নভেম্বর ১৫, ২০২৪

আরব সাগরে সৃষ্ট অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’ ভারতের গুজরাটের কুচ এবং সুরাট জেলা ও পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশের উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে বলে আভাস দিয়েছে দুই দেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আসন্ন এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় ইতোমধ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে পাকিস্তান। দেশটির দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তর এনডিএমএ সিন্ধ শাখা দপ্তরকে এক বার্তায় জানিয়েছে, আগামী ১৩ তারিখ সিন্ধের দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্বাঞ্চলে আঘাত হানতে পারে ‘বিপর্যয়’। সেক্ষেত্রে সিন্ধ প্রদেশের উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে মঙ্গলবার থেকে প্রবল বর্ষণ, ঝড়ো হাওয়া ও বন্যা দেখা দেওয়ার সমূহ আশঙ্কা রয়েছে।

এনডিএমএ’র কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে সিন্ধ শাখা কার্যালয়ে পাঠানো নির্দেশনায় বলা হয়েছে, মৎসজীবীদেরকে যেন সাগরে মাছ ধরতে যেতে নিষেধ করা হয় এবং উপকূল অঞ্চলের স্থানীয় লোকজনদরে ঝড় আসার আগেই যত দ্রুত সম্ভব নিরাপদ নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার জন্য প্রচার-প্রচারনার কাজ শুরু করা হয়।

সিন্ধের উপকূলীয় এলাকাগুলোতে উর্দু ভাষার প্রচলন কম। তাই স্থানীয় ভাষায় প্রচার-প্রচারনা চালানোর নির্দেশনা দিয়েছে এনডিএমএ।

আরব সাগরের তীরবর্তী অপর প্রদেশ বেলুচিস্তানের শাখা কার্যালয়েও এই ঘূর্ণিঝড়ের ব্যাপারে উচ্চ সতর্কতা জারিসহ যাবতীয় প্রুস্তুতি নিয়ে রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিওটিভি।

রোববার পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তর এক টুইটবার্তায় জানিয়েছে, ‘বিপর্যয়’র প্রভাবে আগামী ১৩ থেকে ১৭ জুন পর্যন্ত সিন্ধের থাট্টা, সুজাওয়াল, বাদিন, থরপারকার এবং উমেরকোট জেলায় প্রবল ঝড়-বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। এসময় এসব জেলায় বাতাদের সর্বোচ্চ গতিবেগ উঠতে পারে ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত।

একই সময়ে সিন্ধের প্রাদেশিক রাজধানী করাচি, হায়দারাবাদ, তান্দো মুহম্মদ খান, তান্দো আল্লায়ার ও মিরপুরখাস জেলায় ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া ও বজ্রবিদ্যুৎসহ প্রবল বর্ষণ হতে পারে।

রোববার পাকিস্তানের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ সিএএ করাচি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগামী সব ফ্লাইট রাজধানী ইসলামাবাদের আন্তর্জাতিক বিমাবনবন্দরে আবতরণের নির্দেশনা দিয়েছে। সিএএ জনিয়েছে,পরবর্তী নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত করাচি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কোনো আন্তর্জাতিক ফ্লাইট যেন অবতরণ না করে।

পাকিস্তানের পরিবেশমন্ত্রী শেরি রহমান রোববার এক টুইটবার্তায় সিন্ধ ও বেলুচিস্তানের লোকজনকে আতঙ্কগ্রস্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘ঘুর্ণিঝড় বিপর্যয় খুবই অপ্রাত্যাশিত একটি দুর্যোগ, তবে আমরা যদি আতঙ্কিত হই, তাহলে বিপদ আরও বাড়বে। সচেতনতা, সাবধানতা ও যথাযথ পরিকল্পনা দিয়ে এই দুর্যোগকে আমাদের মোকাবিলা করতে হবে।’

সিন্ধ প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মুরাদ আলী শাহ রোববার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, সোমবারের মধ্যে এই ঘুর্ণিঝড় মোকাবিলার যাবতীয় পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণের কাজ শেষ করবে তার নেতৃত্বাধীন সরকার।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...