সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৪

বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের ওপর পরিচালিত আন্তর্জাতিক এক জরিপে দেখা গেছে, জ্বালানি সরবরাহে ঘাটতি নিকট মেয়াদে তাদের জন্য সবচেয়ে বড় ঝুঁকি। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) বিশ্ব ঝুঁকি রিপোর্টে এ তথ্য রয়েছে। বুধবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভা থেকে প্রকাশিত এ রিপোর্টে বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান পাঁচটি ঝুঁকির উল্লেখ রয়েছে।

বাকি চারটি ঝুঁকি হলো– মূল্যস্ফীতি, অর্থনৈতিক নিম্নগতি, সম্পদ ও আয় বৈষম্য এবং সরকারের ঋণ ও নিম্ন-কর্মসংস্থান। একই স্কোর থাকায় ‘সরকারের ঋণ’ এর সঙ্গে ‘নিম্ন-কর্মসংস্থান’ পাঁচ নম্বর ঝুঁকি হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। গত বছরের রিপোর্টে জ্বালানি সরবরাহের ঘাটতি প্রথম পাঁচ ঝুঁকির মধ্যে ছিল না।

‘এক্সিকিউটিভ ওপিনিয়ন সার্ভে’ নামে জরিপের মাধ্যমে বাংলাদেশসহ শতাধিক দেশে আগামী দুই বছর মেয়াদে অর্থনীতির জন্য ঝুঁকি চিহ্নিত করা হয়েছে। এ ছাড়া সার্বিকভাবে বৈশ্বিক ঝুঁকি পরিমাপের জন্য প্রায় ১ হাজার ৫০০ বিশেষজ্ঞের মতামত নেওয়া হয়েছে। বিশ্ব ঝুঁকি রিপোর্ট ২০২৪-এ আগামী দুই বছরের জন্য ‘গুজব এবং অপতথ্য’ এক নম্বর ঝুঁকি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। গুজব ও অপতথ্য প্রসঙ্গে পর্যালোচনায় কয়েকটি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের নাম প্রসঙ্গক্রমে এসেছে। বলা হয়েছে, ভারত, পাকিস্তান, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, মেক্সিকো, ইন্দোনেশিয়াসহ কয়েকটি দেশে দুই বছরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। গুজব এবং অপতথ্যের বিস্তার নবনির্বাচিত সরকারের বৈধতাকে সংকটে ফেলে দিতে পারে। দীর্ঘ মেয়াদে বিশ্বের এক নম্বর ঝুঁকি ‘প্রতিকূল আবহাওয়া’।

গত বছরের ৪ সেপ্টেম্বর থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত ‘বিশ্ব ঝুঁকি উপলব্ধি’ নামে জরিপ পরিচালিত করে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম। এ ছাড়া অংশীদার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ১১৩টি দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নির্বাহীদের ওপর ‘নির্বাহী মতামত জরিপ’ পরিচালিত হয়। বাংলাদেশে এ জরিপে অংশীদার প্রতিষ্ঠান ছিল গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।

বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের গত বছরের রিপোর্টে ঝুঁকির বিবেচনায় মূল্যস্ফীতি ছিল এক নম্বরে। এবার দ্বিতীয় ঝুঁকি মূল্যস্ফীতি। এর ব্যাখ্যায় গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, মূল্যস্ফীতি যে আগের চেয়ে কমে যাবে সেই বিবেচনায় নয়, ব্যবসায়ীদের কাছে জ্বালানি সরবরাহের ঘাটতি নিয়ে উদ্বেগ মূল্যস্ফীতির চেয়ে বেশি। উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়েও ব্যবসায়ীদের যথেষ্ট উদ্বেগ রয়েছে। কেননা, মূল্যস্ফীতি বেশি থাকলে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যায়। এর ফলে ব্যবসায়ীদের উৎপাদন ও বিক্রির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

গত বছরের রিপোর্টে বাংলাদেশের প্রধান পাঁচটি ঝুঁকি ছিল– মূল্যস্ফীতি, ঋণ সংকট, পণ্যমূল্যের গুরুতর অভিঘাত, মানবসৃষ্ট পরিবেশ বিপর্যয় এবং সম্পদের ওপর ভূরাজনৈতিক প্রতিযোগিতা। অন্যদিকে, গত বছর স্বল্প মেয়াদে বিশ্বের প্রধান ঝুঁকি ছিল জীবনযাত্রার ব্যয়ের সংকট। আর দীর্ঘ মেয়াদে ‘জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ব্যর্থতা’ ছিল মূল

ঝুঁকি।

 

 

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *