নভেম্বর ৮, ২০২৪

এশিয়া কাপের ফাইনাল এবং বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশের বিপক্ষে হেরে হতাশ ভারতীয় ক্রিকেট দল। টাইগারদের ছুড়ে দেওয়া ২৬৬ রানের টার্গেট তাড়ায় লড়াই করেও ৬ রানে হেরে যায় ভারত।

শুক্রবার শ্রীলংকার কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে শ্বাসরুদ্ধকর ক্লোজ ম্যাচটি ফিনিশ করতে পারেনি ভারত। তীরে গিয়ে তরী ডুবায় রোহিত শর্মার নেতৃত্বাধীন দলটি। ভারতের হারের ময়নাতদন্তে উঠে এসেছে কয়েকটি কারণ; তার মধ্যে অন্যতম ৪টি হলো-

ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের স্পিন খেলার দক্ষতার অভাব:

শ্রীলংকার কলম্বোর যে পিচে ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচটি হয় তা ছিল টিপিক্যাল উপমহাদেশীয় ট্র্যাক। বল ধীরে ব্যাটে আসে, টাইমিংয়েও সমস্যা হয়। বাংলাদেশ দল মিরপুরে এমন পিচে খেলে অভ্যস্ত। তাই বিদেশে হোম কন্ডিশনের সুবিধা পেয়ে যায় টাইগাররা।

ঘূর্ণি পিচে আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলতে গিয়ে উইকেট ছুড়ে দিয়েছেন লোকেশ রাহুল, ঈশান কিষান, সূর্যকুমার যাদবরা। ওপেনার শুভমান গিল অবশ্য এ তালিকায় ব্যতিক্রম ছিলেন।

স্পিন সমস্যার কারণে এর আগে ২০১৪ সালে বাংলাদেশ সফরে সিরিজ হারে ভারত। একই সমস্যার কারণে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেও বাজে পারফরম্যান্সের নজির রয়েছে ভারতের।

বাংলাদেশের স্পিন শক্তি প্রদর্শন:
বর্তমান বাংলাদেশ দলের মূল শক্তি স্পিনাররা। কলম্বোয় হোম কন্ডিশনের সুবিধা পেয়ে তার পুরো সদ্ব্যবহার করে টাইগাররা। বাংলাদেশ দলে কোনো রিস্ট স্পিনার নেই। টিম ম্যানেজমেন্টের আস্থা ফিঙ্গার স্পিনারদের ওপর।

অধিনায়ক সাকিব উইকেটের চরিত্র বুঝতে পেরে ষষ্ঠ ওভারেই বোলিংয়ে নিয়ে আসেন স্পিনার নাসুম আহমেদকে। এরপর আনেন দুই মেহেদিকে। এর সঙ্গে যোগ হন অভিজ্ঞ সাকিব। এই চারজনের স্পিনে ভারতের ব্যাটসম্যানদের দমবন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। সময় যত গড়ায় ততই পিচ মন্থর থেকে মন্থরতর হয়ে যায়। সেই পিচেই দাপট দেখান বাংলাদেশ দলের স্পিনাররা।

বাংলাদেশের স্লো মিডিয়াম পেসার:
দুই সিমার নিয়ে খেলতে নেমেছিল বাংলাদেশ। অভিষিক্ত তানজিম হাসান সাকিব এবং অভিজ্ঞ মোস্তাফিজুর রহমান। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের প্রথম ম্যাচে ভারতীয় ওপেনার রোহিত শর্মাকে আউট করেন তানজিম। পরের ওভারে ফেরান কোহলির পরিবর্তে খেলতে নামা তিলক ভার্মাকে। দুই তারকা ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে ধুঁকতে থাকে ভারত। তানজিমের বলের গতি এবং স্লো মিডিয়াম পেস টাইম করতে সমস্যায় পড়েন তুখোড় ফর্মে থাকা ভারতীয় ওপেনার শুভমান গিলও।

মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম স্পেলে একটু খরুচে বোলিং করলেও পুষিয়ে দিয়েছেন ডেথ ওভারে। কাটার, স্লোয়ার, গতির হেরফের ঘটিয়ে ডেথ ওভারে স্পেলে এসেই ভারতের জয়ের সামান্যতম যে সম্ভাবনা ছিল, তা নির্মূল করে দেন মোস্তাফিজ।

ভারতীয় বোলারদের ব্যর্থতা:
বাংলাদেশকে শুরুতেই ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়েছিলেন শার্দুল ঠাকুর ও মোহাম্মদ শামিরা। প্রাথমিক সেই ধাক্কা সামলে বাংলাদেশ ম্যাচে ফিরেছিল অধিনায়ক সাকিব ও তাওহিদ হৃদয়ের ১০১ রানের জুটিতে। দুজনেই হাফসেঞ্চুরি করে যান। মাঝের ওভারগুলোতে সাকিব-হৃদয়কে যেমন থামাতে পারেননি শার্দুল-অক্ষর প্যাটেলরা, তেমনি লোয়ার অর্ডারেও চ্যালেঞ্জিং স্কোরে দলকে পৌঁছে দেন স্পিনার নাসুম আহমেদ (৪৪) ও শেখ মেহেদি হাসানরা (২৮)।

আগামী ৫ অক্টোবর ভারতে শুরু হবে ওয়ানডে বিশ্বকাপ। আইসিসির এই বড় টুর্নামেন্টের আগে বিশ্বকাপের স্বাগতিকদের হারিয়ে নিঃসন্দেহে উজ্জীবিত বাংলাদেশ।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...