নভেম্বর ২৪, ২০২৪

সৌরজগতের দূরতম ‘বামন গ্রহ’ প্লুটোর স্পষ্ট ছবি প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ন্যাশনাল অ্যারোনেটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (নাসা)।

রোববার (২৭ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইনস্টাগ্রামের নাসার ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে ছবিটি পোস্ট করা হয়।

ইনস্টাগ্রাম পোস্টে প্লুটোর ছবির সঙ্গে কিছু তথ্য দিয়েছে নাসা। বলা হয়েছে, মনুষ্যবিহীন মহাকাশযান নিউ হরাইজন সম্প্রতি প্লুটোর এই ছবিটি পাঠিয়েছে। সৌরমণ্ডল ও তার কাছাকাছি এলাকায় অবস্থানরত অন্যান্য গ্রহ-নক্ষত্রের ছবি তুলতে কয়েক বছর আগে এই নভযানটি মহাকাশে উৎক্ষেপণ করেছিল নাসা।

ছবিতে প্লুটোর বরাফাচ্ছাদিত পৃষ্ঠ স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে। নাসার ইনস্টাগ্রাম পোস্টে বলা হয়েছে, প্লুটোর কক্ষপথ থেকে ২২ হাজার ২৫ কিলোমিটার দূর থেকে ছবিটি তুলেছে নিউ হরাইজন।

প্লুটোর পুরো পৃষ্ঠ পুরু হিমবাহের স্তর দিয়ে আচ্ছাদিত। বিজ্ঞানীদের ধারণা, পানি, নাইট্রোজেন ও মিথেন জমে তৈরি হওয়া পুরু এই বরফের স্তরের নিচেই রয়েছে এই গ্রহের পাথুরে পৃষ্ঠ। হিমবাহের নিচে প্লুটোতে জমাট বরফের সমুদ্র রয়েছে বলেও মনে করেন অনেক মহাকাশ বিজ্ঞানী।

১৯৩০ সালে মার্কিন মহাকাশবিজ্ঞানী স্লাইড উইলিয়াম টমবাউ যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যের ফ্ল্যাগস্টাফ শহরের মানমন্দির (মহাকাশ পর্যবেক্ষণ স্থান) ল’ওয়েল অবজারভেটরিতে প্রথম গ্রহসদৃশ একটি বস্তু দেখতে পান এবং সেই বস্তুটিকে সৌরমণ্ডলের নবম গ্রহ বলে ঘোষণা করেন। রোমান পুরাণের পাতাল দেবতার নামে সেই গ্রহের নাম রাখেন ‘প্লুটো’।

দীর্ঘদিন পর্যন্ত প্লুটো সৌরমণ্ডলের নবম গ্রহ হিসেবে স্বীকৃত ছিল, কিন্তু এই নিয়ে সমস্যা শুরু হয় ১৯৯২ সালে, প্লুটোর কিছু স্যাটেলাইট ইমেজ মহাকাশবিজ্ঞানীদের হাতে আসার পর। সেসব ইমেজ বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা জানতে পারেন—‘গ্রহ’ হিসেবে পরিচিত মহাজাগতিক বস্তুগুলোর ন্যূনতম যতখানি আয়তন ও ভর থাকতে হয়, প্লুটোর আয়তন ও ভর তার তুলনায় অনেক কম।

এই তথ্য আসার পর প্লুটোর গ্রহের মর্যাদা থাকবে কিনা প্রশ্নে দ্বিধাবিভক্তি দেখা দেয় বিজ্ঞানীদের মধ্যে। পরে বিস্তর আলোচনা ও তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ শেষে ২০০৬ সালে আন্তর্জাতিকভাবে বাতিল হয় প্লুটোর গ্রহের মর্যাদা এবং এটি পরিচিতি পায় ‘বামন গ্রহ’ হিসেবে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...