শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ও ধ্বংস হয়ে যাওয়া দুলামিয়া কটন স্পিনিং মিলসের আর্থিক হিসাবেও ভূয়া সম্পত্তি দেখানো হয়েছে। যেগুলো আর্থিক হিসাব থেকে বাদ দিলে কোম্পানির পূঞ্জীভূত লোকসান আরও বাড়বে।
দুলামিয়া কটনের আর্থিক হিসাবে ৬ কোটি ৯৮ লাখ টাকার স্থায়ী সম্পদ দেখানো হয়েছে। কিন্তু নিরীক্ষককে ওই সম্পদের রেজিস্টার বা বর্তমান অবস্থার কোন ডকুমন্টেস বা তথ্য দেওয়া হয়নি। এছাড়া ৩ বছরের বেশি সময় ধরে কোম্পানির উৎপাদন বন্ধ থাকলেও সম্পদ ইমপেয়ারড টেস্ট (বাজার মূল্য) করা হয়নি। যেখানে কোম্পানিটির প্রকৃত সম্পদ মূল্য আর্থিক হিসাবের তুলনায় অনেক ব্যবধান হতে পরে। এতে করে আর্থিক হিসাবে ভূল তথ্য দেওয়া হয়েছে বলে নিরীক্ষক বিশ্বাস করেন।
কোম্পানিটি ৩ বছরের বেশি সময় বন্ধ থাকার পরেও মজুদ পণ্য রয়েছে। কিন্তু নিরীক্ষককে মজুদ পণ্যের সংখ্যা, মান ও মূল্য নিয়ে কোন টেকনিক্যাল স্ট্যাটাস দেয়নি দুলামিয়া কর্তৃপক্ষ। যে মজুদ পণ্যের অস্তিত্ব নিয়ে নিরীক্ষক সম্পূর্ণ সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। কারন মজুদ পণ্যের সত্যতা নিয়ে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ কোন যৌক্তিক প্রমাণাদি দিতে পরেনি।
বন্ধ কোম্পানিটির আর্থিক হিসাবে গ্রাহকদের কাছে পাওনা হিসাবে ১৪ লাখ টাকা দেখানো হয়েছে। যা আদায় নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন নিরীক্ষক। কিন্ত এ নিয়ে কোন সঞ্চিতি গঠন করা হয়নি।
বিভিন্ন জায়গায় অগ্রিম প্রদান হিসাবে ৬৩ লাখ টাকার সম্পদ দেখিয়েছে দুলামিয়া কটন। কিন্ত ওই টাকার মধ্যে ২৩ লাখ টাকা অনেক দিন ধরে একই অবস্থায় রয়েছে। যা আদায় বা সমন্বয় করা হচ্ছে না। যার অস্তিত্বের কোন সঠিক বা যথাযথ ডকুমেন্টস নিরীক্ষককে দিতে পারেনি।
নিরীক্ষক জানিয়েছেন, দুলামিয়া কটনে ওয়ার্কার্স প্রফিট পার্টিসিপেশন ফান্ডে (ডব্লিউপিপিএফ) ৬ লাখ ৯৪ হাজার টাকা রয়েছে। যা বিতরন করছে না।
কিন্তু ২০০৬ সালের শ্রম আইনের ২৩২ ধারা অনুযায়ি, অর্থবছর শেষ হওয়ার ৯ মাসের মধ্যে ফান্ড বিতরনের বিধান রয়েছে। কিন্তু ওই ফান্ড কর্মীদের মধ্যে বিতরন না করে তাদেরকে ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করছেন দুলামিয়া কটন কর্তৃপক্ষ। এছাড়া কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ওই ফান্ড ব্যবহারের বিপরীতে সুদ হিসাব করেনি।
উল্লেখ্য, ১৯৮৯ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া দুলামিয়া কটনে শেয়ারবাজারের বিভিন্ন শ্রেণীর (উদ্যোক্তা/পরিচালক ব্যতিত) বিনিয়োগকারীদের মালিকানা ৬৬.৯৯ শতাংশ। যে কোম্পানিটির চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে ০.৩৭ টাকা লোকসান হয়েছে।