প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার পর্যটন শিল্পের যথাযথ গুরুত্ব অনুধাবন করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই শিল্পের প্রসারে কাজ করছে।
তিনি বলেন, ‘এ লক্ষ্য অর্জনে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আমাদের সরকারের ৮ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় বিভিন্ন কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ২০১০ সালে জাতীয় পর্যটন উন্নয়ন নীতিমালা ঘোষণা করা হয়েছে-যাতে টেকসই পর্যটন উন্নয়নের লক্ষ্যে ইকো-ট্যুরিজম, কমিউনিটি বেজড ট্যুরিজম, দায়িত্বশীল পর্যটনকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পর্যটন শিল্পের কার্যকর উন্নয়ন দেশের জাতীয় অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখার মাধ্যমে ২০৪১ সালে উন্নত-সমৃদ্ধ এবং স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করি।’
প্রধানমন্ত্রী বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ‘বিশ্ব পর্যটন দিবস’ উপলক্ষ্যে এক বাণীতে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ‘বিশ্ব পর্যটন দিবস ২০২৩’ পালিত হচ্ছে জেনে তিনি আনন্দিত। জাতিসংঘ বিশ্ব পর্যটন সংস্থা কর্তৃক নির্ধারিত এবারের প্রতিপাদ্য ‘পর্যটনে পরিবেশবান্ধব বিনিয়োগ’ বর্তমান প্রেক্ষাপটে যথার্থ হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী মনে করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, পর্যটন শিল্পের জন্য শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নে বিনিয়োগ করে এই পৃথিবীর টেকসই অবকাঠামো এবং সবুজ রূপান্তরকে ত্বরান্বিত করতে হবে। তাহলেই উদ্ভাবন, প্রযুক্তি ও উদ্যোক্তার মাধ্যমে পর্যটন শিল্পে সত্যিকারের সমৃদ্ধি আসবে। টেকসই পর্যটন উন্নয়ন ধারণা অনুসরণে জীববৈচিত্র্য, প্রাকৃতিক পরিবেশ, স্থানীয় ঐতিহ্য ও কৃষ্টির পরিবর্তন না ঘটিয়ে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের উদ্যোক্তা এবং জনসাধারণকে সম্পৃক্ত করে বাংলাদেশের পর্যটনের বিকাশে সবাইকে এগিয়ে আসার উদাত্ত আহ্বান জানান তিনি।
পর্যটনের অর্থনৈতিক গুরুত্ব অনুধাবন করেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় পর্যটনকে গুরুত্ব দিয়ে অন্তর্ভুক্ত করেন এবং ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠা করেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পর্যটন শিল্পের অপার সম্ভাবনাময় বাংলাদেশ ভৌগোলিকভাবে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সড়ক, রেল, বিমান ও নৌ যোগাযোগ রয়েছে।
তিনি বলেন, নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, পাহাড়-পর্বত, অরণ্য, জীব-বৈচিত্র্য, সমুদ্র-সৈকত, নদ-নদী, বৈচিত্র্যময় আদিবাসী সংস্কৃতি, সমৃদ্ধ ও গৌরবময় ইতিহাস-ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি, ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন, অতিথিপরায়ণ মানুষ অর্থাৎ বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের যেকোনো পর্যটককে আকৃষ্ট করার মতো সব উপকরণই বাংলাদেশে বিদ্যমান। পরিবেশ ও প্রতিবেশগত ভারসাম্য বজায় রেখে, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে সমুন্নত রেখে স্থানীয় জনসাধারণকে পর্যটন কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করে টেকসই পর্যটন নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে আমাদের দেশের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব।