নভেম্বর ১০, ২০২৪

লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজার।  এক সপ্তাহ ব্যবধানে কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে শাক-সবজির দাম। বিক্রেতাদের দাবি, বাজারে সরবরাহ ঘাটতিই এর মূল কারণ। আজ শুক্রবার ২৫ আগস্ট রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিকেজি পেঁপে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, পটোল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, শিম ২০০ টাকা, কহি ৫০ টাকা ও বেগুন ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি মুলা ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, ঢেড়স ৬০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, আলু ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, কচুর মুখী ৮০ টাকা ও টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। আর প্রতিপিস লাউ ৬০ টাকা, ফুলকপি ৫০ টাকা ও বাধাকপি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়।

আকরাম নামে এক বিক্রেতা জানান,বাজারে শাক-সবজির যোগান খুবই কম। এতে কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়ে গেছে দাম। সরবরাহ না বাড়লে, দাম কমার সম্ভাবনা নেই।

এদিকে, ঊর্ধ্বমুখী মাছের বাজার। প্রায় প্রতিটি মাছেরই দাম বেড়েছে । আকারভেদে প্রতিকেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকায়   । আর বাজারভেদে প্রতিকেজি চাষের পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৩০ টাকা পর্যন্ত।

বিক্রেতারা জানান, এবার ইলিশ কম ধরা পড়ছে; তাই দামও বাড়ছে। তাছাড়া বাজারে মাছের সরবরাহ কম থাকায় অন্যান্য মাছের দামও বাড়তি।

রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, দেড় কেজি ওজনের ইলিশ ১ হাজার ৮০০ টাকা, ১ কেজি ওজনের ইলিশ ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা, ৮শ’ থেকে ৯শ’ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১ হাজার ৩০০ টাকা ও ৫শ’ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৯০০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানী বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিকেজি টেংরা মাছ ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকায়, দেশি মাগুর ১ হাজার ৪০০ টাকা, দেশি শিং ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা, শোল ১ হাজার টাকা, বোয়াল ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা, আইড় ৮৫০ টাকা, পুঁটি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা ও নদীর পাঙাশ ৯০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।  প্রতি কেজি রুই ৩৫০ থেকে ৪২০ টাকা, কাতল ৩৮০ থেকে ৪৪০ টাকা, রূপচাঁদা ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা, তেলাপিয়া ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা, পাবদা ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা ও চিংড়ি ৯০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে, অস্থির হয়ে উঠেছে মুরগির বাজারও। প্রতি কেজিতে ১০ থেকে ৩০ টাকা বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। বাজারভেদে বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়। এছাড়া লাল লেয়ার ৩২০ থেকে ৩৫০ ও সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৩০ টাকায়।

বিক্রেতারা বলছেন, হঠাৎ করে বাজারে মুরগির সরবরাহ কমে গেছে। ফলে কিছুটা বেড়েছে দাম। কেরানীগঞ্জের জিনজিরা বাজারের বিক্রেতা ইমন বলেন,বাজারে মুরগির পর্যাপ্ত যোগান নেই। তাছাড়া পাইকারি পর্যায়েও দাম বেড়েছে। ফলে খুচরা বাজারেও ঊর্ধ্বমুখী মুরগির দাম।

স্থিতিশীল রয়েছে গরু ও খাসির মাংসের দাম। বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকায়। আর প্রতি কেজি খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০ টাকায়।

তবে দাম কমেছে ডিমের। বাজারভেদে প্রতি ডজন লাল ডিম ১৪৪ থেকে ১৫০ টাকা ও সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৪৪ টাকায়। এছাড়া প্রতি ডজন হাঁসের ডিম বিক্রি হচ্ছে ২১০ টাকায়।

এদিকে সপ্তাহ ব্যবধানে বেড়েছে আদা, রসুন ও পেঁয়াজের দাম। প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ৮০ থেকে ৯৫ টাকা, আর ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়।

এছাড়া প্রতিকেজি দেশি রসুন ২৮০ টাকা ও আমদানিকৃত রসুন বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকায়। আর মানভেদে প্রতিকেজি আদা বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২৬০ টাকায়।

বাজারে স্থিতিশীল রয়েছে চালের দাম। বাজারে প্রতিকেজি আটাইশ ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, মিনিকেট ৬০ থেকে ৬২ টাকা, নাজিরশাইল ৬৫ টাকা ও পাইজাম বিক্রি হচ্ছে ৫২ টাকায়।

এর আগে রোববার (১৩ আগস্ট) প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৫ টাকা কমিয়ে ১৭৪ টাকা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। এ ছাড়া খোলা সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৫ টাকা কমিয়ে ১৫৪ টাকা এবং ৫ লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ২৩ টাকা কমিয়ে ৮৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

আর রোববার (১৩ আগস্ট) প্রতি কেজি পরিশোধিত খোলা চিনি ১৩৫ টাকা থেকে ৫ টাকা কমিয়ে ১৩০ টাকা এবং প্রতি কেজি পরিশোধিত প্যাকেট চিনি ১৪০ টাকা থেকে ৫ টাকা কমিয়ে ১৩৫ টাকা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন।

নিত্যপণ্যের এ অস্থির বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ের দাবি জানিয়েছেন ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ই। ক্রেতারা বলছেন, নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হয় না। এতে বিক্রেতারা ইচ্ছেমতো দাম বাড়ানোর সুযোগ পায়।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...