নভেম্বর ২৭, ২০২৪

বাজারে প্রতিটি নিত্যপণ্য বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামে। সপ্তাহের ব্যবধানে আবারও বেড়েছে মুরগি ও পেঁয়াজের দাম। ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা। আর সব ধরনের পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৫ থেকে ৬ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, টানা বৃষ্টিতে সরবরাহ কমার ফলে দাম বেড়েছে।

এদিকে বাজারে অন্যান্য পণ্যের দামে বড় কোনো পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়নি। চাল, ডাল, ডিম, আলু ও সয়াবিনের মতো নিত্যপণ্যের দাম উচ্চমূল্যে স্থির হয়ে আছে।

আজ শুক্রবার (৬ অক্টোবর) রাজধনীর বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির প্রতি কেজির দাম ছিল ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা। এখন তা বেড়ে হয়েছে ১৯৫ থেকে ২০৫ টাকা। সোনালি মুরগির দাম ছিল প্রতি কেজি ৩১০ থেকে ৩২০ টাকা। বাজারে এই মুরগি শুক্রবার বিক্রি হচ্ছে ৩৩০ থেকে ৩৩৫ টাকায়।

এদিকে দেশি ও আমদানি করা পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৫ থেকে ৬ টাকা বেড়েছে। ফলে দেশি পেঁয়াজের দাম দাঁড়িয়েছে প্রতি কেজি ৯০ থেকে ৯৫ টাকায়। আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়। দুই দিন আগেও আমদানি করা পেঁয়াজ ৬৫ থেকে ৭০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। অন্যদিকে সরকার গত ১৪ সেপ্টেম্বর যে তিনটি পণ্যের দাম বেঁধে দিয়েছিল, তার একটি দেশি পেঁয়াজ। তবে দাম বেঁধে দেওয়ার পরও সরকার নির্ধারিত ৬৪ থেকে ৬৫ টাকায় দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে না।

সরকারি সংস্থার বাজারদরের হিসাবেও দেখা গেছে, বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়তির দিকে। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে, গত এক সপ্তাহে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজের দাম ৩ শতাংশ বেড়ে ৮০ থেকে ৯০ টাকা ও আমদানি করা পেঁয়াজের দাম ৪ শতাংশের মতো বেড়ে ৬৫ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

দেশি পেঁয়াজের পাশাপাশি ডিম ও আলুর দাম বেঁধে দিয়েছিল সরকার। ডিমের ডজন ১৪৪ টাকায় নির্ধারণ করা হলেও বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। আলুর খুচরা দাম প্রতি কেজি ৩৫ থেকে ৩৬ টাকায় বেঁধে দেওয়া হলেও বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়। অন্যদিকে কোনো (মোটা, মাঝারি ও চিকন) চালের দাম কমেনি। ডালের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। বোতলজাত সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে প্রতি লিটার ১৬৯ টাকায়।

মাংসের দাম উঁচুতেই রয়ে গেছে। প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা আর খাসির মাংসের দাম পড়ছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা। চাষের পাঙাশ ও তেলাপিয়া আকারভেদে ২০০ থেকে ২৫০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। রুই মাছের দাম পড়ছে প্রতি কেজি ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা। ইলিশের মৌসুম শেষের দিকেও ১ কেজি আকারের ইলিশের দাম পড়ছে ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা। পুরো মৌসুমজুড়ে ইলিশ এবার ক্রেতাদের নাগালের বাইরেই ছিল।

সবজির বাজারেও স্বস্তি নেই। বেগুন কিনতে হচ্ছে প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। ঝিঙা, ধুন্দুল ও চিচিঙ্গার মতো সবজির কেজি ৬০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না। সস্তার সবজি বলতে শুধু পেঁপে, কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা। পটোল ও ঢ্যাঁড়সের দামও প্রতি কেজি ৫০ টাকার ওপরে। কাঁচামরিচের কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে টানা বৃষ্টির কারণে বাজারে মুরগির সরবরাহ কিছুটা কমেছে। আর সে কারণেই এই মূল্যবৃদ্ধি। বৃষ্টি হলে কাঁচামালের দাম একটু বাড়ে। দু-এক দিন গেলে বোঝা যাবে বাজার কোনো দিকে যাচ্ছে।

বাজার করতে আসা জমির উদ্দন বলেন, আমরা মধ্যবিত্তরা বিপদে আছি, দিন দিন সবজির দাম বাড়ছেই। আগে আমরা মূলা খেতাম না, সেই মূলা নাকি ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আমাদের গ্রামের বাড়িতে কচুরমুখি এমনিতে পাওয়া যায়, সেই কচুরমুখি ১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়। সবজির বাজার গরিবের হাতের নাগালে আর নেই। প্রতিটি নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে কিন্তু আমাদের বেতন বাড়ছে না।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...