ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের দেহ কুচি-কুচি করার জন্য অভিযুক্তরা কিমা করার যন্ত্র ব্যবহার করেছিল বলে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইডি দাবি করছে। তদন্তকারীদের একাংশ জানিয়েছেন, এই ঘটনায় আটক সিয়াম হোসেন কলকাতার নিউ মার্কেটের একটি দোকান থেকে ২২০০ টাকা দিয়ে ওই যন্ত্র কিনেছিলেন।
প্রমাণ লুকানোর জন্যই ওই কিমা করার যন্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল বলে ওই সূত্রের দাবি। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।
ভারতীয় সিআইডির দাবি, ওই যন্ত্রে পুরো দেহ কিমা করা যায়নি। তাই ছোট ছোট খণ্ড করে তা ফেলা হয়েছিল নিউ টাউনের ওই আবাসনের সেপটিক ট্যাঙ্কে। সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে প্রায় পাঁচ কেজি পরিমাণ মাংসখণ্ড উদ্ধার করে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
খুনের পর এমপি আনারের দেহের ছবি তুলে তা বাংলাদেশের কয়েক জনকে পাঠিয়েছিল ঘাতক আমানুল্লাহ। মৃতদেহ যাতে কেউ খুঁজে না পায় সেজন্য কিমা এবং খণ্ড করা মাংস সেপটিক ট্যাঙ্কে ফেলে দেয়ার পর হাড়গুলি ফেলা হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের ভাঙড়ের কৃষ্ণমাটির বাগজোলা খালে।
তদন্ত চালাতে গিয়ে সিয়ামকে সঙ্গে নিয়ে সিআইডি ওই স্থান থেকে মানুষের হাড় উদ্ধার করেছে। সেগুলো ডিএনএ পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছেন তদন্তকারীরা।
উল্লেখ্য, গত ২২ মে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার শেরেবাংলানগর থানায় নিহত সংসদ সদস্যের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন বাদি হয়ে অপহরণ মামলা দায়ের করেন।
তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ৪ জুলাই দিন ধার্য করেছেন আদালত। এজাহারে আনারের মেয়ে ডরিন বলেন, গত ৯ মে রাত ৮টার দিকে আমার বাবা মানিক মিয়া অ্যাভিনিউর সংসদ সদস্য ভবনের বাসা থেকে গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন।
১১ মে ৪টা ৪৫ মিনিটে বাবার সঙ্গে মোবাইলে ভিডিও কলে কথা বললে বাবার কথাবার্তায় কিছুটা অসংলগ্ন মনে হয়।
এরপর বাবার মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিলে বন্ধ পাই। এরপর ১৩ মে আমার বাবার ভারতীয় নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপে একটি মেসেজ আসে। মেসেজে লেখা ছিল- ‘আমি হঠাৎ করে দিল্লি যাচ্ছি, আমার সঙ্গে ভিআইপি আছে। আমি অমিত শাহের কাছে যাচ্ছি। আমাকে ফোন দেয়ার দরকার নেই। পরে ফোন দেবো।
এছাড়াও আরো কয়েকটি মেসেজ আসে। মেসেজগুলো বাবার মোবাইল ফোন ব্যবহার করে অপহরণকারীরা করে থাকতে পারে।
মামলায় আরো উল্লেখ করেন, আমরা বিভিন্ন জায়গায় বাবার খোঁজখবর করতে থাকি। আমার বাবার কোনো সন্ধান না পেয়ে বাবার বন্ধু গোপাল বিশ্বাস কলকাতার বারানগর পুলিশ স্টেশনে সাধারণ ডায়েরি করেন।
বাবাকে খোঁজাখুজি অব্যাহত রাখি। পরবর্তীসময়ে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানতে পারি অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে বাবাকে অপহরণ করেছে।