বাংলাদেশের অর্থনীতি ও পুঁজিবাজারকে আরো ভাল অবস্থানে নিয়ে যেতে বাংলাদেশে ব্যাংক, এনবিআর এবং বিএসইসি একসাথে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।
সোমবার (৩০ জানুয়ারি) ‘মুদ্রানীতি জানুয়ারী-জুন ২০২৩: অর্থনীতি ও পুঁজিবাজারের উপর সম্ভাব্য প্রভাব’ শীর্ষক সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, কাউকে বাদ রেখে এগিয়ে গেলে হয় না। সবাইকে সাথে নিয়েই এগিয়ে যেতে হয়। সকলের অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে নীতি নেয়ার ফলেই আমাদের অর্থনীতি আজ এতটা শক্তিশালি হতে পেরেছে। তিনি সরকারের প্রশংসা করেন এবং সরকার সুশাসনের ক্ষেত্রে সবসময় সহায়ক অবস্থানে আছে বলে জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করে তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী খুব ভালভাবে দেশ চালাচ্ছেন, সব কিছু দক্ষভাবে ব্যবস্থাপনা করছেন। সব কিছু ভাল রেখে দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তিনি কর্মসংস্থান সৃষ্টির উপর গুরুত্বারোপ করেন এবং দেশের উন্নয়নে উদ্যোক্তাদের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে সূচনা বক্তব্য রাখেন বিএসইসি’র কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, পুঁজিবাজারকে ভাল করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভূমিকা রয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতি সহায়তাসহ মনিটরিং এর জায়গা থেকে সহায়তা করতে পারে। তিনি তথ্য উপাত্ত এর উপর গুরুত্বারোপ করে ব্যাপক গবেষণাভিত্তিক উদ্যোগ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার কথা ব্যক্ত করেন।তিনি অর্থনৈতিক দিকগুলোর পাশাপাশি কৃষি এবং এসএমইসহ সকল খাতে যাতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ছড়িয়ে পড়তে পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখার কথা বলেন।
সেমিনারে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও অর্থনীতিবিদ ড. আতিউর রহমান। তিনি মুদ্রানীতির গুরুত্ব ও তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে বলেন, মুদ্রানীতির সাথে দেশের অন্যান্য সব নীতির গভীর সম্পর্ক রয়েছে। দেশের বিভিন্ন নীতির মাঝে সমন্বয় দরকার। তিনি মুদ্রানীতির চ্যালেঞ্জ, মুদ্রানীতির অভিষ্ট লক্ষ্যসমূহ, মুদ্রানীতিতে ব্যালেন্স অব পেমেন্ট, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে গৃহীত উদ্যোগ, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আর্থিক অন্তুর্ভুক্তি, টেকসই উন্নয়ন ভাবনার প্রেক্ষাপটে আর্থিক সেবা খাতের নয়া ভূমিকা ইত্যাদি বিষয়ে তথ্যবহুল আলোচনা তুলে ধরেন।
ড. আতিউর রহমান পুঁজিবাজারের জন্য মুদ্রানীতির সিদ্ধান্তগুলোর তাৎপর্য, বাসেল-০৩ এর কার্যকর বাস্তবায়নের মাধ্যমে পুঁজিবাজারকে শক্তিশালিকরনের সম্ভাবনা, সরকারি বন্ডের বাজার তৈরিতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসি’র যৌথ উদ্যোগ এবং গ্রিন ফাইনান্সিং ইত্যাদি বিষয় আলোচনা করেন। তিনি পুঁজিবাজারকে যথার্থ সক্রিয় করতে প্রয়োজনীয় দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপগুলো সকলের সামনে তুলে ধরেন। তিনি বছরে দু’বার মুদ্রানীতি ঘোষণার সংস্কৃতি পুনরায় চালু করার জন্য সরকার ও বাংলাদেশে ব্যাংকের গভর্নরকে ধন্যবাদ জানান। বিশ্বের অর্থনীতি দ্রুত বদলানোয় ঘন ঘন মুদ্রানীতি ঘোষণা করা গেলে তা ভাল হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। তিনি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার ব্যবস্থাপনার গুরুত্বের কথা বলেন। তিনি ডিজিটাল বাংলাদেশ উপহার দেয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করেন।