নভেম্বর ১৩, ২০২৪

দেশের শেয়ারবাজারের অর্ধশত কোম্পানিকে অডিটের (নিরীক্ষা) আওতায় আনছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। জানা যায়, অবণ্টিত লভ্যাংশ সঠিকভাবে বিতরণ করেছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে সংস্থাটি বিশেষ অডিট পরিচালনা করছে।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অর্থ জমা ছিল স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের কাছে, যার পরিমাণ ২৯ কোটি টাকা। বিএসইসির কাছে কোম্পানিটির যে তথ্য রয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, অবণ্টিত নগদ লভ্যাংশের পুরো অর্থ এরই মধ্যে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বিতরণ করে দিয়েছে।

জানতে চাইলে স্কয়ার ফার্মার নির্বাহী পরিচালক (ফিন্যান্স অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজি) মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমাদের কোম্পানিতে অবণ্টিত যে লভ্যাংশ ছিল, বিএসইসির নির্দেশনা মেনে আমরা তা বিতরণ করে দিয়েছি।

এদিকে অবণ্টিত নগদ লভ্যাংশ বাবদ তৃতীয় সর্বোচ্চ অর্থ জমা ছিল অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের কাছে, যার পরিমাণ ২৫ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। কোম্পানিটি যে তথ্য বিএসইসিতে জমা দিয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, অবণ্টিত নগদ লভ্যাংশের পুরো অর্থ কোম্পানিটি বিতরণ করেছে।

এ ছাড়া অবণ্টিত নগদ লভ্যাংশ বাবদ বিনিয়োগকারীদের পাওনা ২৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা জমা ছিল হাইডেলবার্গ সিমেন্টের কাছে। কোম্পানিটি বিএসইসিকে জানিয়েছে, তারাও এ অর্থ সিএমএসএফ ও বিনিয়োগকারীদের কাছে হস্তান্তর করে দিয়েছে।

এর বাইরে সরকারি কোম্পানি পদ্মা অয়েলের কাছে ১৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকা, উত্তরা ফাইন্যান্সের কাছে ১৫ কোটি ২৬ লাখ টাকা, এক্সিম ব্যাংকের কাছে ১২ কোটি ৫৮ লাখ টাকা ও বিকন ফার্মার কাছে ৯ কোটি ৬৯ লাখ টাকা অবণ্টিত নগদ লভ্যাংশ জমা ছিল। কোম্পানিগুলো নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে জানিয়েছে, এসব অর্থ তারা বিনিয়োগকারী ও শেয়ারবাজার স্থিতিশীলকরণ তহবিলে হস্তান্তর করেছে।

বিএসইসির উদ্যোগে সিএমএসএফ গঠিত হয় ২০২১ সালে। মূলত তালিকাভুক্ত বিভিন্ন কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডে পড়ে থাকা বিনিয়োগকারীদের অবণ্টিত লভ্যাংশের অর্থে এ তহবিল গঠন করা হয়। শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের পাশাপাশি এ অর্থে মিউচুয়াল ফান্ডও গঠন করা হয়েছে।

বিএসইসি যে ৫০ প্রতিষ্ঠানের ওপর বিশেষ নিরীক্ষার উদ্যোগ নিয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি অবণ্টিত বোনাস লভ্যাংশ বাবদ শেয়ার জমা ছিল ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর হাতে। কোম্পানিটির হাতে এমন অবণ্টিত বোনাস শেয়ার ছিল প্রায় আট কোটিরও বেশি। কোম্পানিটি সম্প্রতি বিএসইসিতে যে তথ্য জমা দিয়েছে, তাতে দেখা যায়, অবণ্টিত সব বোনাস শেয়ার এরই মধ্যে হস্তান্তর করে দিয়েছে কোম্পানিটি।
এরপর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পাঁচ কোটি অবণ্টিত বোনাস শেয়ার ছিল রাষ্ট্রায়ত্ত আইসিবির কাছে। আর আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিআইএফসির হাতে ছিল প্রায় সাড়ে চার কোটি শেয়ার। এরপর দুই কোটি অবণ্টিত বোনাস শেয়ার ছিল ইন্দো–বাংলা ফার্মার কাছে।

জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, প্রথম পর্যায়ে ৫০টি কোম্পানির অবণ্টিত লভ্যাংশ বিতরণসংক্রান্ত তথ্য যাচাই-বাছাইয়ে বিশেষ নিরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ জন্য বেশ কয়েকটি নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। পর্যায়ক্রমে বাকি কোম্পানিগুলোকেও নিরীক্ষার আওতায় আনা হবে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...