নভেম্বর ১৫, ২০২৪

যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সক্ষম সেনাবাহিনী গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। এই দেশ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ হিসেবে গড়ে উঠবে, ইনশাআল্লাহ।

রাজশাহী সেনানিবাসে শনিবার সকালে বাংলাদেশ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টের ৩য় পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সশস্ত্র বাহিনী দেশের যেকোনো প্রয়োজনে কাজ করবে। এই বাহিনীকে আরও আধুনিক ও যুগোপযোগী করে গড়ে তুলতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

বারবার ভোট দিয়ে নির্বাচিত করায় দেশের জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জনগণ বারবার ভোট দিয়ে আমাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছে বলেই আজকে বাংলাদেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। ইনশাআল্লাহ, বাংলাদেশ এগিয়েই যাবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে উঠবে।

সরকারপ্রধান বলেন, ‘দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে সেনাবাহিনী অবদান রেখে যাচ্ছে। সেনাবাহিনী যেখানে যাচ্ছে, সেখানেই আস্থা ও বিশ্বাস গড়ে তুলছে। শুধু দেশে নয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনেও তারা অবদান রেখে এই দেশের জন্য সুনাম বয়ে আনছে।’

তৃতীয় কোর পুনর্মিলনী উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু সেনাবাহিনী নয়; পুরো সশস্ত্র বাহিনীকেই আধুনিক করে গড়ে তুলতে চায় সরকার। নিজেদের অপারেশনাল অভিজ্ঞতা বাহিনীর অনুজ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিনিময়ে দক্ষতা বাড়বে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এ সময় সেনাবাহিনীর জন্য তার সরকারের গৃহীত দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যের কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ আধুনিক ও যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সদা প্রস্তুত থাকতে সেনা রেজিমেন্টের সব সদস্যের প্রতি আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টের তৃতীয় কোর পুনর্মিলনী উপলক্ষ্যে শনিবার বেলা ১১টায় হেলিকপ্টারে করে রাজশাহী সেনানিবাসে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রেজিমেন্টাল হেড কোয়ার্টারে তাকে স্বাগত জানান সেনাপ্রধানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

প্যারেড গ্রাউন্ডে প্রবেশের পর বিভিন্ন ইউনিটের সমন্বয়ে গঠিত কন্টিনজেন্টের পক্ষ থেকে সালাম জানানো হয় প্রধানমন্ত্রীকে। পরে সুসজ্জিত প্যারেডকারে করে উপস্থিত সেনা কর্মকর্তাদের প্যারেড পরিদর্শন করেন সরকারপ্রধান। এ সময় সেনা কন্টিনজেন্ট কমান্ডারদের সঙ্গেও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী।

এরপর একে একে বিভিন্ন সেনা কন্টিনজেন্ট সুশৃঙ্খল মার্চপাস্টের মাধ্যমে প্যারেড করে প্রধানমন্ত্রীকে সালাম জানান। এরপর প্যারাকমান্ডো ইউনিট সমৃদ্ধ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টের সদস্যরা মাস্কেটট্রি ড্রিল প্রদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রীর সামনে। এই ড্রিল বা কৌশল যোদ্ধাদের মনোবল এবং দক্ষতা বাড়াতে ব্যাপক কার্যকর বিভিন্ন দেশে। সেনাপ্রধানকে সঙ্গে নিয়ে মঞ্চে বসে এই ড্রিল দেখেন সরকারপ্রধান। আর এর মাধ্যমেই শেষ হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতা।

অনুষ্ঠানে ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তা, অন্যান্য অফিসার, জুনিয়র কমিশন্ড অফিসার, অন্যান্য পদবির সেনাসদস্য এবং গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টের বাৎসরিক অধিনায়ক সম্মেলন ও ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টের ৩য় পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী ও সেনাবাহিনী প্রধানসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের উপস্থিতি ঘটেছে। এর মধ্যদিয়ে এই রেজিমেন্টের সদস্যদের মাঝে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি ও রেজিমেন্টের প্রতিটি সদস্যের মাঝে আগামী দিনে দেশ সেবার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপনের প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...