মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির জেরে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম এক সপ্তাহে বেড়েছে ৯ শতাংশ। তার মধ্যে শুধু বৃহস্পতিবারই এই বৃদ্ধির হার ছিল ৫ শতাংশ। বাজার বিশ্লেষকদের বরাত দিয়ে শনিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।
রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুসারে, গত এক সপ্তাহে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দুই ব্র্যান্ড ব্রেন্ট ক্রুড এবং ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই)- উভয়েরই। শতকরা হিসেবে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম বেড়েছে ৮ শতাংশ এবং ডব্লিউটিআইয়ের দাম বেড়েছে ৯ দশমিক ১ অংশ। চলতি বছর এই প্রথম মাত্র এক সপ্তাহে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দামে এই পরিমাণ উল্লম্ফণ ঘটল।
জ্বালানি তেলের বাজার বিশ্লেষণকারী বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাজারে অপরিশোধিত তেলের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ আসে ইরান থেকে। ইরান এবং ইসরায়েলের মধ্যকার সাম্প্রতিক উত্তেজনা ইরানের তেল খনিগুলোতে ইসরায়েলের হামলার হুমকি বাজারের এই আকস্মিক উল্লম্ফণের জন্য দায়ী।
যুক্তরাজ্যের বাজার বিশ্লেষক সংস্থা স্টোনএক্সের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইসরায়েল যদি সত্যিই ইরানের তেল অবকাঠামোকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে, সেক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বাজারে তাৎক্ষণিকভাবে অপরিশোধিত তেলের দাম প্রতি ব্যারেলে ৩ থেকে ৫ ডলার বাড়বে।
গত বৃহস্পতিবার জ্বালানি তেল উত্তোলন ও রপ্তানিকারী দেশগুলোর জোট ওপেক প্লাস এক বিবৃতিতে বলেছে, ইসরায়েল যদি ইরানের তেল ক্ষেত্রেগুলোতে হামলা করে, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই আন্তর্জাতিক বাজারে ইরানি তেলের চালান আসা বন্ধ হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে কিছুদিন এই ঘাটতি পূরণ করতে পারলেও দীর্ঘমেয়াদে তা সম্ভব হবে না ওপেকের সদস্যরাষ্ট্রগুলোর পক্ষে।
ইরান ওপেক প্লাসের সদস্যরাষ্ট্র। প্রতিদিন আন্তর্জাতিক বাজারে ৩২ লাখ ব্যারেল পাঠায় দেশটি যা শতকরা হিসেবে বাজারের মোট তেলের ৩ শতাংশ।
শতকরা হিসেবে হার একেবারেই কম, কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে বাজার স্থিতিশীল রাখতে ইরানি তেলের যোগান গুরুত্বপূর্ণ। কারণ গত প্রায় দেড় বছর ধরে বাজারে মন্দাভাব চলছে। এই মন্দাভাব দূর করতে ২০২৩ সাল এবং ২০২৪ সালে তিন দফায় জ্বালানি তেলের দৈনিক উত্তোলন হ্রাস করেছে ওপেক প্লাস।
সূত্র : রয়টার্স