পদ তুলে নিই, তাহলে তাদের অর্থনীতি বন্ধ হয়ে যাবে। সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশের দক্ষ ও মেধাবী মানবসম্পদ লাগবে। ভালো ভালো লোকদের এখন আমাদের সব ক্ষেত্রেই লাগবে।
ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের চেয়ারম্যান ড. হাসিনা শেখের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আব্দুল মোনায়েম এবং কমিউনিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাশিহুল হক চৌধুরী।