ভারতে ভারী বর্ষণের জেরে সৃষ্ট ভূমিধসে কমপক্ষে পাঁচজন প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়া ভূমিধসের কারণে আরও অনেকে চাপা পড়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) মধ্যরাতে ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্রের একটি পাহাড়ি গ্রামে ভূমিধস ও প্রাণহানির ওই ঘটনা ঘটে।
এক প্রতিবেদনে রয়টার্স জানিয়েছে, অবিরাম বৃষ্টির পর পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্রের একটি পাহাড়ি গ্রামে ভূমিধসের কারণে অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন বলে বৃহস্পতিবার রাজ্যের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এছাড়া ভূমিধসের পর ধ্বংসস্তূপের নিচে অনেকে চাপা পড়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে মিডিয়া জানিয়েছে, মুম্বাই থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে ইরশালওয়াদির পাহাড়ি গ্রামে মাঝরাতে ভূমিধসের এই ঘটনা ঘটে।
মহারাষ্ট্র রাজ্যের উপ-মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফাডনভিস টুইটারে বলেছেন, ‘মোট ৪৮টি পরিবার সেখানে বাস করত। এর মধ্যে প্রায় ৭৫ জনকে সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত পাঁচজন মারা গেছেন।’
রয়টার্স বলছে, প্রাথমিকভাবে বলা হয়েছিল- প্রায় ১০০ জনের মতো মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছে এবং উদ্ধারকর্মীরা ভারী বৃষ্টির মধ্যে জীবিতদের খুঁজে বের করার জন্য কার্যত সংগ্রাম করছে। অন্যদিকে নিখোঁজ স্বজনদের খবর পেতে পাহাড়ের গোড়ায় অপেক্ষা করছিল আত্মীয়রা।
এক উদ্ধার কর্মকর্তা এবিপি মাঝা চ্যানেলকে বলেছেন, ‘এখানে সমস্যা হলো- কিছু জায়গায় ধ্বংসস্তুপ প্রায় ২০ থেকে ৩০ ফুট গভীর এবং এটি হাতে করে অপসারণ করতে হবে।’
ঘটনাস্থলে থাকা মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে সাংবাদিকদের বলেন, আটকে পড়া মানুষের সংখ্যার সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া কঠিন।
পৃথক প্রতিবেদনে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, মহারাষ্ট্রের রায়গড় জেলায় গভীর রাতে ভূমিধসের পর ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছে ৩০ জনেরও বেশি। ঘটনাটি খালাপুরের কাছে ঘটেছে এবং সেখানে একটি আদিবাসী গ্রামের বেশ কয়েকটি বাড়ি রয়েছে। এখনও পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে এবং ৭৫ জনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
মূলত ভূমিধসের কারণে একটি পাহাড় থেকে প্রচুর পরিমাণে মাটি এবং পাথর পড়ে প্রায় ৩০টি বাড়ি চাপা পড়ে। ইরশালওয়াদি এলাকাটি – যেখানে ঘটনাটি ঘটেছে – পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত একটি প্রত্যন্ত গ্রাম।
এনডিটিভি বলছে, ভূমিধসের শিকার এই গ্রামে যাওয়ার কোনো পরিষ্কার পথ নেই এবং সেখানে যাওয়ার একমাত্র উপায় হলো ১ কিলোমিটার রাস্তা পাহাড়ে উঠে সেখানে পৌঁছানো।
রয়টার্স বলছে, অবিরাম বর্ষণে ভারতের সবচেয়ে ধনী রাজ্য মহারাষ্ট্রজুড়ে স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বন্যায় রাস্তা এবং ট্রেন চলাচলও ব্যাহত হয়েছে। বৃহস্পতিবারও অর্থনৈতিক রাজধানী মুম্বাইয়ের স্কুল-কলেজ বন্ধ রয়েছে। এছাড়া বৃষ্টির কারণে বুধবার এই শহরে কিছু ট্রেন পরিষেবা স্থগিত করা হয়েছিল।
আবহাওয়া বিভাগ অনুসারে, রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলায় বুধবার ১০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে এবং পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আরও ভারী বর্ষণ হতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।