ছোট বড় সকলের ক্ষেত্রে ঋতু পরিবর্তনের সময় জ্বর-সর্দি-কাশি নতুন কিছু নয়। কিন্তু সেই ভাইরাসজনিত রোগই যখন ভয়াবহ রূপ নিয়ে শিশুদের আক্রান্ত করে সেটা ভাবনীয় বিষয়।
কলকাতার হাসপাতালগুলোতে অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এরই মধ্যে কলকাতার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে শিশু ওয়ার্ডে প্রায় সব বেডই ভর্তি। এ অবস্থায় পরিস্থিতি সামাল দিতে নির্দেশনা জারি করেছে ভারতের স্বাস্থ্য দপ্তর।
শনিবার রাতে (১৮ ফেব্রুয়ারি) জারি করা সে নির্দেশিকায় সংক্রমণ ঠেকাতে অভিভাবকদের বিশেষ পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি অ্যাডিনো ভাইরাস মোকাবিলায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকদেরও বেশ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, অ্যাডিনো ভাইরাসের তীব্র সংক্রমণের জেরে এরই মধ্যে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। সেই বৈঠকে হাসপাতালগুলোতে অ্যাডিনো ভাইরাসের আক্রান্ত শিশু রোগীর সংখ্যা ও তাদের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
শিশু রোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোভিডের মতোই অ্যাডিনো ভাইরাস সংক্রামক। এ ক্ষেত্রে মাস্ক পরা, দূরত্ববিধি মেনে চলা জরুরি।
একই সঙ্গে শিশুদের বাবা-মায়ের উদ্দেশে ৫টি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন তারা। সেগুলো হলো,
১) অসুস্থ শিশুকে স্কুলে পাঠাবেন না।
২) ভিড় জায়গা এড়িয়ে চলুন।
৩) বাস-ট্রেনসহ ভিড় এলাকায় মাস্ক পরুন।
৪) নিজে থেকে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
৫) জ্বর, মাথাব্যথা, সর্দি-কাশির উপসর্গ হলেই শিশুকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া জরুরি।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদ্দেশেও ৩ দফা নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। সেগুলো হলো,
১) পেডিয়াট্রিক ভেন্টিলেটর, অক্সিজেনের জোগানে নজরদারির জন্য সিএমওএইচ, মেডিকেল কলেজগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।
২) প্রয়োজনে শ্বাসকষ্টজনিত রোগীর বেডের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে।
৩) পরিস্থিতির নিরিখে কলকাতার হাসপাতালগুলোতে অসুস্থ শিশুদের রেফার করতে হবে।
অ্যাডিনো ভাইরাসে মূলত ১-১৪ বছরের শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে। ফলে স্কুল থেকে শিশুদের মধ্যে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা বেশি। এ জন্য স্কুলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং সতর্কতা অবলম্বন জরুরি বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।
অন্যদিকে চিকিৎসকরা বলছেন, মাস্ক পরা, দূরত্ববিধি মেনে চলা এবং স্যানিটাইজার ব্যবহারে জোর দিতে হবে।