নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স (ডিজিএফআই) ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব)। গ্রেপ্তাররা হলেন- আনসার আল ইসলামের ঢাকা অঞ্চলের দাওয়াতি শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী ওরফে আবু মাসরুর (৫০), শেখ আশিকুর রহমান ওরফে আবু আফিফা (৪৯), সাদী মো. জুলকার নাইন (৩৫), মো. কামরুল হাসান সাব্বির (৪০), মো. মাসুম রানা ওরফে মাসুম বিল্লাহ (২৬), সাঈদ মো. রিজভী (৩৫)।
আজ মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন সাংবাদিকদের এ সব তথ্য জানান।
পর র্যাব জানিয়েছে তথাকথিত হিযরতের নামে নতুন সদস্য সংগ্রহ, প্রশিক্ষণ, বিদ্বেষমূলক ভিডিও কনটেন্ট তৈরির প্রশিক্ষণসহ দেশ-বিদেশ থেকে চাঁদা সংগ্রহ করত তারা।
আল মঈন বলেন, সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাতে র্যাব-১ ও ডিজিএফআই এর যৌথ অভিযানে রাজধানীর উত্তরা, বনানী, বনশ্রী ও যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। বিদেশ থেকে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়েছেন এমন জনও আছে তাদের মধ্য।
তিনি আরও বলেন, তথাকথিত হিযরতের নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালিয়ে উগ্রবাদে ভেড়ানোর কাজ করতেন তারা। তরুণদের মগজ ধোলাই, প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে হিযরতের পাশাপাশি বিদ্বেষমূলক ভিডিও কনটেন্ট তৈরিরও প্রশিক্ষণও দেয়া হত ৷ খোদ রাজধানীর একটি ফ্ল্যাটেই চলত এ প্রশিক্ষণের কার্যক্রম৷ আফগানিস্তানে তালেবানদের ক্ষমতা গ্রহণকে বিজয় হিসেবে তুলে ধরে জঙ্গিবাদে উৎসাহের মাধ্যমে সদস্য সংগ্রহ, দেশ-বিদেশে অবস্থানরত সমমনাদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করতেন তারা।
র্যাবের এ কর্মকর্তা জানান, গ্রেফতারকৃত মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী ওরফে আবু মাসরুর তার বয়স ৫০ বছর। সুইডেন ও ডেনমার্ক থেকে উচ্চতর ডিগ্রি নেন তিনি। ডেনমার্ক থেকেই উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে যোগ দেন তিনি। ২০২০ সালে দেশে ফিরে সদস্য সংগ্রহ, বিদ্বেষমূলক ভিডিও কনটেন্ট, মগজ ধোলাইসহ জঙ্গিবাদের কার্যক্রমের নেতৃত্ব দেয়া শুরু করেন তিনি। মূলত জঙ্গি সংগঠক আবু ইমরানের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল তার। শেখ আশিকুর রহমান ওরফে আবু আফিফা-তার বয়স ৪৯ বছর। তিনিও সুইডেন থেকে জঙ্গি সংগঠনে যোগ দেন। ২০১৮ সালে দেশে ফেরেন। তিনি ব্যবসায়ী এবং সংগঠনের বড় ডোনার৷ মুসলমানদের ওপর নির্যাতনের ভিডিও কনটেন্ট বানাতেন তিনি।
র্যাবের এ কর্মকর্তা মঈন আরও বলেন, মো. কামরুল হাসান সাব্বির-দেশে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইটিতে পড়াশোনা করেছেন। উগ্রবাদের দিকে ধাবিত করার কনটেন্ট তৈরি করত এবং ছড়িয়ে দিত। আইটিতে প্রশিক্ষণ দিয়ে বিদ্বেষমূলক প্রচারণা চালানোর জন্য জনবলও তৈরি করতেন তিনি। চিকিৎসক সাঈদ মো. রিজভী-বসুন্ধরায় নিজস্ব ফ্ল্যাটে নতুন সদস্যদের প্রশিক্ষণের সার্বিক ব্যবস্থা করতেন তিনি। সিলেবাসের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ শেষ করেই নতুন সদস্যদের রিক্রুট করা হত। বিভিন্ন দেশে হিযরতের পরিকল্পনা ছিল তাদের। সাঈদ দেশ ছেড়ে পালানোর সময় তাকে গ্রেফতার করা হয়। আরও দুজন হলেন- সাদী জুলকার নাইন (৩৫), মো. মাসুম রানা ওরফে মাসুম বিল্লাহ (২৬)।