ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪

একাদশ জাতীয় সংসদের ২৪তম ও ২০২৩ সালের চতুর্থ অধিবেশন রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টায় শুরু হবে।

এর আগে একই দিন বিকেল ৪টায় কার্যউপদেষ্টা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত থাকবেন। ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে অধিবেশন কতদিন চলবে। এই অধিবেশন ৩ থেকে ৫ কার্যদিবস চলতে পারে। অধিবেশনে পাসের জন্য তিনটি বিল উত্থাপন করা হবে। এ ছাড়া সাইবার সিকিউরিটি আইনসহ ৬টি বিল উত্থাপন করা হবে।

সংসদ সচিবালয় সূত্র জানায়, বছরের সেপ্টেম্বরে বসা অধিবেশনের মেয়াদ সাধারণত খুবই সংক্ষিপ্ত হয়। অধিবেশন শুরুর কিছুক্ষণ আগে সংসদের কার্য উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে অধিবেশন কত দিন চলবে, তা নির্ধারণ হবে।

গত ৬ জুলাই জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশন শেষ হয়। সংবিধান অনুসারে, একটি অধিবেশন শেষ হওয়ার দিন এবং পরবর্তী অধিবেশনের প্রথম বৈঠকের মধ্যে ৬০ দিনের বেশি বিরতি দেওয়া যাবে না। তবে এই বিধান সংসদের মেয়াদ পূর্তির আগের ৯০ দিনের (পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়) ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।

চলতি একাদশ সংসদের মেয়াদ পাঁচ বছর পূর্ণ হবে আগামী বছরের ২৯ জানুয়ারি। সংবিধান অনুযায়ী, সংসদের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে হবে। আগামী ১ নভেম্বর থেকে এই ৯০ দিন গণনা শুরু হবে। তার আগে চলতি সংসদের ২৪তম অধিবেশন বসছে আগামী ৩ সেপ্টেম্বর। সেপ্টেম্বরের অধিবেশনের পর আর সংসদের অধিবেশন ডাকা সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা থাকছে না। তবে গুরুত্বপূর্ণ আইন পাসের জন্য শেষ অধিবেশন বসবে আগামী অক্টোবরের শেষ দিকে।

নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আনিছুর রহমান বলেন, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে হবে।২০২৪ সালের শুরুর দিকে, জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে সংসদ নির্বাচন হবে। তবে, আমরা এখনও ভোট গ্রহণের তারিখ ঠিক করিনি। আজ শনিবার প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হলো।

অপর দিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ কিংবা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, তফসিল কবে হতে পারে সে সিদ্ধান্ত কমিশন সভায় হবে। সেটি নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহেও হতে পারে। সাধারণত ৫০-৬০ দিন আগে তফসিল হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেপ্টেম্বরের সংসদ অধিবেশনে পাস হতে পারে সরকারি প্রাথমিক শিক্ষক কল্যাণ ট্রাস্ট বিল-২০২৩, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন বিল-২০২৩ ও পারিবারিক আদালত বিল-২০২৩। এ ছাড়া উত্থাপন হতে পারে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল (সংশোধন) বিল-২০২৩, বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা (সংশোধন) বিল-২০২৩, বাংলাদেশ ডেইরি উন্নয়ন বোর্ড বিল-২০২৩, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন বিল-২০২৩, সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (সংশোধন) বিল-২০২৩।

এদিকে, বহুল আলোচিত ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮’ পরিবর্তে নতুন ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩’ নামে গত ২৮ আগস্ট চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। ৭ আগস্ট অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’ পরিবর্তন করে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’ নামে নতুন আইন করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর পর ৯ আগস্ট আইনটির খসড়া আইসিটি বিভাগের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে অংশীজনদের মতামত চাওয়া হয়। এই আইন আগামী অধিবেশনে উত্থাপনের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে সংসদ সচিবালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, সাইবার নিরাপত্তা আইনটি পাস করতে এ অধিবেশনে উত্থাপন করা হবে। উত্থাপনের পর পর্যালোচনার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হবে। কমিটি চূড়ান্ত রিপোর্ট দিলে আগামী মাসের অধিবেশনে পাসের জন্য উত্থাপন করা হবে। এছাড়া আরো কয়েকটি বিল উত্থাপন করা হবে।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, একাদশ সংসদের ২৪তম ও ২০২৩ সালের চতুর্থ অধিবেশন ৩ সেপ্টেম্বর বসছে। গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়া অন্যদের সংসদ ভবনে আসার অনুমতি মিলবে না। সংসদ চলাকালীন দর্শনার্থী প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহারে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা হবে।

প্রসঙ্গত, চলতি একাদশ সংসদের প্রথম বৈঠক বসেছিল ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি। সেই হিসাব অনুযায়ী, বর্তমান সংসদের মেয়াদ শেষ হবে আগামী বছরের ২৯ জানুয়ারি। বিদ্যমান সংবিধান অনুযায়ী, সংসদ বহাল রেখে ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারি থেকে এর পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। যে কারণে, এ বছরের ১ নভেম্বর থেকে সেই ৯০ দিন গণনা শুরু হবে।

বিগত দশম সংসদের শেষ বৈঠক বসে ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর। ওই বছরের ৮ নভেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছিল নির্বাচন কমিশন আর ৩০ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...