নভেম্বর ২৪, ২০২৪

আমদানির ক্ষেত্রে ওভার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা পাচার হচ্ছে এবং আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের কারণে সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ফলে দেশ থেকে প্রচুর অর্থ পাচার হচ্ছে। তাই অর্থপাচার রোধে ব্যাংকগুলোর সিইও ও এমডিদের সতর্ক করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য জানায়।

জানা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংক ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশন (আইএফসি) ও ক্রেডিট গ্যারান্টি ডিপার্টমেন্টের যৌথ উদ্যোগে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর, ব্যাংকগুলোর এমডি, সিইও, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন বিভাগের পরিচালক ও ক্রেডিট গ্যারান্টি ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় গভর্নর বলেন, ব্যাংকগুলো পণ্যের প্রকৃত বাজারমূল্য যাচাই করতে ব্যর্থ হয়েছে। এতে আমদানিতে ওভার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা পাচার হচ্ছে। অপরদিকে আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের কারণে রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। একইসঙ্গে অবৈধ হুন্ডি ব্যবসার ফলে দেশে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হচ্ছে না। এলসি খোলার ক্ষেত্রে যেন কোনো ধরনের ওভার ইনভয়েসিং এবং আন্ডার ইনভয়েসিং না হয় সে বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের জন্য ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের নির্দেশনা দেন। এছাড়া শিশুখাদ্য, গম, চিনি, ডাল, ভোজ্য তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীর আমদানি যেন কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত না হয় তা নিশ্চিত করতেও নির্দেশনা প্রদান করেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি হলো সিএমএসএমই খাত। দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও উৎপাদন বৃদ্ধিতে সিএমএসএমই খাতের ভূমিকা অনস্বীকার্য। প্রয়োজনীয় সহায়ক জামানত না থাকায় অনেক ক্ষেত্রেই সিএমএসএমই খাতের উদ্যোক্তারা ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ পান না। এ প্রেক্ষাপটে দেশের সিএমএসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের অপেক্ষাকৃত স্বল্প সুদে ও সহজ শর্তে ঋণ সুবিধা দিতে ক্রেডিট গ্যারান্টি সুবিধা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়।

ক্রেডিট গ্যারান্টি সুবিধার মাধ্যমে প্রান্তিক পর্যায়ে কৃষি এবং এসএমই খাতে ঋণ প্রবাহ আরও বাড়াতে ব্যাংকগুলোর সিইওদের প্রতি তিনি আহ্বান জানান। এছাড়া সিএমএসএমই খাতে ২৫ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন স্কিম সফলভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অধিকতর সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে নির্দেশ দেন।

গভর্নর বলেন, দেশের একটি মহল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে দেশের কোনো কোনো ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাবে মর্মে অপপ্রচার চালাচ্ছে। ফলে ক্ষুদ্র আমানতদারীদের আতঙ্কিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অপপ্রচারের কারণে ব্যাংকিং খাতে তারল্য সংকট সৃষ্টি হওয়ার ঝুঁকি সৃষ্টি হতে পারে। এ ধরনের মিথ্যাচার বন্ধ করতে ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে ব্যাংকগুলোকে নিজেদের অবস্থা সম্পর্কে সঠিক তথ্য তুলে ধরতে আহ্বান জানান তিনি।

সভায় ডেপুটি গভর্নর আবু ফরাহ মো. নাছের বলেন, সিএমএসএমই খাতে প্রয়োজনীয় ঋণপ্রবাহ নিশ্চিত করে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও উৎপাদন বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি কমাতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য স্বল্প সুদে পুনঃ অর্থায়নে তহবিল গঠন করা হয়েছে। পুনঃ অর্থায়ন স্কিমগুলোর সফল বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ক্রেডিট গ্যারান্টি সুবিধাও প্রদান করা হচ্ছে। তবে ব্যাংকগুলোর সহযোগিতা ছাড়া এসব উদ্যোগের সফল বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। সিএমএসএমই খাতে ঋণ বিতরণের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করার বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে ব্যাংক

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...