আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ দেশের বাইরে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদের পরিবারের কোনো সম্পদ আছে কিনা তা জানতে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (২৯ মে) হাইকোর্টে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
তিনি বলেন, বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে সব অনুসন্ধান শেষ করেই মামলা করবে দুদক৷ এর আগে তাকে তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে৷
খুরশীদ আলম বলেন, বেনজীর এখনো আসামি নন। তিনি অপরাধী কিনা পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শেষে জানা যাবে। এক্ষেত্রে দুদক কোনো সময় নষ্ট করছে না। তবে বেনজীর দেশত্যাগ করতে চাইলে দুদকের নজরদারি থাকবে বলেও জানান তিনি।
ইতোমধ্যে আদালত দুই দফা বেনজীরের বিপুল পরিমাণ সম্পদ ও ব্যাংক হিসাব জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি বেনজীর ও তার পরিবারকে ৬ ও ৯ জুন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুদক।
বৃহস্পতিবার (২৩ মে) বেনজীর আহমেদের সম্পত্তির ৮৩টি দলিল জব্দের আদেশ দেন আদালত। সঙ্গে ৩৩টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ আসে। এর মধ্যেই এসব সম্পত্তি জব্দের প্রক্রিয়া শুরু করেছে দুদক।
এর দুদিন না যেতেই রোববার (২৬ মে) বেনজীর আহমেদ ও তার স্ত্রী-সন্তানদের ১১৯টি স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ আসে আদালত থেকে। এছাড়া রাজধানীর গুলশানের আলিশান ৪টি ফ্ল্যাট, শতভাগ এবং আংশিক মালিকানাধীন ২৩ কোম্পানির শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে।
বেনজীর আহমেদ ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আইজিপি ছিলেন। এর আগে তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার ও র্যাবের মহাপরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে র্যাব এবং র্যাবের সাবেক ও বর্তমান যে সাত কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তাদের মধ্যে বেনজীর আহমেদের নাম আছে। তখন তিনি আইজিপির দায়িত্বে ছিলেন।
সম্প্রতি দেশের একটি জাতীয় দৈনিকে দাবি করা হয়, বেনজীর আহমেদের বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের খোঁজ মিলেছে। এরপর থেকেই বেশ আলোচনায় পুলিশের সাবেক এই আইজি। জাতীয় ওই দৈনিকে ‘বেনজীরের ঘরে আলাদীনের চেরাগ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়, যেখানে তার নানা অর্থ-সম্পদের বিবরণ তুলে ধরা হয়।