মেইন লাইনের ক্লিয়ারেন্স না দিয়ে লুইপ লাইনের ক্লিয়ারেন্স দেওয়ার ফলেই দাঁড়িয়ে থাকা মালবাহী ট্রেনে সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ধাক্কা দেয় বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। রোববার (১৬ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১১টার দিকে দুর্ঘটনা কবলিত স্থানে অভিযোগ জানান কয়েকজন।
তারা বলেন, কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বে অবহেলা ও ভুল সিগনালের ফলেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। মালবাহী ট্রেনটি দাঁড়িয়েছিল লুইপ লাইনে। সোনার বাংলা এক্সপ্রেস যেহেতু ঢাকা ছাড়া অন্য কোনো স্টেশনে থামে না, তাই সোনার বাংলা এক্সপ্রেসের যাওয়ার কথা মেইন লাইনে। কিন্তু কন্ট্রোল রুম থেকে সোনার বাংলা এক্সপ্রেসকে হয়তো লুইপ লাইনের ক্লিয়ারেন্স দেওয়া হয়েছে। মেইন লাইনের ক্লিয়ারেন্স না দিয়ে লুইপ লাইনের ক্লিয়ারেন্স দেওয়ার ফলে লুইপ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মালবাহী ট্রেনটিকে ধাক্কা দেয় দ্রুতগতির সোনার বাংলা এক্সপ্রেস। কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বের অবহেলার কারণে ভয়াবহ এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। তারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করলে এমন ঘটনা ঘটার কথা নয়।
অপরদিকে, হাসানপুর রেলওয়ে স্টেশনের কন্ট্রোল রুমে কারা দায়িত্ব পালন করেছিলেন তা জানা যায়নি। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ঘটনার পর থেকে স্টেশন মাস্টার সোহাগ বড়ুয়াসহ সবাই আত্মগোপনে চলে গেছেন। বন্ধ রাখা হয়েছে তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনও।
এ বিষয়ে জানতে হাসানপুর রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার সোহাগ বড়ুয়াকে ফোন করা হলেও তার মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।
কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম বলেন, আমরা এখনো এসব বিষয়ে কিছু জানতে পারিনি। কীভাবে এ ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে সেটা বের করার জন্য ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তদন্ত কমিটি আগামী ৩ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিলে মূল কারণ জানতে পারব। তখন আপনাদেরকে বিস্তারিত জানানো হবে।
প্রসঙ্গত, রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার হাসানপুর রেলওয়ে স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা মালবাহী ট্রেনে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেন পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে সোনার বাংলা এক্সপ্রেসের ৭টি বগি লাইনচ্যুত হয়। মালবাহী ট্রেনের পেছনের কন্টেইনার চূর্ণ হয়ে যায়। আহত হন ২০-৩০ জন যাত্রী। আহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ ঘটনায় ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কুমিল্লা জেলা প্রশাসন। এখন পর্যন্ত কারও মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।