হিংসা বিধ্বস্ত মণিপুরে সেনা-পুলিশ যৌথ অভিযানে বড়সড় সাফল্য মিলল। এদিন ৮ ঘণ্টার অপারেশনে বেশ কয়েকজন সন্ত্রাসবাদীকে এনকাউন্টারে খতম করা গেছে, এমনটাই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং। অন্যদিকে, সোমবার মণিপুরে পা রাখছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি মেইতেই এবং কুকি এই দুই সম্প্রদায়কেই শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন। সেনাপ্রধান জেনারেল মনোজ পান্ডে শনিবারে দুদিনের সফরে মণিপুরে এসে পৌঁছেছেন।
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে কমপক্ষে ৪০ জন সন্দেহভাজন কুকি সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং।
রোববার তিনি সাংবাদিকদের জানান, গত দুইদিনের সহিংসতায় দুই পুলিশ সদস্যেরও মৃত্যু হয়েছে।
সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেই উপজাতির জন্য কোটা সুবিধা বাড়ানোর ইস্যুতে রাজ্যটিতে গত ৩ মে জাতিগত সহিংসতার সূত্রপাত হয়।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাসীরা এম-১৬ এবং একে-৪৭ অ্যাসল্ট রাইফেল এবং স্নাইপার বন্দুক ব্যবহার করে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা চালিয়েছে। তারা বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়ার জন্য অনেক গ্রামে এসেছিল।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সেনাবাহিনী এবং অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীর সহায়তায় তাদের বিরুদ্ধে শক্ত পদক্ষেপ নেয়া শুরু করেছি। আমরা রিপোর্ট পেয়েছি প্রায় ৪০ জন সন্ত্রাসীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে’।
বাংলাদেশ, চীন এবং মায়ানমার দ্বারা বেষ্টিত উত্তর-পূর্ব ভারতের দূরবর্তী রাজ্যগুলোতে দীর্ঘকাল ধরে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
প্রায় ৩২ লাখ বাসিন্দা নিয়ে গঠিত মণিপুর রাজ্যে নয়াদিল্লি থেকে আধাসামরিক এবং সামরিক বাহিনীর সদস্যদের পাঠানো হয়েছে।
হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেই এবং খ্রিস্টানপ্রধান কুকি উপজাতির মধ্যে লড়াইয়ের পর সেখানে কারফিউ জারি করা হয়। কয়েক সপ্তাহ ধরে ওই এলাকায় মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রয়েছে।
নিহতদের বেশিরভাগই কুকি সম্প্রদায়ের বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাদের কিছু গ্রাম এবং গির্জা মেইতেই জনতা ধ্বংস করেছে। কিন্তু কিছু জায়গায় কুকিরাও মেইতেইদের লক্ষ্যবস্তু করেছে।
মেইতেইদেরকে সরকারী চাকরির গ্যারান্টিযুক্ত কোটা এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেয়ার সম্ভাবনায় কুকি সম্প্রদায় বিক্ষোভ শুরু করলে প্রথম সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
কুকি এবং অন্যান্য উপজাতীয় গোষ্ঠীগুলোর জন্য বর্তমানে সংরক্ষিত এলাকায় মেইতেইদের জমি অধিগ্রহণের অনুমতি দেয়া হতে পারে, সেই আশঙ্কাও কুকিদের মধ্যে বিরাজ করছে।