ডিসেম্বর ২৫, ২০২৪

রাশিয়ার খেলার মাঠগুলো এখন প্যারেড গ্রাউন্ডে পরিণত হচ্ছে। প্রশান্ত মহাসাগর থেকে কৃষ্ণ সাগর পর্যন্ত স্কুল ও নার্সারি গ্রেডের শিশুরা ইউনিফর্ম পরে মহড়া করছে। বড় শিশুদের শেখানো হচ্ছে কিভাবে পরিখা খনন করতে হয়, গ্রেনেড নিক্ষেপ করতে হয় এবং প্রকৃত গোলাবারুদ ব্যবহার করতে হয়।

সারাদেশের স্কুলগুলোতে সশস্ত্র বাহিনীতে যোগদানের বিষয়টিকে মহিমান্বিত করা হচ্ছে। এছাড়া কিশোরদের ‘স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা’ গঠন করা হচ্ছে এবং মাতৃভূমির প্রতিরক্ষার উপর জোর দেওয়ার জন্য জাতীয় পাঠ্যক্রম পরিবর্তন করা হচ্ছে। সংক্ষেপে বলতে গেলে, রাশিয়ার শিশুরা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে।

ইউক্রেনে হামলার পর থেকে রাশিয়ার সরকারি স্কুলগুলোতে সামরিকীকরণ তীব্র হয়েছে। এই খাতে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করছে সরকার। শিক্ষামন্ত্রী সের্গেই ক্রাভতসভ সম্প্রতি জানিয়েছেন, রাশিয়ার স্কুল ও কলেজগুলোতে এখন প্রায় ১০ হাজার ‘সামরিক-দেশপ্রেমিক’ ক্লাব রয়েছে।

এই ক্লাবগুলো সরকারের বহুমুখী প্রচেষ্টার অংশ। এর আওতায় স্কুল পাঠ্যক্রমের আমূল পরিবর্তন আনা হয়েছে। পাঠ্যক্রমের আওতায় সামরিক-দেশপ্রেমিক মূল্যবোধের উপর বাধ্যতামূলক ক্লাস আছে। এছাড়া হালনাগাদ ইতিহাসের বইগুলোতে রাশিয়ার সামরিক বিজয়ের কথা বলা হয়েছে।

রাশিয়ার স্থানীয় এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সিএনএন-এর একটি বিস্তৃত সমীক্ষায় দেখা গেছে, সাত বা আট বছর বয়সী শিশুরা মৌলিক সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছে। জুলাই মাসে বেলগোরোডের শিশুরা যে অনুশীলনে অংশ নিয়েছিল তার মধ্যে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের ব্যবহার, বিচ্ছিন্ন একটি মেশিনগান একত্রিত করা এবং প্রতিবন্ধকতা কীভাবে টপকানো যায় তার প্রশিক্ষণ। বেলগোরোডের গভর্নর ব্যাচেস্লাভ গ্ল্যাডকভ নিয়মিত স্কুলছাত্রী এবং স্কুলে যাওয়া শুরু করবে এমন শিশুদের অনুশীলন করার পরামর্শ দিয়েছেন।

মে মাসে ক্রাসনোদরে সাত বা আট বছর বয়সী কয়েক ডজন শিশু সেনাবাহিনী এবং নৌবাহিনীর ইউনিফর্ম পরে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র হাতে নিয়ে প্যারেড করেছে। ভোলোগদা শহরে অনুষ্ঠিত একটি কুচকাওয়াজে একটি ছোট শিশু অভিবাদন জানিয়ে একজন কর্মকর্তাকে বলেছিল, ‘কমরেড প্যারেড কমান্ডার! কুচকাওয়াজ প্রস্তুত। আমি কমান্ডার উলিয়ানা শুমেলোভা।’

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...