দেশের পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত সিমেন্ট খাতের বহুজাতিক কোম্পানি হাইডেলবার্গ সিমেন্ট বাংলাদেশ লিমিটেডের ৩৪তম বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) গতকাল মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এজিএমে কোম্পানিটির ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ সমাপ্ত হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ঘোষিত ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ প্রদানের অনুমোদন দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে সভায় সমাপ্ত হিসাব বছরের আর্থিক প্রতিবেদনও অনুমোদন করা হয়েছে। কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জোসে মার্সেলিনো উগার্টের সভাপতিত্বে ডিজিটাল প্লাটফর্মের মাধ্যমে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় শেয়ারহোল্ডাররা তাদের বক্তব্যে কোম্পানিটির সোনালি দিনের প্রত্যাশার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। সেই সঙ্গে লোকসান কাটিয়ে কোম্পানিটি যেভাবে চলতি ২০২৩ হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে ভালো ব্যবসা দেখিয়েছে তা যেন অব্যাহত থাকে সে বিষয়ে মতামত তুলে ধরেন।
এদিকে চলতি ২০২৩ হিসাব বছরে কোম্পানিটির আর্থিক প্রতিবেতদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানির বিক্রি হয়েছে ৫৬৮ কোটি টাকার। এরমধ্যে থেকে উৎপাদন খরচ বাদে নিট ব্যবসা হয়েছে ৮৬ কোটি টাকার বেশি। এ সময় কোম্পানির পরিচালন মুনাফা হয়েছে ৫৬ কোটি টাকার বেশি। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির নিট মুনাফা হয়েছে প্রায় ৩৯ কোটি টাকা। এদিকে আগের বছর একই সময় কোম্পানির ব্যবসা হয়েছিল ২৮ কোটি টাকা, যা এ বছরের থেকে ৫৮ কোটি টাকা কম। ফলে সব খরচ বাদে কোম্পানিটির সে সময় লোকসান হয়। কিন্তু এ বছর কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি মুনাফা হয়েছে ৯ টাকা ৮২ পয়সা। সেখান থেকে আগের বছরের লোকসান ২ টাকা ৯৭ পয়সা বাদ দিলে মুনাফা দাঁড়ায় ৬ টাকা ৮৫ পয়সা।
এসময় কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদ (এনএভি) আগের বছরের থেকে ৬ টাকা ৮৪ পয়সা বেশি হয়েছে। সমাপ্ত প্রান্তিকে এনএভি দাঁড়িয়েছে ৬৬ টাকা ৯১ পয়সা। যা আগের বছরে ছিল ৬০ টাকা ৭ পয়সা। এছাড়া আলোচ্য প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নগদ অর্থের পরিমাণও বেড়েছে সাড়ে ৭ টাকার বেশি। প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানির শেয়ার প্রতি নগদ অর্থ দাঁড়ায় ২৭ টাকা ৪৯ পয়সা। যা আগের বছর ছিল ১৯ টাকা ৮৪ পয়সা। কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ১০০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ৫৬ কোটি ৫০ লাখ ৩৫ হাজার ৮০০ টাকা। কোম্পানিটির দীর্ঘ মেয়াদে ক্রেডিট রেটিং এএ২ এবং স্বল্প মেয়াদে এসটি-২।
হাইডেলবার্গ সিমেন্ট বাংলাদেশের মানসম্পন্ন সিমেন্টের অন্যতম বৃহৎ উৎপাদনকারী। এটি জার্মানির হাইডেলবার্গ সিমেন্ট গ্রুপের সদস্য। গ্রুপটির সিমেন্ট উৎপাদনে ১৫০ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং ৫০টিরও বেশি দেশে কাজ করছে। বাংলাদেশে এটি রুবি সিমেন্ট এবং স্ক্যান সিমেন্ট নামে দুটি স্বনামধন্য ব্র্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করে।
কোম্পানিটির বর্তমানে জাতীয় ছয়টি প্রকল্প চলমান রয়েছে। এগুলো হলো- কর্ণফুলী টানেল, চট্টগ্রাম মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল, শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলওয়ে প্রকল্প, সিডিএ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এবং কক্সবাজার রানওয়ে এক্সটেনশন।
যেগুলো শেষ হয়েছে সেগুলো হলো:- নিউ মুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল, পদ্মা বহুমুখী সেতু এবং সিটিজি আউটার সিটি রিং রোড।