টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের পরের ম্যাচেই হেরে গেলো ভারত। জিম্বাবুয়ের মতো তুলনামূলক দুর্বল প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ১২০ বলে ১১৬ রানও করতে পারেনি শুভমান গিলের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় ক্রিকেট দল।
গত মাসের ২৯ জুন দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে ১৭ বছর পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতে রোহিত শর্মার নেতৃত্বাধীন ভারতীয় ক্রিকেট দল। রোহিত শর্মা-বিরাট কোহলিরা ভারতে বিশ্বকাপ ট্রফি নিয়ে উদযাপনে ব্যস্ত।
বিশ্বকাপের এক সপ্তাহ পর দ্বিপাক্ষিক সিরিজ থাকায়, দ্বিতীয় সারির একটি দল জিম্বাবুয়ে সফরে পাঠায় ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড (বিসিসিআই)।
আজ শনিবার জিম্বাবুয়ের হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে টস জিতে জিম্বাবুয়েকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠান ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক শুভমান গিল।
পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম খেলায় আগে ব্যাট করতে নেমে রবি বিষ্ণুর লেগ স্পিনে বিভ্রান্ত হয়ে ৯ উইকেট হারিয়ে ১১৫ রানের বেশি করতে পারেনি স্বাগতিক জিম্বাবুয়ে। ভারতীয় লেগ স্পিনার ৪ ওভারে মাত্র ১২ রানে ৪ উইকেট শিকার করেন।
১২০ বলে ১১৬ রানের সহজ টার্গেট তাড়া করতে নেমে টেন্ডাই চাতারা ও সিকান্দার রাজার তোপের মুখে পড়ে মাত্র ২২ রানে প্রথম সারির ৪ ব্যাটসম্যানের উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে কার্যত ছিটকে যায় ভারত।
দলের চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে হাল ধরতে পারেননি ওপেনার অভিষেক শর্মা, ঋতুরাজ গায়কোয়াড়, রায়ান পরাগ, রিংকু সিং, দ্রুব জুরেল, শুভমান গিলরা।
ব্যাটসম্যানদের এমন অসহায় আত্মসমর্পণে অসহায় ছিলেন লেগ স্পিনার রবি বিষ্ণু, পেস বোলার আভেশ খান ও মুকেশ কুমাররা। সময়ের ব্যবধানে উইকেট পতনের কারণে ১৯.৫ ওভারে ১০২ রানে অলআউট হয় ভারত।
জিম্বাবুয়ের ঐতিহাসিক জয়ে ৩.৫ ওভারে মাত্র ১৬ রানে ৩ উইকেট শিকার করেন টেন্ডাই চাতারা। ৪ ওভারে ২৫ রানে ৩ উইকেট নেন সিকান্দরা রাজা।
শনিবার হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে টস জিতে জিম্বাবুয়েকে প্রথমে ব্যাটিংয়ে পাঠায় শুভমান গিলের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় ক্রিকেট দল।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমেই বিপদে পড়ে যায় জিম্বাবুয়ে। ১.১ ওভারে দলীয় ৬ রানে ফেরেন ওপেনার ইনোসেন্ট কায়া। এরপর ৩৬ রানের জুটি গড়ে ফেরেন ব্রায়েন ব্যানেট।
এরপর নিয়মিত বিরতিতে আসা-যাওয়ার মিছিলে অংশ নেন ওয়েসলি মাধেভেরে, অধিনায়ক সিকান্দার রাজা, জনাথন ক্যাম্পবেল, ডিয়ন মায়ার্স, ওয়েলিংটন মাসাকাদজা ও লুক জঙ্গিরা।
ব্যাটিং বিপর্যয়ের ম্যাচে ২২ বলে দুই বাউন্ডারিত ২৩ রান করেন ডিয়ন মায়ার্স। ১৫ বল ৫টি বাউন্ডারির সাহায্যে ২২ রান করে ফেরেন ব্রাইন বেনেট। ২২ বলে তিন বাউন্ডারিতে ২১ রান করে ফেরেন ওপেনার ওয়েসলি মাধেভেরে। ১৫.৩ ওভারে দলীয় ৯০ রানে নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে ফেরেন ব্লেসিং মুজারাবানি।
দলের ব্যাটিং বিপর্যয়ে ইনিংসের শেষ বল পর্যন্ত খেলে যান উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান যাওয়া ক্লাইভ মদন্ডে। তার ২৫ বলের অপরাজিত ২৯ রানে ভর করে শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেটে ১১৫ রান তুলতে সমর্থ হয় জিম্বাবুয়ে। ভারতের হয়ে রবি বিষ্ণু ৪ ওভারে ২ মেডেনসহ মাত্র ১৩ রানে ৪ উইকেট শিকার করেন রবি বিষ্ণু।
টার্গেট তাড়া করতে নেমে ইনিংসের প্রথম ওভারেই ওপেনার অভিষেক শর্মার উইকেট হারায় ভারত। ইনিংসের প্রথম ৫ ওভারে মাত্র ২২ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে একঘরে হয়ে যায় টিম ইন্ডিয়ার।
উইকেটের এক প্রান্তে আসা-যাওয়ার মিছিলে অংশ নেন অভিষেক শর্মা, ঋতুরাজ গায়কোয়াড়, রায়ান পরাগ ও রিংকু সিংরা ওদ্রুব জুরেলরা। ব্যাটসম্যানদের এমন অসহায় আত্মসমর্পণে উইকেটে অন্য প্রান্ত আগলে রাখার চেষ্টা করেন অধিনায়ক শুভমান গিল।
তিনি ওপেনিংয়ে ব্যাটিংয়ে নেমে ১০.২ ওভারে দলীয় ৪৭ রানে ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে ফেরেন। তার বিদায়ের মধ্য দিয়ে স্বীকৃত সব ব্যাটসম্যানের উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে কার্যত ছিটকে যায় ভারত।
দলের নিশ্চিত পরাজয় জেনেও দারুণ ব্যাটিং করেছেন পেস বোলার ওয়াশিংটন সুন্দর। তিনি লেজের ব্যাটসম্যানদের নিয়ে পরাজয় এড়ানোর যথেষ্ট চেষ্টা করেন। কিন্তু তাকে সঙ্গ দিতে পারেননি লেগ স্পিনার রবি বিষ্ণু ও পেসার মুকেশ কুমার।
আবেশ খানও যথেষ্ট চেষ্টা করেন। তিনি ১২ বলে ১৬ রান করে ফেরেন। শেষ ওভারে জয়ের জন্য ভারতের প্রয়োজন ছিল ১৬ রান। ওয়াশিংটন বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে ইনিংস শেষ হওয়ার এক আগ আগে আউট হন। তার বিদায়ের মধ্য দিয়ে ১৯.৫ ওভারে ১০২ রানে অলআউট হয় ভারত।
ওয়াশিংটন ৩৪ বলে এক চার আর এক ছক্কায় দলের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৭ রান করেন। ২৯ বলে ৫টি বাউন্ডারির সাহায্যে ৩২ রান করেন অধিনায়ক শুভমান গিল। ১২ বলে ১৬ রান করে আভেশ খান। এছাড়া অন্য কোনো ব্যাটসম্যান দুই অঙ্কের রান করতে পারেননি। যে কারণে ১৩ রানে হেরে যায় ভারত।