

আগামী এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহেই শেষ হচ্ছে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনালের শতভাগ কাজ। এরপর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে টার্মিনালের দায়িত্ব বুঝে নেবে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। সব প্রস্তুতি শেষে আগামী অক্টোবর থেকে পুরোদমে কার্যক্রমে আসবে নতুন এই টার্মিনাল।
বেবিচক সূত্রে জানা গেছে, শিডিউল অনুযায়ী আগামী ৫ এপ্রিল তৃতীয় টার্মিনালের সব কাজ শেষ হওয়ার সময় নির্ধারিত। ৬ এপ্রিল থেকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান থেকে টার্মিনালটি বুঝে নেবে বেবিচক। এরপর শুরু হবে পুরোনো টার্মিনাল থেকে নতুন টার্মিনালে সবকিছু স্থানান্তরে অপারেশন রেডিনেন্স অ্যান্ড এয়ারপোর্ট ট্রান্সফার (ওআরএটি) প্রকল্পের কাজ। এরই মধ্যে সিস্টেম ইন্টিগ্রেশন ও ক্যালিব্রেশনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে, যা একাধিক যাচাই-বাছাইয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে।
তৃতীয় টার্মিনালের সব ধরনের কাজ প্রায় শেষ বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক এ কে এম মাকসুদুল ইসলাম। তিনি বলেন, অল্প কিছু কাজ বাকি রয়েছে।তা নির্ধারিত সময় অর্থাৎ আগামী এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহেই শেষ হবে। এরপর টার্মিনালটি বুঝে নেবে বেবিচক।
গত ৭ অক্টোবর ‘স্বপ্নের সঙ্গে বাস্তবতার সংযোগ’ স্লোগান নিয়ে টার্মিনালটির আংশিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী অক্টোবর থেকে তৃতীয় টার্মিনাল পুরোদমে চালুর পর বিমানবন্দরের সক্ষমতা বাড়বে আড়াই গু ণ। বাড়বে উড়োজাহাজ ওঠানামা। বছরে যাত্রী চলাচল ৮০ লাখ থেকে বেড়ে দাঁড়াবে ২ কোটি ৪০ লাখে।
বেবিচকের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান জানান, তৃতীয় টার্মিনাল এখন ফ্লাইট উড্ডয়ন-অবতরণের জন্য প্রায় প্রস্তুত। আগামী অক্টোবরে টার্মিনালটি পুরো চালু হলে দেশি-বিদেশি এয়ারলাইনসগুলো কার্যক্রম বাড়াবে। এতে আকাশপথে যাত্রীদের আরও সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত হবে, রাজস্ব আয়ও বাড়বে।
বেবিচক সূত্র জানায়, বর্তমানে শাহজালাল বিমানবন্দরে দুটি টার্মিনালে জায়গা রয়েছে এক লাখ বর্গমিটারের কিছু বেশি। তৃতীয় টার্মিনাল চালু হলে এর সঙ্গে যুক্ত হবে আরও ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার স্থান। তিনতলা টার্মিনাল ভবনে থাকছে ১১৫টি চেক-ইন কাউন্টার, ৬৪টি ডিপারচার ও ৬৪টি অ্যারাইভাল ইমিগ্রেশন ডেস্ক। নিরাপত্তা নিশ্চিতে থাকবে ২৭টি ব্যাগেজ স্ক্যানিং মেশিন, ৪০টি স্ক্যানিং মেশিন, ১২টি বোর্ডিং ব্রিজ, ১৬টি ক্যারোসেল ও ১১টি বডি স্ক্যানার।
তৃতীয় টার্মিনালে একসঙ্গে ৩৭টি উড়োজাহাজ পার্ক করা যাবে। রানওয়েতে উড়োজাহাজের অপেক্ষা কমাতে নির্মাণ করা হয়েছে দুটি হাইস্পিড ট্যাক্সিওয়ে। পণ্য আমদানি ও রপ্তানির জন্য নির্মাণ করা হয়েছে দুটি ভবন। একসঙ্গে ১ হাজার ৩৫০টি গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য তিনতলা ভবনের নির্মাণকাজ প্রায় শেষ। তৃতীয় টার্মিনালের মোট ২৬টি বোর্ডিং ব্রিজের মধ্যে প্রথম ধাপে চালু হবে ১২টি। বহির্গমনের জন্য মোট ১১৫টি চেক-ইন কাউন্টারের মধ্যে ১৫টি থাকবে সেলফ সার্ভিস চেক-ইন কাউন্টার। ১০টি স্বয়ংক্রিয় পাসপোর্ট কন্ট্রোল কাউন্টারও থাকবে।
প্রকল্পসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, তৃতীয় টার্মিনাল ভবনকে মেট্রোরেল ও ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে সংযোগ করতে পাতালপথ ও উড়ালসড়ক থাকবে। স্বতন্ত্র কোনো ভিভিআইপি টার্মিনাল না থাকলেও টার্মিনাল ভবনের দক্ষিণ পাশে সর্বাধুনিক সুবিধাসম্পন্ন জায়গা থাকবে।