নভেম্বর ১৫, ২০২৪

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খানকে গ্রেপ্তার এবং এর জেরে দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়া সহিংসতা নিয়ে মুখ খুলেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইমরানের গ্রেপ্তারের বিষয়ে অবগত থাকার কথা উল্লেখ করে পাকিস্তানে গণতান্ত্রিক নীতি এবং আইনের শাসনের প্রতি সম্মান জানানোর আহ্বান জানিয়েছে দেশটি।

একইসঙ্গে পাকিস্তানে বিশেষ কোনো রাজনৈতিক দলকে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন করে না বলেও জানিয়েছে দেশটি। ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে বুধবার (১০ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের পর দেশটিতে গণতান্ত্রিক নীতি এবং আইনের শাসনের প্রতি সম্মান জানানোর আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কারিন জিন-পিয়েরে তার প্রতিদিনের সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বলেন, ‘পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের গ্রেপ্তারের বিষয়ে আমরা অবগত। যেমনটি আমরা আগেই বলেছি, আমরা একটি রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীর বিপরীতে অন্য রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীকে সমর্থন করি না বা প্রার্থী এবং অন্য দলের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের কোনও অবস্থান নেই।’

পাকিস্তানে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার নিয়ে প্রশ্নের জবাব দেওয়ার সময় কারিন জিন-পিয়েরে এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বজুড়ে গণতান্ত্রিক নীতি ও আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার আহ্বান জানাই। তাই এ বিষয়ে আরও তথ্যের জন্য আমি আপনাকে পাকিস্তান সরকারের সাথে যোগাযোগ করার জন্য বলব।’

এদিকে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লিভারলির সাথে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেছেন, দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশে (পাকিস্তানে) আইনের শাসন অনুসরণ করা হোক এটাই তারা চান।

সংবাদ সম্মেলনে ব্লিংকেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপনি যা ইঙ্গিত করেছেন আমি সেসব প্রতিবেদন দেখেছি এবং আমরা কেবল নিশ্চিত করতে চাই যে, পাকিস্তানে যা কিছু ঘটছে তা সংবিধানের সাথে আইনের শাসনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।’

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের খবরে এক প্রশ্নের জবাবে শীর্ষ এই মার্কিন কূটনীতিক এ কথা বলেন। অন্যদিকে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লিভারলি বলেন, পাকিস্তানের যা ঘটছে সে সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানার সুযোগ তিনি এখনও পাননি।

ক্লিভারলি বলছেন, ‘পাকিস্তানের সাথে যুক্তরাজ্যের দীর্ঘস্থায়ী এবং ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। আমরা কমনওয়েলথের অংশীদার। আমরা সেই দেশে শান্তিপূর্ণ গণতন্ত্র দেখতে চাই। আমরা আইনের শাসন মেনে চলতে দেখতে চাই। এটি ছাড়া আর কিছু বলতে (আপাতত) অস্বস্তি বোধ করছি আমি।’

এর আগে বুধবার ইসলামাবাদ হাইকোর্টের বাইরে থেকে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করা হয়। আল-কাদির ট্রাস্ট মামলায় ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরোর (এনএবি) ওয়ারেন্টে পাকিস্তানের আধাসামরিক বাহিনী রেঞ্জার্স তাকে গ্রেপ্তার করে।

এদিকে ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের পর পাকিস্তানজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। পিটিআই কর্মীরা ইসলামাবাদ, রাওয়ালপিন্ডি, লাহোর, করাচি, গুজরানওয়ালা, ফয়সালাবাদ, মুলতান, পেশোয়ার এবং মারদানসহ সারা দেশের শহরগুলোতে বিক্ষোভ করছে বলে জিও নিউজ জানিয়েছে।

এছাড়া গ্রেপ্তারের পর ইমরান খানের সমর্থকরা রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তানের সেনা সদর দপ্তর এবং লাহোরে সেনাবাহিনীর কর্পস কমান্ডারের বাসভবনে হামলা চালিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...