অতি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে মৌলভীবাজারের মনু, ধলাই ও কুশিয়ারাসহ সবকটি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সেই সঙ্গে হাকালুকি, হাইল হাওড়ে অস্বাভাবিক পানি বেড়েছে। কমলগঞ্জ উপজেলার পাহাড়ি খরস্রোতা ধলাই নদী বড়চেক-দেওড়াছড়া এলাকার প্রতিরক্ষা বাঁধের নতুন ও পুরাতন ভাঙন দিয়ে পানি ঢুকে রহিমপুর ইউনিয়নের অন্তত ছয়টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
আজ বুধবার (১৯ জুন) সকাল নয়টায় ড়চেক-দেওড়াছড়া এলাকার আশপাশ জুড়ে নতুন করে ভাঙন দেখা দেয়। নদীর পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ভাঙনের তীব্রতা বাড়ছে। প্রায় সাড়ে ৩০০ ফুট এলাকায় ভাঙন দিয়ে তীব্র গতিতে লোকালয়ে পানি ঢুকছে। এতে এ এলাকার চৈত্রঘাট, বড়চেক, ছয়কুটসহ প্রায় ছয়টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
রহিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. মাহমুদ আলী জানান, ধলাই নদীর পানি বাড়তে থাকায় মঙ্গলবার রাত নয়টা থেকে বড়চেক- দেওড়াছড়া এলাকার প্রতিরক্ষা বাঁধের আগের ভাঙন দিয়ে পানি ঢুকতে থাকে। সকালে নতুন ভাঙন দেখা দিয়েছে। সকাল নয়টার পর পানির তোড়ে ভাঙনের তীব্রতা বাড়ছে।
তিনি জানান, ধলাই নদী দক্ষিণ ভাগ, ছয়কোট, বড়চেক গ্রামের কয়েকটি স্থান অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
চেয়ারম্যান আরও জানান, লক্ষ্মীপুর এলাকার পুরাতন ভাঙন দিয়ে পানি ঢুকছে। এদিকে অতি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে হাওড় হাকালুকিতে পানি অস্বাভাবিক বেড়েছে। এতে হাওড় পাড়ের উপজেলা কুলাউড়ায় তিনটি, জুড়ীতে তিনটি, বড়লেখায় চারটি এবং রাজনগর উপজেলার দুটি ইউনিয়নের রাস্তাঘাটে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এ এলাকার আঞ্চলিক মহাসড়কের বেশকিছু স্থান পানিতে নিমজ্জিত হয়ে গেছে। এতে সড়ক যোগাযোগ এক রকম বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। হাকালুকি হাওড়ের পানির চাপে কুলাউড়া পৌরসভার কিছু অংশ এবং উপজেলা পরিষদের আশপাশজুড়ে পানিতে তলিয়ে আছে। একইভাবে জলাবদ্ধতার শিকার বড়লেখা পৌরসভার বেশকিছু অংশ।
বড়চেক এলাকার শায়েস্তা মিয়া জানান, উজানে বৃষ্টিপাত বাড়লে ধলাই নদীতে পানির তীব্রতা বাড়বে। তখন এ পানি মৌলভীবাজার সদর উপজেলার চাঁদনীঘাট ইউনিয়নের দিকে ছড়িয়ে পড়বে।
মৌলভীবাজার জেলার জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালাম বলেন, জেলার অতি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে নদনদী ও হাওড়ে পানি বৃদ্ধির ফলে এক লাখ ৯৩ হাজার ৯৯০ মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়াও ৯৮ টি আশ্রয় কেন্দ্রে ৫৭১ জন পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। পানিবন্দিদের মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি ভাবে খাদ্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে।s