ডিসেম্বর ১৩, ২০২৪
বিডি স্টক ডিসকাশনের মডারেটর মো. আবু রমিমের বিরুদ্ধে শেরেবাংলা নগর থানায় এজাহার দায়ের করেছে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা নষ্ট ও বিনিয়োগকারীদের প্রতারিত করার উদ্দেশ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার চালানোর দায়ে এ পদক্ষেপ নিয়েছে বিএসইসি।
মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) বিএসইসির সহকারী পরিচালক মো. মাসুম বিল্লাহ এই লিখিত এজাহার দায়ের করেছেন।
এ বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, অনেক দিন ধরেই একটি চক্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করে বিভিন্ন অপপ্রচার চালিয়ে আসছে। এদেরকে আইনের আওতায় আনতে কমিশনও বেশ কিছুদিন ধরে তৎপর। তারই ধারাবাহিকতায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিডি স্টক ডিসকাশনের মাধ্যমে অপপ্রচার ছড়ানো মো. আবু রমিমের বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করা হয়েছে।
এজাহারে বলা হয়েছে, বিডি স্টক ডিসকাশনের মডারেটর মো. আবু রমিম শেয়ারবাজারের স্থিতিশীলতা নষ্ট করার উদ্দেশ্যে/বিনিয়োগকারীদের প্রতারিত করার উদ্দেশ্যে মিথ্যা তথ্য পরিবেশন করেন। তার বাবা আবু তাহের মিয়া। তিনি ফেনীর দাগনভূঞার বাসিন্দা। বর্তমানে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশের চকবাজারে বসবাস করেন।
আবু রমিম তার পরিচালিত বিডি স্টক ডিসকাশনের ফেসবুক পেজে জানান, ‘একটি অনির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, গতদিন পাকিস্তান হারাতে আজ বাজার কমেছে। এর পেছনে বিএনপি-জামায়াত চক্রের হাত থাকতে পারে। শিবলী সাহেব, আপনার আইপিও প্রসব বন্ধ করেন। এটিবি ফেটেবি বাদ দিয়া মূল বাজারের দিকে মনোযোগ দেন।’
এছাড়া তিনি পোস্টের মাধ্যমে জানান, ‘আশা করা যায় আগামীকাল চেক সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনের স্থগিতাদেশ আসবে, যতক্ষণ না আসবে ততক্ষণ মাইর চলবে। যদি ট্রেড আওয়ারে আসে তবে মার্কেট ইউটার্ন করবে এবং কোনো কারণে ট্রেড আওয়ারে না আসলে ট্রেড শেষে মাস্ট। যাদের ক্রয় ক্ষমতা আছে আগামীকাল তাদের জন্য অভাবিত কম দামে কেনার সুযোগ থাকবে। নেটিংয়ের রিস্ক না নেওয়াটাই ভালো, কোনো কারণে স্থগিতাদেশ ট্রেড আওয়ারে না আসলে ধরা খেয়ে যাবেন। ইনশাআল্লাহ, আশা করি ভালো কিছু হবে।’
ওই ফেসবুকে পেজে আরও উল্লেখ করা হয়, ইএইচএল (ইস্টার্ন হাউজিং), বিডিকম অনলাইন ও আরও কিছু শেয়ার নিয়ে গ্যাম্বলিং এর দরুন হিরুকে সারে চার কোটি টাকা জরিমানার নিউজ আগামীকাল কিছু পত্রিকায় প্রকাশিত হলেও এটা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। বাজার ভালো করার জন্য সবাইকেই কমবেশি ছাড় দেওয়া হতে পারে।’
আবু রমিম এ জাতীয় মিথ্যা, কাল্পনিক ও বিভ্রান্তিকর পোস্ট করেন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে অভিযুক্ত আবু রমিম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ারবাজার সম্পর্কিত মিথ্যা তথ্য প্রচার করে সাধারণ জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছেন। তিনি বেআইনিভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে উল্লিখিত কার্যকলাপের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের প্ররোচনা ও প্রলুব্ধ করে আসছেন বলেও দাবি করা হয়।
এ ধরনের কার্যকলাপের মাধ্যমে অভিযুক্ত ব্যক্তি পুঁজিবাজারকে প্রভাবিত করার মাধ্যমে বেআইনি কার্যকলাপ সাধন করছেন। যা শেয়ারবাজার তথা বিনিয়োগকারী এবং সার্বিকভাবে রাষ্ট্রের স্বার্থবিরোধী কার্যক্রম বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। অভিযুক্ত আবু রমিম ফেসবুক ব্যবহার করে শেয়ারবাজার সংক্রান্ত বিভিন্ন গুজব সৃষ্টির মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের প্ররোচনার মাধ্যমে প্রতারণার জালে ফেলছেন। এ ধরনের প্রতারণামূলক কার্যক্রম কেবলমাত্র ফৌজদারি অপরাধই না, এর সঙ্গে শেয়ারবাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ও স্থিতিশীলতা বিনষ্টের উপাদান রয়েছে। এ অবস্থায় অভিযুক্ত মো. আবু রমিমের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে করণীয় পদক্ষেপ নিতে শেরেবাংলা নগর থানার দায়িত্বরত কর্মকর্তাকে অনুরোধ করা হয়েছে।
শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...