অতিরিক্ত দামে টিকিট বিক্রি, উপকরণ ক্রয়ে দুর্নীতি ও চিকিৎসা সেবা দুর্নীতির অভিযোগে জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, রাজশাহী বাংলাদেশ রেলওয়ে হাসপাতাল এবং কিশোরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
রোববার (১৫ জানুয়ারি) দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিমের পৃথক অভিযানে ঢালাওভাবে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া না গেলেও বেশকিছু অসঙ্গতি ও অনিয়ম পেয়েছে বলে জানা গেছে।
অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মোহাম্মদ শফিউল্লাহ বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগে পরিপ্রেক্ষিতে এনফোর্সমেন্ট টিম ৬টি অভিযান পরিচালনা করে। দুদক টিম যাচাই-বাছাই শেষে প্রতিবেদন দাখিল করবে।
দুদক জানায়, মহাখালী জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে কর্মচারী এবং দায়িত্বরত আনসার সদস্যদের বিরুদ্ধে আগত রোগীদের কাছ থেকে ১০ টাকার টিকিট ২০০ টাকা মূল্যে বিক্রয়ের অভিযোগ আসে। পরে দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযান পরিচালনা করে। দুদক টিম দীর্ঘ সময় হাসপাতালে পর্যবেক্ষণ করে ছদ্মবেশে টিকিট কাটেন এবং বেশ কয়েকজন রোগীর সঙ্গে কথা বলে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া বিষয়ে সত্যতা পায়নি। তবে হাসপাতালে কোনও সিটিজেন চার্টার ছিল না ও পরিবেশ কিছুটা অপরিচ্ছন্ন দেখতে পাওয়া যায়। পরবর্তীকালে হাসপাতালের দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে কথা বলে টিম।
অন্যদিকে রাজশাহীতে বাংলাদেশ রেলওয়ে, পশ্চিমাঞ্চল, আওতাধীন হাসপাতালর বিভিন্ন উপকরণ ক্রয়ে ৭ কোটি টাকা অনিয়মের অভিযোগে রাজশাহীর সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে অভিযান পরিচালনা করে। টিম বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের সদর দপ্তর এবং বাংলাদেশ রেলওয়ে হাসপাতাল পশ্চিমাঞ্চল রাজশাহী পরিদর্শন করে। অভিযানকালে দুদক টিম অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ক্রয় সংক্রান্ত কিছু রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে। সব রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে পরবর্তী সময়ে আইনি ব্যবস্থা নেবে বলে জানা গেছে।
এছাড়া কিশোরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তানভীর হোসেনসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে আগত রোগীদের সঠিক চিকিৎসাসেবা প্রদান না করে প্রাইভেট ক্লিনিকে প্রেরণ করার অভিযোগে এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানকালে সাধারণ রোগীর ছদ্মবেশে হাসপাতাল পরিদর্শন করে এবং সেবা গ্রহণ করে। সেবা গ্রহণকালে দালালচক্রের এক সদস্য ছদ্মবেশী সেবাগ্রহীতাকে প্রাইভেট ডায়গনস্টিক ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করায় তাকে আটক করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সোপর্দ করা হয়। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আশেপাশের সব ডায়গনস্টিক সেন্টারে অভিযান পরিচালনা করে সেবাগ্রহীতাদের বক্তব্য নেওয়া হয় এবং কাগজপত্র সংগ্রহ করা হয়। অভিযানকালে হাসপাতালে সেবার মান এবং দালালচক্রের দৌরাত্ম্য সংক্রান্ত বিষয়ে সতর্কতামূলক নির্দেশনা ও সংগৃহীত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হয়।