সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৪

শ্বাসরুদ্ধকর দ্বিতীয় ম্যাচে আফগানিস্তানকে ১ উইকেটে হারিয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছে পাকিস্তান। গতরাতে আফগানিস্তানের ছুঁড়ে দেয়া ৩০১ রানের টার্গেটে ১ বল বাকী রেখে ৯ উইকেটে ৩০২ রান তুলে অবিশ্বাস্য এক জয় পায় পাকিস্তান। এর মাধ্যমে সিরিজ নিশ্চিতের পাশাপাশি ২-০ ব্যবধানে এগিয়েও গেল পাকিস্তান। প্রথম ওয়ানডে ১৪২ রানে জিতেছিলো পাকিস্তান।

হাম্বানটোটায় দ্বিতীয় ওয়ানডেতে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং বেছে নেয় প্রথম ম্যাচে ৫৯ রানে গুটিয়ে যাওয়া আফগানিস্তান। ব্যাট হাতে ২৪১ বলে ২২৭ রান তুলে দলকে দুর্দান্ত শুরু এনে দেন দুই ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান।

২২তম ওভারে শতরান ও ৩৭তম ওভারে দলের রান ২শতে নেন গুরবাজ-জাদরান জুটি। ৩৫তম ওভারে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি তুলে নেন ১২২তম বল খেলা গুরবাজ।

৪০তম ওভারের পঞ্চম বলে গুরবাজ-জাদরানের ২২৭ রানের জুটি ভাঙ্গেন পাকিস্তানের লেগ স্পিনার উসামা মীর। পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডেতে আফগানিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়েন গুরবাজ-জাদরান। ৬টি চার ও ২টি ছক্কায় ১০১ বলে ৮০ রান করে আউট হন জাদরান।

ইনিংসের ৪৪তম ওভারে ব্যক্তিগত দেড়শ রান পূর্ণ করেন গুরবাজ। পরের ওভারে পাকিস্তানের পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদির শিকার হন তিনি। ১৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় ১৫১ বলে ক্যারিয়ার সেরা ১৫১ রানের ইনিংস খেলেন গুরবাজ।

২৫৬ রানে দুই ওপেনারের বিদায়ের পর শেষ ৩৪ বলে ৪৪ রান তুলতে পারে আফগানিস্তান। শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভারে ৫ উইকেটে ৩০০ রান করে তারা। দুই ওপেনারের পর মোহাম্মদ নবি ২৯ ও অধিনায়ক হাশমতুল্লাহ শাহিদি অপরাজিত ১৫ রান করেন। পাকিস্তানের আফ্রিদি ২টি উইকেট নেন।

জবাবে ৯ ওভারে ৫২ রানের সূচনা পায় পাকিস্তান। জুটিতে ৩০ রান করে ফিরেন ওপেনার ফখর জামান। দ্বিতীয় উইকেটে ১৩০ বলে ১১৮ রানের জুটি গড়ে পাকিস্তানকে জয়ের পথে রাখেন আরেক ওপেনার ইমাম উল হক ও অধিনায়ক বাবর আজম। এই জুটি গড়ার পথে হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন ইমাম-বাবর দু’জনেই। খবর বাসস।

৩১তম ওভারে বাবরকে শিকার করে আফগানিস্তানকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন পেসার ফজলহক ফারুকি। ৬টি চারে ৬৬ বলে ৫৩ রান করেন বাবর। এই ইনিংস খেলার পথে বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন বাবর। ওয়ানডেতে ১শ ইনিংস শেষে সর্বোচ্চ রানের মালিক এখন বাবর। ১শ ইনিংসে বাবরের রান ৫১৪২। তিনি ভেঙ্গে ফেলেন দক্ষিণ আফ্রিকার হাশিম আমলার রেকর্ড। ১শ ইনিংসে ৪৯৪৬ রান নিয়ে এতদিন বিশ্বরেকর্ডের মালিক ছিলেন আমলা।

বাবর ফেরার পর পাকিস্তানের মিডল অর্ডার ব্যাটাররা দ্রুত ফিরেন। মোহাম্মদ রিজওয়ান ২, আঘা সালমান ১৪ ও মীর শূণ্যতে ফিরেন।
সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়ে নার্ভান নাইন্টিতে ফিরেন ইমাম। স্পিনার মুজিব উর রহমানের শিকার হবার আগে ৪টি চারে ১০৫ বলে ৯১ রানে আউট হন ইমাম।

ইমাম ফেরার পর পাকিস্তানের সপ্তম উইকেটে ৪৫ বলে ৪৭ রান যোগ করে পাকিস্তানকে লড়াইয়ে রাখেন ইফতিখার আহমেদ ও শাদাব খান। ইফতিখার ১৭ ও আফ্রিদি ৪ রানে আউট হলে চাপে পড়ে পাকিস্তান। ৪৮তম ওভারে ২৭২ রানে অষ্টম উইকেট হারায় পাকিস্তান।
নবম উইকেটে নাসিম শাহর সাথে ৯ বলে ২২ রান যোগ করেন শাদাব। এতে শেষ ওভারে ২ উইকেট হাতে নিয়ে ১১ রান দরকার পড়ে পাকিস্তানের।

শেষ ওভারের প্রথম ডেলিভারি না করে শাদাবকে মানকাডিং আউট করেন ফারুকি। শাদাবের আউটের পর প্রথম বলে চার মারেন নাসিম। পরের তিন বলে ৪ রান পায় পাকিস্তান। পঞ্চম বলে বাউন্ডারি মেরে পাকিস্তানের জয় নিশ্চিত করেন নাসিম।

৩৫ বলে ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪৮ রান করেন শাদাব। ৫ বলে অপরাজিত ১০ রান করেন নাসিম। ৩ রানে অপরাজিত থাকেন হারিস রউফ। আফগানিস্তানের ফারুকি ৩ উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হন শাদাব।

আগামীকাল কলম্বোতে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে খেলবে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *