বাংলাদেশে ব্যাংক একীভূতকরণের ক্ষেত্রে আরও সতর্ক থাকা দরকার। সম্পদের মান ও সুনির্দিষ্ট নীতিমালারভিত্তিতে ব্যাংক একীভূত করা উচিত বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মুদ্রানীতির রাশ আরও টেনে ধরা দরকার বলেও অভিমত সংস্থাটির।
মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) নগরীর বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট’ প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক সংস্থাটির জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ রনজিত ঘোষ, বার্নাড হ্যাভেন উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুসারে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ; ২০২১-২২ অর্থবছরে ৭ দশমিক ১ শতাংশ। অর্থাৎ তাদের হিসাবে ২০২১-২২ অর্থবছরের পর টানা দুই অর্থবছর দেশের প্রবৃদ্ধির হার কমে ৬ শতাংশের নিচে নামতে যাচ্ছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশে বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি আরও মন্থর হয়েছে বলে বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বোঝা যাচ্ছে, বিনিয়োগে মন্দাবস্থা তৈরি হয়েছে। ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের উচ্চ হারসহ দুর্বল নিয়ন্ত্রণের কারণে এ খাত চাপের মুখে আছে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
বিশ্বব্যাংক বলেছে, কোভিড-১৯ মহামারি থেকে প্রত্যাবর্তনে বাংলাদেশের অর্থনীতির শক্তিমত্তার পরিচয় দিয়েছে। কিন্তু উচ্চ মূল্যস্ফীতি, লেনদেন ভারসাম্যে ধারাবাহিক ঘাটতি, আর্থিক খাতের দুর্বলতা ও বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে মহামারি পরবর্তী পুনরুদ্ধার ব্যাহত হচ্ছে।
বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে এই ষাণ্মাসিক প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক জানায়, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতির চাপ কমাতে আর্থিক সংস্কার ও মুদ্রার একক বিনিময় হার ব্যবস্থা প্রবর্তন করা জরুরি। মুদ্রার বিনিময় হারে অধিকতর নমনীয়তা বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে ভারসাম্য পুনরুদ্ধারে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। অর্থনীতির বৈচিত্র্য এবং অর্থনীতির মধ্যম ও দীর্ঘ মেয়াদে স্বাভাবিক অবস্থায় প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা বৃদ্ধিতে কাঠামোগত সংস্কার গুরুত্বপূর্ণ।
বিশ্বব্যাংক জানায়, ধারাবাহিক উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে, সেই সঙ্গে তারল্যের রাশ টেনে ধরা, ক্রমবর্ধমান সুদের হার, আমদানি বিধিনিষেধ ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধিজনিত কারণে, কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশে বিনিয়োগ ব্যাহত হয়েছে।