এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকুর) মাধ্যমে আমদানি বিল পরিশোধের পর বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
তথ্য অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যালেন্স অব পেমেন্ট ম্যানুয়ালের ভিত্তিতে ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৫৫ কোটি ডলার, তবে আমদানি বিল পরিশোধের পর তা ১ হাজার ৯৪৬ কোটি ডলারে নেমে এসেছে।
আকু হলো একটি আন্তদেশীয় লেনদেন নিষ্পত্তির ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার লেনদেনের দায় পরিশোধ করা হয়। ইরানের রাজধানী তেহরানে আকুর সদর দপ্তর। এ ব্যবস্থায় সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতি দুই মাস অন্তর আমদানির অর্থ পরিশোধ করে
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গতকাল ১ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলারের আমদানি বিল পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর বিশ্ববাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়, বাংলাদেশের মতো আমদানিনির্ভর দেশের রিজার্ভে যার প্রভাব পড়েছে।
অন্যদিকে বাংলাদেশের ডলার আয়ের সবচেয়ে বড় দুই উৎস রপ্তানি ও প্রবাসী আয় প্রত্যাশার চেয়ে কম এসেছিল। যদিও গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে প্রবাসী আয় বাড়তে শুরু করেছে।
সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সাত দিনে প্রবাসী আয়ে রেকর্ড গড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, প্রথম সাত দিনে প্রবাসী আয় এসেছে ৫৪ কোটি ৪৫ লাখ ৪০ হাজার ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ছয় হাজার ৫৩৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। সে হিসেবে প্রবাসীরা প্রতিদিন প্রবাসী আয় পাঠিয়েছেন ৯ কোটি ৭৪ লাখ ২৩ হাজার ৩৩৩ মার্কিন ডলার। আগের মাস আগস্টে প্রতিদিন প্রবাসী আয় এসেছিল সাত হাজার ৩৭ লাখ ৯২ হাজার ৩৩৩ ডলার। আর আগের বছরের সেপ্টেম্বর মাসে প্রতিদিন প্রবাসী আয় এসেছিল চার কোটি ৪৪ লাখ ৭৮ হাজার ৩৩৩ ডলার।
তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ পাঠানোর কারণে প্রবাসী আয়ের প্রবৃদ্ধি আশানুরূপ হচ্ছে না। সাধারণত অফিসিয়াল চ্যানেলের তুলনায় হুন্ডিতে বিনিময় হার বেশিসহ অন্যান্য সুবিধা দেওয়া হয়।
কোটা সংস্কার আন্দোলন, কারফিউ জারি ও ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন এবং ভয়াবহ বন্যার পরও চলতি ২০২৪–২৫ অর্থবছরের প্রথম দুই মাস জুলাই ও আগস্টে পণ্য রপ্তানি কিছুটা বেড়েছে।
এর মধ্যে জুলাইয়ে প্রায় ৩ শতাংশ ও আগস্টে প্রায় সাড়ে ৫ শতাংশ বেড়েছে রপ্তানি। এ দুই মাসে মোট ৭৮৯ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩২ কোটি ডলার বেশি। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে পণ্য রপ্তানির এমন তথ্যই পাওয়া গেছে।