বাংলাদেশে এখন প্রায় ১০ হাজার শিল্প ও কল-কারখানা রয়েছে। এর মধ্যে মে মাসের বেতন পরিশোধ করা হয়েছে ৭ হাজার ৬০২টি শিল্প ও কল-কারখানায়। অর্থাৎ জুনের ১৭ দিন পার হলেও এখনো বেতন পায়নি ২ হাজার ৩১৩টি কল-কারখানার শ্রমিকরা।
পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমইএ, বেপজা,পাটকল এবং শিল্পাঞ্চল পুলিশ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, শনিবার (১৭ জুন) দুপুর ২টা পর্যন্ত সময়ে ৯ হাজার ৯১৫টি কল-কারখানার মধ্যে চলতি বছরের মে মাসের বেতন দেওয়া হয়েছে ৭ হাজার ৬০২টি কল-কারখানায়। যা শতাংশের হিসেবে ৭৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ। অর্থাৎ ২ হাজার ৩১৩টি কারখানার শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করা হয়নি। যা শতাংশের হিসেবে ২৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সদস্যভুক্ত ১ হাজার ৬২৪ কারখানার মধ্যে মে মাসের বেতন হয়েছে ১ হাজার ৩৪৩টি কারখানায়। অর্থাৎ ২৮১টি কারখানায় এখনো মে মাসের বেতন হয়নি। নিটওয়ার মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সদস্যভুক্ত ৬৯৯টি কারখানার মধ্যে ৫৩১ কারখানার বেতন পরিশোধ করা হয়। ১৬৮টি বেতন পরিশোধ করা হয়নি।
বিটিএমইএ-র ৩৫৯টি কারখানার মধ্যে ২৫৩ কারখানার বেতন পরিশোধ করা হয়েছে, বাকি আছে ১০৬টির। বেপজার ৩৯২টির মধ্যে ৩৮৯ কারখানার বেতন পরিশোধ করা হয়েছে, বাকি আছে ১২টির। পাটকল ৯০টির মধ্যে ৮৪ বেতন পরিশোধ করা হয়েছে, বাকি আছে ৬টির। ৬ হাজার ৭৫১টি কারখানার মধ্যে ৫ হাজার ১১টির বেতন দেওয়া হয়েছে, আর পরিশোধ করা হয়নি এক হাজার ৭৪০টির। মোট ২ হাজার ৩১৩টি কারখানায় বেতন হয়নি। যা শতাংশের হিসেবে ২৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
সূত্র মতে, আশুলিয়া এলাকার থাকা ১৭৯২টি কল-কারখানার মধ্যে ৬৭ দশমিক ৩১ শতাংশ কারখানায় বেতন পরিশোধ করা হয়েছে। বাকি রয়েছে ৩০ দশমিক ৬৯ শতাংশ। গাজীপুর এলাকার মধ্যে ২ হাজার ২৮৭ কারখানার মধ্যে ৭০ দশমিক ৪০ শতাংশ কারখানার বেতন পরিশোধ করা হয়েছে। অর্থাৎ ২৯ দশমিক ৬০ শতাংশ কারখানার বাকি রয়েছে। চট্টগ্রামের ১৪৮০ কারখানার মধ্যে ৮৯ দশমিক ৮০ শতাংশ কারখানার বেতন দেওয়া হয়েছে। নারায়ণগঞ্জের ২২০৭টির মধ্যে ৬০ দশমিক ৮৫ কারখানায় বেতন পরিশোধ করা হয়েছে। ময়মনসিংহের ২৬৬টির মধ্যে ৯৭ দশমিক ২৯ শতাংশ, খুলনার ৩৬৭টির মধ্যে ৯৯ দশমিক ৪৬ শতাংশ এবং সিলেটের ৭৪০টি কারখানার সব কয় পরিশোধ করা হয়েছে।
এদিকে ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে জুন মাসের প্রথম ১৫ দিনের বেতন পরিশোধ করেছে ৫১টি কারখানা। অর্থাৎ জুন মাসের ১৫ দিনের বেতন পাননি ৯ হাজার ৮৬৪টি কারখানার শ্রমিকরা।
সার্বিক বিষয়ে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, অধিকাংশ কারখানায় মে মাসের দেওয়া হয়েছে। অল্প কিছু কারখানায় মে মাসের বেতন পরিশোধ করেননি। এগুলো দ্রুত পরিশোধ করা হবে। সরকারি নির্দেশনা মেনেই মে মাসের পাশাপাশি আমরা জুন মাসের ১৫ দিনেরও বেতন দেওয়া শুরু করেছি।
নিটওয়ার মালিকদের সংগঠনের বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, আমাদের অধিকাংশ কারখানার বেতন পরিশোধ করা হয়েছে। হাতে গোনা কয়েকটি কারখানা রয়েছে সেগুলো প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তারা দুই চারদিনের মধ্যে বেতন দিয়ে দেব।
উল্লেখ্য, জাতীয় ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদের (টিসিসি) ৭৫তম এবং আরএমজি টিসিসির ১৫তম সভা অনুষ্ঠিত হয় ৬ জুন। সেখানে শিল্প-কারখানার বেতন-ভাতা পরিশোধ নিয়ে আলোচনা করেন সংশ্লিষ্টরা। সভায় সভাপতিত্ব করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান। সভা শেষে তিনি ঈদুল আজহার ছুটির আগেই শ্রমিকদের ঈদ বোনাস এবং জুন মাসের ১৫ দিনের বেতন দেওয়ার জন্য মালিকদের প্রতি আহ্বান জানান।