শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শিক্ষাই হবে আগামী দিনের মেগা প্রজেক্ট। একটি মানসম্মত শিক্ষাই পারে সভ্যতার পরিবর্তন করতে। সময়ের চাহিদা পূরণে আমরা চাই, দক্ষ ও যোগ্য নাগরিক তৈরি করেত। আমরা জ্ঞান, বিজ্ঞানে অগ্রসর শিক্ষার্থী তৈরি করতে চাই। সেজন্য, শিক্ষা, সহশিক্ষা এবং গবেষণায় বরাদ্দ বাড়াচ্ছি। সে লক্ষ্যে সরকার প্রতি বছর এ খাতে বরাদ্দ বাড়াচ্ছে।
তিনি বলেন, আগে ধারণা ছিল কারিগরি শিক্ষা গরিব শিক্ষার্থীদের জন্য। কিন্তু এটি ভুল ধারণা। কারিগরি শিক্ষাই ঠিক করে দেবে কর্মসংস্থান এবং শিক্ষায় সাফল্য। সরকার সেজন্য বর্তমানে কারিগরি শিক্ষায় বেশি জোর দিচ্ছে। আমাদের স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে কারিগরি শিক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেও জানান তিনি।
বুধবার (১২ এপ্রিল) বিকেলে ঢাকার পূর্বাচল এলাকার বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ২৪ তম সমাবর্তনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু দেশ বিনির্মানে শিক্ষায় জোর দিয়েছিলেন। তার নেতৃত্বে শিক্ষা কমিশন হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা ভাবনা শুধু শিক্ষা কমিশিনে নয়; এটি আওয়ামী লীগের ইশতেহার, ৫৪ যুক্তফ্রন্ট, ৬৬’র ছয়দফা এবং পরবর্তী সব আন্দোলনে আমরা সে দর্শন পেয়েছি।
দেশের উচ্চশিক্ষার মান উন্নয়নে সরকার কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, সম্প্রতি ইউনিসেফের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, এশিয়ায় প্রাথমিক শিক্ষায় শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। আমরা এটি নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে চাই না; আরও এগিয়ে যেতে চাই। আমরা শিক্ষার্থীদের দক্ষ, যোগ্য ও সময়োপযোগী করতে চাই।
উচ্চশিক্ষায় শিক্ষার্থীরা যে বিষয়ে শিখুক না কেন তাকে প্রযুক্তি ও ভাষাগত দক্ষতা অর্জন করতেই হবে। সেজন্য আমরা শিক্ষায় পরিবর্তন আনতে কাজ করছি। আমাদের শিক্ষার্থীদের দক্ষতা উন্নয়নে শিক্ষার পাশাপাশি সহশিক্ষা এবং সফট স্কিল ডেভেলপমেন্টে কাজ করতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে। এটি এখন সময়ের দাবি। আমাদের প্রতিযোগিতায় টিকতে হলে পরিবর্তনের আবশ্যিকতা স্বীকার করতে হবে। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে কাজ করতে হবে। বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শুধু দায়সারা ইতিহাস পাঠ যথেষ্ট নয় জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের আরও জানাতে হলে তাদের জন্য আরও বেশি পাঠ্য সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। আমাদের অতীত ও ঐতিহ্য সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের জানাতে উদ্যোগ নিতে হবে। এতে তারা আগামী দিনের যোগ্য নাগরিক হওয়ার পাশাপাশি দেশপ্রেমিক হিসেবে গড়ে উঠবে।
তিনি বলেন, আমাদের নতুন শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীদের নতুন বাংলাদেশের দিকে নিয়ে যাবে। নতুন শিক্ষাক্রমে অভিজ্ঞতা-নির্ভর এবং সুখপাঠ্যের বিষয়গুলোয় জোর দেওয়া হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, নতুন শিক্ষাক্রম সফল হবে।
এ সময় ডা. দীপু মনি সদ্য গ্রাজুয়েটদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনার এ অর্জনে আপনার, শিক্ষক এবং অভিভাবকদের অবদান রয়েছে। তাই, আপনাদের দেশের প্রতি, দেশের মানুষের প্রতি প্রতিশ্রুতি রাখতে হবে; তাদের কল্যাণের জন্য কাজ করতে হবে। এ ছাড়াও আগামী জীবন সাফল্যময় করতেও আপনাদের কাজ করতে হবে। এ জন্য নতুন নতুন বিষয়গুলো শেখার প্রতি, গবেষণার প্রতি চর্চা অব্যাহত রাখতে হবে।
পাশ্চাত্য আমাদের উপর জোর করে অনেক কিছু চাপিয়ে দিতে চায়; আমরা ছোট মন নিয়ে সামনে এগোতে চাই না। আমাদের সমৃদ্ধ ইতিহাস আছে। তাই, মন ছোট করে এগিয়ে যাওয়ার দরকার নেই। আমরা মাথা উঁচু করে এগিয়ে যেতে চাই। সম্মান নিতে বাঁচতে হলে আমাদের তা করতেই হবে। বলেন শিক্ষামন্ত্রী।