ভারতের সাহায্যে বাংলাদেশে একটি নতুন নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি মনে করেন, বাংলাদেশে ‘গণতান্ত্রিক পরিবেশ’ নেই এবং এই সংকটময় পরিস্থিতিতে ভারতসহ সার্কভুক্ত দেশগুলোকে বাংলাদেশের দিকে নজর দিতে হবে। তবে এখানেই তীব্র আপত্তি জানিয়েছেন ভারতের বর্ষীয়ান সাংবাদিক, বিশ্লেষক মহল।
তারা জানান, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা কেবল তাদের দেশের মানুষকে নিয়েই সমাধান করতে হবে। আর এই সমাধানে বিদেশি রাষ্ট্রের ভূমিকা চাওয়া মানেই নিজের দেশকে অসম্মান করা।
তাদের মতে, ভারতের কোনো সুশীল সমাজ, কোনো নাগরিক এমনকি বিরোধীদলের নেতাও বিদেশে গিয়ে নিজ দেশের বিষয়ে নেতিবাচক প্রচার করেন না।
এ বিষয়ে ভারতের জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি গৌতম লাহিড়ী বলেন, কোনো রাষ্ট্রে যদি কোনো সমস্যা হয়ে থাকে, তাহলে সেই সমস্যা সমাধানের জন্য দায়িত্বশীল নাগরিক বা সুশীল সমাজ আছে; তারা নিজ দেশের সাধারণ মানুষদের মধ্যে অভাব-অভিযোগ নিয়ে আন্দোলন করবেন। শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আন্দোলন করবেন-এগুলো সম্পূর্ণ তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। যদি করতে নাও পারেন, তাহলে চেষ্টা করতে পারেন, অপেক্ষা করতে পারেন। কিন্তু বিদেশের ভূমিকায় কোনো সরকারকে, নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করার দাবি জানানো অযৌক্তিক ও অসাংবিধানিক।
দেশটির জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতির মতের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন আনন্দবাজার পত্রিকার সাবেক বর্ষীয়ান সাংবাদিক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুখরঞ্জন দাশগুপ্তও। তিনি বলেন, একটি মহল নির্বাচিত সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্র করছে এবং তারাই বহির্বিশ্বে নিজেদের দেশকে নিয়ে আজেবাজে বলে বেড়াচ্ছেন।
সুখরঞ্জন দাশগুপ্ত আরও বলেন, অধ্যাপক ড. ইউনূস যখন নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন, তার জন্য নানা প্রস্তুতি ছিল। তিনি এখন বিদেশে, আবার তারেক রহমানও বিদেশে। তারা বিদেশ থেকে একটার পর একটা বিবৃতি দিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।
ভারতের জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতির মতে, ইউনূস সাহেবের সঙ্গে আমার দু’একবার দেখা হয়েছে। আমার অনুরোধ, আপনি এই বয়সে এসে তারেকের কথা মতো চলবেন না। বাংলাদেশকে ধ্বংস করবেন না।
নোবেলজয়ী ড. ইউনূসের বয়স হয়েছে উল্লেখ করে তাকে দেশ গড়ার জন্য ইতিবাচক ভূমিকা নেয়ারও আহ্বান জানান সুখরঞ্জন দাশগুপ্ত।
সম্প্রতি প্যারিসে ভারতের প্রভাবশালী ইংরেজি দৈনিক দ্য হিন্দু’র সঙ্গে একান্ত আলোচনা করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তুলে ধরেন ভারতের সহযোগিতায় বাংলাদেশে নতুন করে নির্বাচন করার অভিপ্রায়।
এখানেই শেষ নয়, বাংলাদেশে নূন্যতম গণতান্ত্রিক চর্চা নেই বলেও সাক্ষাৎকারে দাবি করেন তিনি। ড. ইউনূসের সাক্ষাৎকারটি এমন সময় দেয়া, যখন বাংলাদেশে একটি সংকটময় পরিস্থিতি চলছে। ঠিক সেই সময়ে এমন মন্তব্যকে রাজনৈতিক দূরভিসন্ধি হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। সূত্র সময়টিভি।