বিশ্ববাজারে সোনার দাম প্রথমবারের মতো প্রতি আউন্স ২ হাজার ৬০০ ডলার ছাড়িয়েছে। কিছুদিন ধরেই আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম বাড়ছিল। তারই ধারাবাহিকতায় গতকাল শুক্রবার এই ধাতুর দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে ওঠে। এ পর্যায়ে সোনার দাম বাড়ার মূল কারণ যুক্তরাষ্ট্রে সুদের হার হ্রাস ও মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা।
রয়টার্সের এক সংবাদে এমন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
সংবাদে বলা হয়েছে, শুক্রবার স্পট মার্কেটে প্রতি আউন্স সোনা ২ হাজার ৬২০ ডলার ৬৩ সেন্টে উঠে যায়। বৃদ্ধির হার ছিল ১ দশমিক ৩ শতাংশ। ওই দিন মার্কিন ফিউচার বাজারে সোনার দাম ১ দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে ২ হাজার ৪৬৪ ডলার ২০ সেন্টে পৌঁছায়।
সোনার দাম এতটা বেড়ে যাওয়ার পেছনে বড় ভূমিকা ছিল বুধবার মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের নীতি সুদহার বড় ব্যবধানে কমানোর বিষয়টি। ওই দিন দশমিক ৫০ শতাংশ পয়েন্ট সুদ কমানো হয়। ফলে সোনা কেনার দিকে বিনিয়োগকারীদের ঝোঁক আরও বাড়ে।
বিশ্ববাজারে ২০২৪ সালে সোনার দাম এখন পর্যন্ত ২৭ শতাংশ বেড়েছে। ২০১০ সালের পর সোনার দাম কখনোই এতটা বাড়েনি। মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘ সময় ধরে সংঘাত চলছে। সংঘাত চলছে বিশ্বের আরও অনেক দেশে। ফলে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, তা থেকে বিনিয়োগ নিরাপদ রাখতে অনেকেই সোনার দিকে ঝুঁকছেন।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, সোনার মূল্যবৃদ্ধিতে অবশ্য সাময়িক বিরতি আসতে পারে।
টি ডি সিকিউরিটিজের পণ্যবিষয়ক কৌশলবিদ ড্যানিয়েল ঘালি বলেন, ফেড বড় কাটছাঁটের মাধ্যমে সুদের হার কমানোর যে প্রক্রিয়া শুরু করেছে, পরিষ্কারভাবেই তার সঙ্গে সোনা কেনার সম্পর্ক আছে।
সোনার দাম এতটা বেড়ে যাওয়ার কারণে অবশ্য চীন ও ভারতের খুচরা বাজারে বিক্রি কমে গেছে। কমার্জ ব্যাংকের এক নোটে বলা হয়েছে, এই দাম বাড়া আজীবন চলতে পারে না। এই প্রতিষ্ঠানের পূর্বাভাস হলো, ফেডের আগামী দুই বৈঠকে সুদের হার ২৫ ভিত্তি পয়েন্ট করে কমানো হতে পারে।
তবে অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, সোনার দাম আগামী দিনে আরও বাড়তে পারে।
ফরেক্স ডটকমের বিশ্লেষক ফাওয়াদ রাজাকজাদা একটি নোটে বলেছেন, ভূরাজনৈতিক ঝুঁকি, যেমন গাজা, ইউক্রেন ও অন্যান্য জায়গায় চলমান সংঘাত সোনায় নিরাপদ বিনিয়োগ উৎসাহিত করবে।